ছুটিরঘণ্টা I নবাবি শহর লক্ষ্ণৌ
আয়েশি ভাবের শহর, যেখানে পা দিলেই নাকি মন হেসে ওঠে। আসলে মনের কী দোষ, শহরটাই যে জাদুমাখানো এক অন্দরমহলের গল্প। শোনাচ্ছেন ফাতিমা জাহান
এ শহরে কাসিদার সঙ্গে কাবাব আর মর্সিয়ার এবং মালাইয়ের তালগোল পাকিয়ে ফেলা যে কারও পক্ষেই স্বাভাবিক।
জাদুর টানে আধবেলার পর সব কাজ ভুলে ছুট দিলাম পুরোনো লক্ষ্ণৌর অলিগলিতে।
এ নগরী বিখ্যাত তার আদবকায়দার লম্বা ইতিহাসের জন্য। বলা হয়ে থাকে, যখন এই নবাবের ঘোড়ার গাড়ি পরস্পর পাশ কাটিয়ে যেত, তখন দুজনই থেমে একে অন্যকে বলতেন, ‘প্যাহলে আপ’।
এই সৌজন্যর চক্করে পড়ে পরবর্তী কাজে দেরি হয়ে যেত।
১৭৮৪ খ্রিস্টাব্দে এক ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের পর বড় ইমামবাড়া নির্মাণ করেছিলেন নবাব আসাফ উদ দৌলা। দরাজ দিল নবাবের কাছে এলে নাকি কেউ খালি হাতে ফেরত যেত না। উপদ্রুত জনসাধারণের কর্মসংস্থান ছিল তার লক্ষ্য। কথিত আছে, দিনের বেলায় দালান নির্মাণের কাজ এগোলে রাতে তা ভেঙে ফেলা হতো, যাতে কাজটি প্রলম্বিত হয় আর মানুষের কর্মসংস্থান অব্যাহত থাকে। যে কারণে ভবনটি সম্পূর্ণভাবে নির্মিত হতে সময় লেগেছিল সাত বছর।
স্থাপত্যশিল্পের অনন্য এই নিদর্শন ভারত উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় ইমামবাড়া। সাধারণত এসব ভবন নির্মিত হতো ইমামের আবাসস্থল বা মিলাদুন্নবী অথবা মহররমের ধর্মীয় অনুষ্ঠানের জন্য। এখনো সমাজের রীতি রেওয়াজ অনুযায়ী নিয়মকানুন মেনে চলা হয় এখানে।
বড় ইমামবাড়া ভারতের সর্বশেষ স্থাপনা, যাতে ইউরোপীয় স্থাপত্যকলা অনুসৃত নয়। এর আরেকটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো, এ দালানে কোনো ধরনের লোহা বা রড ব্যবহার করা হয়নি।
অট্টালিকাটির চত্বরে নানা ধরনের মানুষের ভিড়। সবাই এসেছে উৎসব দেখতে। সমাগম নয়, আমার আত্মা খোঁজে নবাবি আমলের সেই রুবাইয়ের সুর, যাতে ভুলে যাওয়া যায় জাগতিক সব বিষয়। যার টানে যেন শহর হেসে ওঠে।
বিশাল প্রবেশদ্বার আছে ইসলামি শিল্পের আদলে ফুল-লতা-পাতার মোটিফে। তোরণের পর তোরণ। সুন্দরের দেখা পাওয়া এত সহজ নয়।
প্রবেশ করলাম মূল ভবনে। ভেতরে ঘুমিয়ে আছেন নবাব আসাফ উদ দৌলা। সে কক্ষের ছাদে সাধারণ কারুকাজ।
দুই পাশের দুটো কামরার নকশা বোঝার মতো বিচক্ষণতা আমার নেই। একজন গাইডের সাহায্য নিতেই হলো। নবাবের দরবার বোঝার বিদ্যা গ্রহণ করে তবেই শান্তি পাবে অস্থির মন।
