skip to Main Content

সঙ্গানুষঙ্গ I ওয়েডিং মাস্ক

বর-কনের সাজপোশাকে নতুন এক সংযোজন। স্বাস্থ্য সুরক্ষায় যেমন কার্যকর হওয়া চাই, তেমনি এর সৌন্দর্যও বিশেষ জরুরি

বিয়েতে মুখ ঢাকার চল বহু পুরোনো। বর আসতেন ভাঁজ করা রুমালে মুখ ঢেকে, আর কনে থাকতেন ঘোমটার আড়ালে। করোনাকালে বদল এসেছে বিয়ের সাজসজ্জা থেকে অনেক কিছুতেই।
লকডাউনের সময় বিয়ের আয়োজন থেমে নেই। অতিমারির প্রকোপে এসবের আনুষ্ঠানিকতায় বেশ কিছু পরিবর্তন এসেছে। এমনকি বর-কনের পোশাকেও যুক্ত হয়েছে মাস্ক। এর আগ পর্যন্ত এটি চিকিৎসা উপকরণ হিসেবেই পরিচিত ছিল। রোগী আর চিকিৎসকের বাইরে এটি কারও নিত্যদিনের ব্যবহার্য ছিল না। এখন বিয়ের কেনাকাটার তালিকায় শাড়ি, গয়না, প্রসাধনের মধ্যে আবদ্ধ নয়। থাকছে করোনা থেকে নিরাপদে থাকার জন্য মাস্কও।
বিশ্বজুড়ে ওয়েডিং ফ্যাশনে মাস্ক জায়গা করে নিয়েছে। সময়ের প্রয়োজনেই। সার্জিক্যাল মাস্ক ব্যবহার করতে দেখা গেছে বহু জুটিকে। কিন্তু বিয়ের জাঁকজমক এবং গুরুত্বের ভাবনা থেকেই বিশেষ মাস্ক এখন দরকারি অনুষঙ্গ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। সার্জিক্যাল মাস্কের বাইরে জমকালো নকশায় দারুণ এই স্বাস্থ্যপণ্যগুলোতে বর-কনের সাজ ঢাকা পড়লেও উৎসব ম্লান হয়ে যাচ্ছে না। আমাদের দেশেও বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ওয়েডিং মাস্ক।
অনলাইন ব্র্যান্ড কলাগাছ-এর স্বত্বাধিকারী ফাহমিদা সিদ্দিকী বলেন, ‘ওয়েডিং মাস্ক নকশা করার সময় প্রথমে রঙকে প্রাধান্য দিই। কারণ, বিয়ে মানেই উজ্জ্বলতা। বিয়ের পুরো আয়োজনে যেহেতু বেশ কয়েকটি ভিন্ন ভিন্ন অনুষ্ঠান থাকে, সে বিষয়টিও প্রাধান্য পায়। বিয়ের দিনে চড়া রঙের এবং রিসেপশনের জন্য হালকা রঙের মাস্ক তৈরি করি। অর্নামেন্টেশনের ক্ষেত্রে জারদৌসি (সিকুইন) প্রাধান্য দিই। কারণ, মাস্কের বাইরের অংশজুড়েই থাকে নকশা। মানুষের দৃষ্টি এখানে নিবদ্ধ হয়। এ জন্য সোনালি, রুপালির মতো মেটাল কালার ব্যবহার করা হয় থ্রেড নির্বাচনের ক্ষেত্রে। ভেতরের অংশ নকশায় আমরা বাহুল্য বর্জন করে গঠনগত মানের মাধ্যমে ভাইরাস থেকে সম্পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করি।’
ওয়েডিং ড্রেস ব্র্যান্ড সাফিয়া’স-এর স্বত্বাধিকারী সাফিয়া সাথী বলেন, ‘বিয়ের পরিসর ছোট হয়েছে বেশ খানিকটা। কিন্তু সারা জীবনের জন্য সঙ্গী যিনি, তার থেকেও থাকতে হচ্ছে নিরাপদ। মাস্ক তাই চাই-ই। বিয়ের পোশাক জমকালো হয়। এর সঙ্গে সাদামাটা মাস্ক মানেই যেন ছন্দপতন। করোনাকালে সাফিয়া’স-এ তাই যোগ করেছি নতুন লাইন। ওয়েডিং মাস্ক। আমরা কাস্টমাইজড পোশাক তৈরি করি। বর-কনের জন্য তাই পোশাকের সঙ্গে শতভাগ মানানসই নকশার মাস্ক ডিজাইন করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে সবার আগে গুরুত্ব দিচ্ছি ভাইরাস থেকে নিরাপদে থাকার উপায় এবং তারপরেই আছে বর-কনের রুচিগত চাহিদা। তাদের সঙ্গে কথা বলে তবেই নকশা চূড়ান্ত করছি।’
বিয়ের সাজপোশাকে যুক্ত এই মুখাবরণের অলংকরণে দেখা যাচ্ছে জাঁকালো নকশা। হ্যান্ড এমব্রয়ডারি, জারদৌসি, হ্যান্ড পেইন্ট জনপ্রিয়তার শীর্ষে। মোটিফে ফুল, কলকি, আলপনার পাশাপাশি টেক্সটও রয়েছে এ তালিকায়।
ফ্যাব্রিকের ক্ষেত্রে সিল্ক, কাতান ও মখমল পাচ্ছে প্রাধান্য। পাশাপাশি দেখা যাচ্ছে কটন। লাল, সোনালি, কালো মাস্ক এখন ইন ট্রেন্ড। এর কারণ, বিয়ের পোশাকে এসব রঙ বেশির ভাগের পছন্দ। আবার এ ধরনের রঙিন মুখাবরণে অলংকরণ ফুটিয়ে তোলা যায় সহজেই। এ জন্য সেলাইয়ের দিকে নজর দিতে হবে। মাস্কের লাইন নিখুঁত না হলে বর-কনে অস্বস্তিতে পড়তে পারে।
বাজারে ওয়েডিং মাস্ক বর্তমানে চাহিদাসম্পন্ন একটি পণ্য। এটি বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে এর বাহ্যিক সৌন্দর্যের পাশাপাশি মানের দিকেও নজর দিতে হবে। ভাইরাস প্রতিরোধে কোনো অবহেলা নয়। একাধিক লেয়ারে তৈরি মুখাবরণ বেছে নেওয়া জরুরি। মাস্কের স্ট্রিং হতে হবে আরামদায়ক। কোনোভাবেই যেন অস্বস্তি তৈরি না করে, সেদিকে মনোযোগ দেওয়া দরকার।

 সারাহ্ দীনা
মডেল: ইমরান ও শিলা
মেকওভার: পারসোনা
জুয়েলারি: আনজুম’স
ওয়্যারড্রোব ও মাস্ক: হাউস অব আহমেদ
ছবি: রনি রেজাউল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top