টেকট্রেন্ড I ইকুয়ালাইজার
এটি এমন এক ডিজিটাল ও অ্যানালগ প্রযুক্তি, যা ছাড়া রেকর্ডেড অথবা লাইভ সংগীত তার প্রত্যাশিত বিনোদন দিতে পারে না। ১৯৭১-এ প্রথম প্যারামেট্রিক ইকুয়ালাইজার তৈরি করা হয়। রেকর্ডেড গান ১৯৪০ থেকে ৫০-এর দশকে ছিল, তবে সত্তরের দশক থেকে মিউজিক শোনার আনন্দটা সম্পূর্ণভাবে বদলে যায়। কারণ, ইকুয়ালাইজার। ১৯৭১-এর দু-এক বছর আগে-পরের গান শুনলেই খুব সহজেই বোঝা যায়, শ্রুতির আরামকে কোন জায়গা থেকে কোথায় নিয়ে এসেছে এই শব্দপ্রযুক্তি।
এর মাধ্যমে শব্দ বিকৃত ও শ্রুতিমধুর- দুই-ই করা সম্ভব। এভাবেই শব্দপ্রকৌশলী কিংবা সিনেমার সাউন্ড ডিজাইনাররা এখন সব ধরনের আওয়াজ দ্বারা বিনোদন দিতে পারেন। ইকুয়ালাইজারের অনেক ব্যান্ড থাকে, যেগুলো দেখতে ভার্টিক্যাল সাউন্ড ভলিউম ফেডার মতো, যা কমানো বা বাড়ানোর মাধ্যমে সাউন্ডের মূল তিনটি ফ্রিকোয়েন্সির হিয়ারিং এক্সপেরিয়েন্সে লক্ষ্যযোগ্য পরিবর্তন অনুভব করা যায়। প্রফেশনাল ইকুয়ালাইজারের অনেক ব্যান্ড থাকতে পারে আকৃতি ও ব্যবহার অনুযায়ী। সাধারণত ১০টি, ৫টি এবং অন্তত ৩টি ব্যান্ড ফ্রিকোয়েন্সি দেখা যায়। প্রযুক্তিগত অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে ইকুয়ালাইজারের ব্যবহার শুধু প্রফেশনালদের কাছেই সীমাবদ্ধ নয়, এখন যেকোনো ডিজিটাল মিউজিক প্লেয়ারের সঙ্গে এটা থাকেই। সাধারণত এটি উইন্ডোজ মিডিয়া প্লেয়ারে দেখতে পাওয়া যায়। এখন স্মার্টফোনের মিউজিক প্লেয়ারেও তা থাকে।
কেউ কেউ ৫টি ব্যান্ডের ইকুয়ালাইজার ব্যবহার করেন। তবে যদি কারও কাছে ৩টি ব্যান্ডের ইকুয়ালাইজার ইউজার ফ্রেন্ডলি মনে হয়, সেটি দিয়েও কাজ চালানো সম্ভব।
মিউজিক বা সিনেমার সাউন্ড সঠিকভাবে শোনার জন্য আলাদা ইকুয়ালাইজার দরকার। এখন অনেক মিউজিক্যাল জনরা আছে। সবার স্মার্টফোন বা কম্পিউটারের মিউজিক অ্যাপে ভিন্ন ভিন্ন প্রিসেটস দেওয়া রয়েছে। তবে তা সব সময় খুব একটা কাজে আসে না। কারণ, পরিবেশভেদে চারপাশের শব্দের ওপর নির্ভর করে সাংগীতিক শ্রুতির অভিজ্ঞতা। যেমন হলরুম বা অডিটোরিয়ামের পরিবেশ। ফলে অবকাঠামো বুঝে বিভিন্ন রকমের সাউন্ড সিস্টেম প্রয়োজন হয়। সাউন্ড কোয়ালিটি, শোনার অভিজ্ঞতা সব সময় চাহিদা অনুযায়ী হয় না। তখন খুব সহজেই ইকুয়ালাইজারের ব্যান্ডগুলো প্রয়োজনমতো কমানো-বাড়ানো যায়।
প্রচলিত অথচ খুব গুরুত্বপূর্ণ ৩টি ব্যান্ড হলো ‘হাই-মিড-লো’। গানের বেজ অতিরিক্ত মনে হলে ‘লো’ ফ্রিকোয়েন্সি কমালে শ্রবণবান্ধব হয়। সিনেমার শব্দরাশি অথবা সংগীত শুনতে কষ্ট হলে ‘মিড’ ফ্রিকোয়েন্সি বাড়ানো যায়। আওয়াজ অস্পষ্ট হলে অনেক ক্ষেত্রেই ‘হাই’ ফ্রিকোয়েন্সি বাড়িয়ে ভালো অভিজ্ঞতা পাওয়া সম্ভব। তবে ফ্রিকোয়েন্সি পরিবর্তন করার আগে নিশ্চিত হতে হবে স্পিকার সাউন্ড সিস্টেম ঠিক আছে কি না। এক্সপেরিমেন্ট বিফলে যাবে, যদি স্পিকার বা হেডফোন ঠিক না থাকে। ইকুয়ালাইজার সম্পর্কে এ জন্য পুঙ্খানুপুঙ্খ ধারণা থাকা প্রয়োজন।
আবু হেনা মোস্তফা শাহানউল্লাহ
ছবি: ইন্টারনেট