কক্ষ দুটোর ছাদ থেকে ঝুলে পড়ছে রোশনি। গম্বুজাকৃতি ছাদে গোলাকার আলোকছটায় প্রজ্বলিত কামরা, ভেতরে অন্ধকার, আলো আসছে বাইরে থেকে। ছাদে ঝুলন্ত ক্ষুদ্রকায় জানালা জানান দিচ্ছে অস্তিত্ব। সবুজ দেয়ালে বেগুনি আলো খেলে যায়।
কামরার পাশের সিঁড়ি ধরে উঠতে লাগলাম ভবনের এক ধাপ উপরে, যেখানে আছে বিস্ময়। সবাই একে জানে ‘ভুলভুলাইয়া’ নামে। বিশালাকার ভবনের দোতলা, তিনতলাজুড়ে এক হাজার চব্বিশটি পথ। শুধু পথ নয়, এ হচ্ছে প্রবেশপথ, যা দিয়ে ঢোকা সহজ কিন্তু বের হওয়া মুশকিল। বের হবার জন্য আছে মাত্র দুখানা পথ। এ দালানে দরজার সংখ্যা ৪৪৯। কোনোটা আসল, কোনোটা নকল, কোনোটা চিরতরে বন্ধ।
আমি নিজেও বলতে পারব না গাইড ফিরোজ কীভাবে দোতলা ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে দেখালেন। এত গলি, উপগলি কয়েক কদম পেছনে গেলে পথ হারিয়ে ফেলার ভয়, না জেনে এগোলে জীবনভর নির্বাসন। লম্বা প্যাসেজের ডানে-বাঁয়ে সারি সারি দরজা আর দরজা। কোনোটায় একবার ঢুকে গেলে নাকি ইহজীবনে বের হবার ফুরসত থাকবে না। যতই মাথা খাটাই না কেন, এ গোলকধাঁধার জবাব আমার কাছে নেই। ফিরোজ ডানে-বাঁয়ে হাঁটিয়ে নিয়ে এলেন এক কক্ষে, যেখান থেকে মূল ভবনের নিচতলার কোণের কামরা নজরে আসে। আশপাশ ভেসে যাচ্ছে বেগুনি আলোয়। একটা বারান্দায় দাঁড় করিয়ে বললেন, নিচে দেখুন। যেখানে সেই হালকা সবুজ দেয়াল। নিচ থেকে পিঁপড়াসম যে ঝুলবারান্দা গোলাকার ছাদ ঘিরে তামাশা করছিল, সেখানে বেগুনি আলোয় উদ্ভাসিত আসাফ উদ দৌলার ইমামবাড়া।
আবারও এ-কক্ষ ও-কক্ষ হয়ে আরেক তলা ওপরে নিয়ে গেলেন গাইড। প্যাসেজে ঘুটঘুটে অন্ধকারের বসন, এক ইঞ্চি দূরের জিনিস নজরে এলে নিজেই নজরানা দিতাম আলোকে।
ফিরোজ বললেন, এখানে দাঁড়িয়ে ৬০-৭০ ফুট দূর থেকে ফিসফিস করে কথা বললেও নাকি শুনতে পাওয়া যায়। মোবাইলের টর্চ জ্বালাতে বলে তিনি উধাও। মনে হচ্ছিল অন্ধকার এক গলিতে হাজার বছর ধরে ঘুরে মরছি। এখান থেকে বের হবার পথ অজানা, ফিসফিসিয়ে কে যেন বলে উঠল,
‘মেরা আওয়াজ সুনাই দে রাহা হ্যায়?’
হ্যাঁ বলতেই বলল,
‘আগে আ যাও।’
এগোলাম। আবার বলল,
‘আওর আগে আ যাও।’
এভাবে আরও এগোতে থাকলাম। না শেষ হয় পথ, না পাওয়া যায় ফিরোজের দেখা। আরও কয়েক কদম চলার পর ফিসফিসানি বাড়তে থাকল আর গা ছমছম করতে লাগল। ফিরোজ কি আমাকে রেখে চলে গেলেন? বের হব কীভাবে?
খানিকক্ষণ চলার পর দেখা মিলল ফিরোজের। তিনি আমাকে অনেকখানি হাঁটিয়েছেন; তার মনে হয়েছিল আমি ভয় পাব না। তিনি ৫০ ফুট দূর থেকে কথা বলতে বলতে এগোচ্ছিলেন।
স্থপতি কিফায়াতউল্লাহ একি বিস্ময় রেখে গেছেন!
