ফরহিম I হেয়ার শক সলিউশন
চুল পড়ে যাওয়া করোনাকালীন একটি বাস্তবতা। তবে এরও আছে সমাধান। কীভাবে?
চুল পড়ে যাওয়া সাধারণ একটা সমস্যা। হরমোনের হেরফের, বার্ধক্য কিংবা দূষণ যেমন চুল পড়ার কারণ, তেমনি মৌসুমি বায়ুর প্রভাবেও এমনটা হতে পারে। তবে এর খুবই আন্ডাররেটেড কারণ হলো স্ট্রেস বা দুশ্চিন্তা! এমনকি কোনো ঘটনায় শক খাওয়া থেকেও চুল ঝরে পড়তে পারে।
এখন কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে সবাই বিভিন্ন উদ্বেগের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সবকিছু পাল্টে ‘নিউ নরমাল’কে মেনে নিতে বেগ পেতে হচ্ছে কমবেশি সবারই। এমন পরিস্থিতিতে ঘুম থেকে শুরু করে খাওয়াদাওয়া- বলতে গেলে জীবনধারাই বদলে গেছে। এই অবস্থায় প্রায় সবারই চুল পড়ছে, যাকে বলা হচ্ছে ‘শক হেয়ার লস’ কিংবা ‘স্ট্রেস হেয়ার লস’। বিশেষজ্ঞদের মতে, যেকোনো বড় ধরনের চাপ, সেটা শারীরিক কিংবা মানসিক, যার ফলে অসুস্থতা সৃষ্টি হতে পারে, এমন ধাক্কা প্রায় ৫০ শতাংশ চুল অকালেই ঝরে যাওয়ার কারণ হতে পারে। তাই ধোয়ার পরে আঁচড়ালে এমনকি অনেক সময় শুধু আঙুলের বিলিতেও চুল পড়তে থাকে। মানসিক চাপ-সম্পর্কিত হরমোন এবং নিউট্রোট্রান্সমিটার চুলের বেড়ে ওঠার স্বাভাবিক চক্রেও ব্যাঘাত ঘটায়। তাই খুব শকিং কিংবা দুশ্চিন্তাজনক কোনো ঘটনার দু-তিন মাস পরেও এই প্রবণতা দেখা দেয়। যার সবচেয়ে বড় উদাহরণ করোনার কয়েক মাসে দেখা যাচ্ছে। আবার অনেক সময় দুশ্চিন্তার কারণে শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমে যায়, তা ফলিকলে প্রভাব ফেলে। এতে চুল কমতে থাকে এবং একটা সময় মাথার বিভিন্ন স্থানে ছোট ছোট টাকের মতো সৃষ্টি হয়। এ ক্ষেত্রে চার-ছয় মাসের মধ্যে নতুন চুল আবার গজায়। এমনটি চলতে থাকলে চুল দেখতে অনেক বেশি পাতলা লাগে।
এ ধরনের হেয়ার লস এড়াতে অতিরিক্ত মানসিক চাপ থেকে নিজেকে মুক্ত রাখতে হবে। এ ব্যাপারে বিশেষজ্ঞরা গুরুত্ব দেন একটা ব্যালেন্সড ডায়েটের ওপর। প্রোটিনযুক্ত খাবার চুল আর নখের জন্য ব্লক তৈরি করে। তাই খাবারে খুব বেশি প্রোটিন রাখতে হবে। যখন শরীর স্ট্রেস কিংবা শক থেকে মুক্তি পাবে, তখন পড়ে যাওয়া চুলগুলো আবার গজাতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, মাল্টিভিটামিন আর বায়োটিনের মতো উপাদান সাহায্য করবে। তাই এসব রাখতে হবে খাদ্যতালিকায়। আর দুশ্চিন্তা কমানোর একটি ভালো উপায় হচ্ছে প্রতিদিন অন্তত আধা ঘণ্টার জন্য ব্যায়াম করা।
শক হেয়ার লসের সবচেয়ে স্বল্পমেয়াদি প্রতিকার নিয়মিত চুল ট্রিম করা, যা বাসাতেই সম্ভব। এ ছাড়া শ্যাম্পু করার পরে ডিপ পেনিট্রেটিং প্রোটিন কন্ডিশনার ব্যবহার করা যেতে পারে। ট্রপিক্যাল কিংবা হারবাল শ্যাম্পু ব্যবহার করা যায়। এতে চুলের ফলিকলগুলো পুষ্টি পাবে এবং মাথার ত্বক সুস্থ থাকবে।
এ ব্যাপারে আরও কিছু বিষয় মনে রাখতে হবে :
– শ্বাসপ্রশ্বাসের ব্যায়াম, মেডিটেশন কিংবা ইয়োগা শিখুন এবং নিয়মিত অনুশীলন করুন।
– নিয়ম করে ব্যায়াম করুন, বিশেষ করে মুখের ব্যায়াম। যা মাথার ত্বকেও ভালো প্রভাব ফেলবে।
– ইতিবাচক মনোভাবের মানুষের সঙ্গে সময় কাটান। আড্ডা দিন। নেতিবাচকদের এড়িয়ে চলুন। একাকিত্ব পরিহার করুন।
– চুল পড়ার সমস্যা প্রবল হলে থেরাপিস্টের সাহায্য নিন।
– নতুন চুল না গজালে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী মাল্টিভিটামিন নিন।
– অবশ্যই চুল ধোয়া, শুকানো কিংবা স্টাইলিংয়ে অনেক বেশি যত্নশীল হতে হবে।
শিরীন অন্যা
মডেল: রেহান
মেকওভার: পারসোনা মেনজ
ছবি: সৈয়দ অয়ন