ফিচার I মাস্কনে মুক্ত
আবৃত মুখত্বকের সুস্থতা বজায় রাখার উপায়গুলো জানা দরকার। লিখেছেন জাহেরা শিরীন
সংক্রমণ এড়ানোর জন্য সৌন্দর্যচর্চায় ছাড় দিতে হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধির অনেক কিছুই প্রভাব ফেলছে রোজকার রূপচর্চায়। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য মাস্ক পরার ব্যাপারটা। বাইরে বেরোলেই মুখের অর্ধেক অংশ মুখোশের আড়ালে। ফলে ত্বকের সমস্যা অবশ্যম্ভাবী। মাস্কের সঙ্গে ত্বকের উপর্যুপরি সংস্পর্শ, জমে থাকা ঘাম ইত্যাদির ফলে দেখা দিচ্ছে নতুন সমস্যা ‘মাস্কনে’। মূলত নাকের চারপাশ থেকে ঠোঁট এবং চিবুকের অংশে অ্যাকনে ও র্যাশকেই এই নতুন নামে অভিহিত করা হচ্ছে। ত্বকের সুস্থতার কথাও ভাবা দরকার। মাস্ক পরতেই হবে, সঙ্গে কিছু কৌশল জেনে রাখলে ত্বকও বাঁচবে। ঢেকে থাকা অংশগুলোর তাপমাত্রা আর আর্দ্রতা খুব বেড়ে যায়। বাতাস চলাচল করতে না পারায় মুখত্বক গরম এবং ভেজা অনুভূত হতে শুরু করে। এসবের বিক্রিয়ায় দেখা দেয় ব্রণ আর র্যাশের বাড়াবাড়ি। সৃষ্টি হয় ‘মাস্কনে’।
প্রতিরোধে প্রয়োজন
মাস্ক পরার কারণে ব্রণযুক্ত ত্বকে সমস্যা আরো বেড়ে যায়। স্বাভাবিকের চেয়েও বেশি ব্রণ হয়। ব্যথাও। এ ক্ষেত্রে স্পট ট্রিটমেন্ট সবচেয়ে ভালো কাজে দেয়। ত্বক বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শ করে ব্রণ নিরাময়ের ক্রিমগুলোও ব্যবহার করা যেতে পারে। এ ছাড়া ঘরোয়া টোটকা হিসেবে চন্দন বাটা মেখে নেওয়া যায়। এতে আরাম পাওয়া যায়, ব্রণও বাড়ে না। বাইরে থেকে ফিরেই মুখ পরিষ্কার করতে হবে নিয়ম করে। অয়েল ফ্রি অথবা অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ফেসওয়াশ দিয়ে। তারপর হালকা ময়শ্চারাইজার মাখিয়ে নেওয়া দরকার। সর্দিকাশির মতো উপসর্গ না থাকলে বাড়ির ভেতরে মাস্ক পরে থাকার প্রয়োজন নেই। বাইরে গেলে ব্যাগে ওয়েট টিস্যু নিতে হবে। মুখ ঘেমে গেলে চটজলদি মুছে নেওয়া যাবে। সুতি কাপড়ে তৈরি মাস্ক পরা যেতে পারে। এতে গরম কম লাগবে, ঘামও কমবে।
এ ছাড়া-
খসখসে মাস্ক পরা যাবে না। সাধারণ এন-৯৫ বা যে ধরনের মাস্ক পরতে বলা হচ্ছে, তা খুব একটা খসখসে হয় না। তবে বেশি অমসৃণ মনে হলে ভেতরের দিকে আলাদা একটা লেয়ার সেলাই করে নেওয়া যেতে পারে।
মাস্ক বারবার খোলা ও পরা যাবে না। এতে বাইরের ধুলাবালি লেগে যাওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। ত্বক ঘষাও খায় বেশি।
খুব আঁটসাঁট মাস্ক না পরাই ভালো। সেটি হতে হবে ব্রিদেবল ও আরমদায়ক।
বেশি প্রোডাক্ট ব্যবহার করা যাবে না। মাস্ক পরা অবস্থায় মেকআপ করতে চাইলে যতটা কম করা যায়, ততই ভালো।
খোলা অবস্থায় ত্বকের ওই অংশগুলোতে মেকআপ বা ক্রিম, বাড়তি কিছু না মাখানোই ভালো। এতে ত্বক নিশ্বাস নেওয়ার সুযোগ পাবে।
যে অংশ ঢেকে থাকে, তার বাড়তি যত্ন নিতে হবে। প্রতিদিন মাস্ক খোলার পর ত্বক তো পরিষ্কার করতে হবেই, এর পরপর অ্যান্টিঅ্যাকনে টোনার আর ময়শ্চারাইজার ব্যবহার জরুরি।
ময়শ্চারাইজারের সঙ্গে কয়েক ফোঁটা ইউক্যালিপটাস অথবা টি ট্রি অয়েল মিশিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
মাস্ক পরার আগে মুখের ওই অংশে অল্প পাউডার অথবা অ্যাস্ট্রিনজেন্ট মাখানো যায়। এতে ত্বক ঠান্ডা থাকবে।
যদি মুখ খুব ঘেমে যায়, তাহলে মাস্কের ভেতরে ওয়েট টিস্যু রেখে পরা যায়। তবে দীর্ঘ সময়ের জন্য এ টেকনিক চলবে না। সে ক্ষেত্রে মাস্ক একটু আলগা করে পরিষ্কার টিস্যু দিয়ে চেপে চেপে মুখ মুছে নিতে হবে।
মাস্কনের উপর অ্যালোভেরা জেল মাখাতে হবে রোজ। আর চন্দন বাটা তো আছেই।
রিইউজেবল মাস্ক ব্যবহার করলে তা নিয়মিত পরিষ্কার করা জরুরি। পরপর কয়েকদিন ব্যবহার করা যাবে না। তা অবশ্যই পরিষ্কার ও শুকনো হতে হবে।
মডেল: মাইশা
ছবি: কৌশিক ইকবাল
মেকওভার: পারসোনা
ফেস মাস্ক: কে ক্রাফট