ভুলভুলাইয়া নির্মাণের মূল উদ্দেশ্য ছিল থামহীন, ইস্পাতহীন ভবনের ভারসাম্য রক্ষা করা, যাতে খালি প্যাসেজের মতো জায়গা ঠিকমতো ইমারতকে আঁকড়ে ধরে রাখতে পারে। এখনো তা অটুট।
আরও একটা কারণ, হঠাৎ করে শত্রুপক্ষের কেউ ঢুকে পড়লে যেন সহজে বের হতে না পারে।
কদম কদম সুড়ঙ্গসম পথচলা শেষে রাস্তা মিলল ইমামবাড়ার ছাদে যাবার। সেখান থেকে, লবঙ্গ আকারের মোটিফের মাঝখান দিয়ে দেখা যায় আসফি মসজিদ।
এটিও নবাব আসাফ উদ দৌলা নির্মাণ করেন আনুমানিক ১৭৮৫ খ্রিস্টাব্দে, বড় ইমামবাড়ার সঙ্গে।
ভুলভুলাইয়া পার হয়ে চললাম পাশের ভবন ‘বাওলি’ দেখতে। যার অর্থ কুয়া। এটিও নবাবের নির্মিত কুয়া। ভারতের বড় বড় শহরে এমন অনেক কুয়া রাজা বাদশাহগণ নির্মাণ করে গেছেন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে জলের সংকট মেটাতে, কখনো শত্রুর আক্রমণের সময় লুকিয়ে থাকার প্রয়োজনে কিংবা নেহাতই সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য।
নবাব আসাফ উদ দৌলার বাওলি কোনো সুরম্য ভবনের চেয়ে কম কিছু নয়। স্যান্ডস্টোন দিয়ে তৈরি ভেতর বা বাইরে থেকে দেখতে দালানের মতো প্রবেশের। পরেও মনে হবে, একটি ভবনের ভেতরের অংশ। তিনতলা আয়তাকার দালানে পুরোনো আমলের কায়দায় মাঝখানে খোলা উঠোনের মতো জায়গা। ভবনটির চার দেয়ালে বারান্দা করা, তবে ভেতরে কোনো কক্ষ নেই। স্থাপনাটি পার হয়ে একদম পেছনে গোলাকার কুয়া। এখানকার বিশেষত্ব এই, যে কুয়ার এক পাশের বারান্দায় দাঁড়ালে আরেক প্রান্ত থেকে এর জলে ওই ব্যক্তির ছায়া পড়ে। শত্রুপক্ষের কেউ বাওলির ভেতরে ঢুকে পড়লে খুঁজে পাওয়া যাবে সহজেই। আরও আশ্চর্যের ব্যাপার হচ্ছে, আয়তাকার ভবনটিও প্রয়োজনে জল দিয়ে ভরে ফেলা যায় এবং তখন বাইরে থেকে দেখলে সেটি
বিশালাকৃতির একটি বাঁধানো পুকুর বলে মনে হবে। বাওলি নির্মিত হয় বড় ইমামবাড়ার সময়ে। এর সীমানা দেয়ালের বাইরে শত বছরের পুরোনো বিশালাকৃতির সারি সারি নিমগাছ ছায়া দিচ্ছে। একেকটা গাছ উচ্চতায় বাওলিকেও ছাড়িয়ে গেছে। এর অপর পাশে আসফি মসজিদ, যেটি দেখেছি বড় ইমামবাড়ার ছাদে দাঁড়িয়ে।
স্থাপত্যশৈলী লাহোরের বাদশাহি মসজিদের অনুকরণ। একই রকম মিনার এবং গম্বুজের কারুকাজ। সিঁড়ির পর সিঁড়ি পার হয়ে পৌঁছাতে হয় আসফি মসজিদে। লক্ষ্ণৌর নবাবগণ পারস্য থেকে এসেছিলেন, তারা শিয়া মতাবলম্বী ছিলেন। তাদের নির্মিত সব মসজিদ শিয়া তরিকায় এখনো চালানো হয়। শুধু মুসলমান ধর্মাবলম্বীদের প্রবেশাধিকার রয়েছে এটির ভেতরে। আসফি মসজিদ আনুমানিক ১৭৮৫ সালে নির্মিত হয়েছিল।
সীমানার ভেতরের এই তিন স্থাপনা- বড় ইমামবাড়া, আসফি মসজিদ আর বাওলি দেখে বেরিয়ে পড়লাম রুমি দরজার দিকে।
একই সময়ের আরেকটি স্থাপনা এটি। বড় ইমামবাড়া থেকে বের হয়ে সামনে গেলে প্রশস্ত রাস্তাজুড়ে কারুকাজখচিত যে বিশাল তোরণ, তার নাম রুমি দরজা। এই স্থাপনাও নবাব আসাফ উদ দৌলা বড় ইমামবাড়া নির্মাণের সঙ্গে সঙ্গেই করেন।
প্রায় ৬০ ফুট উচ্চতার দরজাটি তোরণ আকারের, যার সীমারেখার কারুকাজ লক্ষ্ণৌ শহরের ঐতিহাসিক এমব্রয়ডারি চিকেনকারিকে মনে করিয়ে দেয়। বলা হয়, তোরণটি নাকি রানির দামি নৌলাখা বা নয় লহরি হারসদৃশ।
খানিক এগোলে ছোট ইমামবাড়া।
তখনকার তৃতীয় নবাব মোহাম্মদ আলী শাহ ১৮৩৮ সালে এটি নির্মাণ করেছিলেন। মহররমের উৎসব অনুষ্ঠান উদ্্যাপনই ছিল মূল লক্ষ্য। এখনো তাজিয়া মিছিল বের হয় এখান থেকে। ছোট ইমামবাড়ার প্রবেশদ্বার পেরোলে হাতের ডান দিকে নবাব মোহাম্মদ আলী শাহর কন্যা জিনাত আসিয়ার সমাধিসৌধ। আগ্রার তাজমহলের আদলে তৈরি সৌধটির রঙ সাদা। ভেতরে জিনাত আসিয়া ঘুমাচ্ছেন স্বামী, মা ও ভাইয়ের সঙ্গে। সমাধিসৌধের উল্টো দিকের ভবনটিও দেখতে তাজমহলের মতোই, যেটি ব্যবহৃত হতো রাজকীয় খাজানা আদায়ের স্থান হিসেবে। এখন তালাবদ্ধ। দুপাশে পথ করে মাঝখানে জলাধার রাখা হয়েছে সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য। যেদিন থেকেই দেখা যাক না কেন, কোনো না কোনো দালানের প্রতিবিম্ব পানিতে দৃশ্যমান হয়। ছোট ইমামবাড়ার পথে আরও একটি ভবন স্বাগত জানাচ্ছে। সাদা রঙের, আকারে ছোট তাজমহলের আদলে নির্মিত মসজিদ। পথ শেষে যে ইমারতটি মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে, সেটি ছোট ইমামবাড়া। এতটাই মনোরম যে সবাই একে আলোর প্রাসাদ বলে। বাইরের দেয়ালে সাদা আর কালোয় ক্যালিগ্রাফি যার শোভা কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। কয়েক সিঁড়ি ওপরে প্রবেশপথ। ভেতরের বিশাল হলের মাঝখানে সিংহাসনের মতো রুপার বেড়ার আড়ালে ঘুমিয়ে আছেন নবাব মোহাম্মদ আলী শাহ। পাশে শায়িত আম্মি।
বড় হলঘরে সাজানো বিশাল আকারের বিভিন্ন রঙের ক্রিস্টালের ল্যাম্প ঝাড়বাতি ঝুলছে ছাদ থেকে। চারদিকের দেয়ালজুড়ে আয়না। উৎসবে ঝাড়বাতিগুলো উঠলে তখন তার রোশনি আরও বাড়িয়ে দেয় এর আয়নার প্রতিফলন।
মূল কক্ষের মাঝখানে রাখা আছে নবাব মোহাম্মদ আলী শাহর মুকুট।
ছোট ইমামবাড়া থেকে বের হতে দুপুর গড়িয়ে গেল। সকালে পরোটা আর গিলৌটি কাবাব দিয়ে নাশতা করে এসেছি। এখন পুরোনো লক্ষ্ণৌ শহরে। বাতাসে নবাবি খানার খুশবু। এখানকার বিখ্যাত কাবাবের দোকান টুন্ডে কাবাব আর বিরিয়ানির নাম করতেই প্রথমে আনতে হয় ইদরিস সাহেবের বিরিয়ানি।
টুন্ডে কাবাবের রেসিপি নাকি কয়েক শ বছরের পুরোনো। শোনা যায়, নবাবের এক বাবুর্চির একটি হাত অচল ছিল, এক হাত দিয়েই তিনি রান্না করতেন এবং নবাবের মন জিতে নিয়েছিলেন। খোঁড়া বা অচল অঙ্গকে উর্দু ভাষায় বলা হয় টুন্ডে। সেই থেকে কাবাবের এমন নাম। টুন্ডে কাবাবের দোকানে ভিড় দেখে তাক লেগে গেল। এক প্লেট কাবাব আর একটি বিশাল আকারের উল্টা তাওয়া পরোটা নিয়ে বসলাম। কাবাব নয়, জাদুর টুকরা। মুখে দিতেই গায়েব। এত মোলায়েম আর ভেতরের মসলার মিশ্রণ যে ভাবলেই জিভে জল আসে। এমন নরম আর সুস্বাদু কাবাব আগে খাইনি। পরে এখানকার বিখ্যাত মিষ্টি মাখন মালাই খেলাম। দুধের তৈরি এ খাদ্যের স্বাদ বর্ণনাতীত। চোখ খুলে খাওয়া বারণ। মুখ বন্ধ করে অনুভব করতে হয় এর মোলায়েম স্বাদ। এরপর খেলাম এখানকার তৈরি গাজরের হালুয়া। ভারতের বহু স্থানে এটি খেয়েছি কিন্তু এত সুস্বাদু কোনোটিই নয়।
রাতে খেলাম এখানকার বিখ্যাত বিরিয়ানি। চাল, মাংস, মসলা, মিঠা আতর, নবাবি মেজাজ আর শের শায়েরিতে ভরপুর এমন স্বাদের বিরিয়ানি ত্রিভুবনে নেই। শেষে মিষ্টি হিসেবে মালাই গিলোরি আর ফালুদা।
ছবি: লেখক