skip to Main Content

ফরহিম I যন্ত্রপাতির পরিচর্যা

প্রায় সব ছেলের কাছেই নিজের গ্রুমিং টুলগুলো যতটা না প্রয়োজনীয়, তার চেয়েও বেশি শখের। এসব উপকরণ যাতে অনেক দিন ব্যবহার করা যায়, সে জন্য প্রয়োজন বিশেষ যত্নের। কিছু প্রক্রিয়া রয়েছে, যা মেনে চলতে হয়।

রেজর
ছেলেদের সবচেয়ে বেশি ব্যবহার্য গ্রুমিং টুলের তালিকায় এটি সবার উপরে। সাধারণত প্রতিদিন অথবা দু-এক দিন পরপরই এর প্রয়োজন পড়ে। রেজর ব্যবহার করার সময় এটা কলের পানির নিচে রাখতে হবে, যেন এতে আটকে থাকা দাড়িগুলো বের হয়ে যেতে পারে। এই প্রক্রিয়া তেমন কাজে না লাগলে একটা মগ কিংবা কাপের মধ্যে পানি নিয়ে তাতে চুবিয়ে নাড়িয়ে নেওয়া যায়। কলের নিচে ধরার সময় খেয়াল রাখতে হবে, যেন পানির বিপরীত গতিতে রেজরের মুখ না থাকে, এতে ধার নষ্ট হতে পারে। ধোয়ার পরে তোয়ালে কিংবা রুমাল দিয়ে কখনোই মোছা যাবে না। এতে রেজরের সক্ষমতা কমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। অতিরিক্ত পানি ঝেড়ে ফেলে বাতাসেই শুকিয়ে নেওয়া ভালো।
ট্রিমার
বক্সেই লেখা থাকে, এটি পরিষ্কার করতে পানি ব্যবহার করা যাবে কি না। প্রতিবার ব্যবহারের পরেই এটি ভালোভাবে পরিষ্কার এবং সঠিক সংরক্ষণ খুবই জরুরি। এতে ট্রিমার ভালো থাকবে, শেভ আরামদায়ক হবে এবং টেকসই থাকবে বহুদিন। সাধারণত বক্সে একটা ব্রাশ দেওয়া থাকে ট্রিমারে আটকে থাকা দাড়ি বের করার জন্য। প্রতিবার ব্যবহারের পরে এটির সাহায্যে ট্রিমার পরিষ্কার করে নিতে হবে, না হলে এগুলো ভেতরে দাড়ির কাটা অংশগুলো জমে যেতে পারে। ব্রাশ দিয়ে পরিষ্কার করার আগে ট্রিমার ১০ থেকে ১৫ মিনিটের জন্য চালিয়ে রাখতে হয়। এতে ভেতরে কোনো চুল আটকে থাকলে তা ঢিলা হয়ে আসবে। এ সবকিছুর পরেও কিছু চুল কোনোমতেই বের না হলে তুলা কিংবা টুথপিক ব্যবহার করা যেতে পারে। তারপর আরও একবার ব্রাশ চালিয়ে নিলেই চলবে। শুধু পরিষ্কার করাই যথেষ্ট নয়। অন্য সব মেশিনের মতোই এর লুব্রিকেশন প্রয়োজন, নইলে এতে জং ধরে ব্লেড নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে। ভালো ব্র্যান্ডের ট্রিমারের সঙ্গে সাধারণত একটা ছোট তেলের বোতল থাকে। তা না থাকলে এক বা দুই ফোঁটা অলিভ অয়েল কিংবা ভেজিটেবল অয়েল দেওয়া যেতে পারে ব্লেডের ওপর। ব্যবহৃত ট্রিমারের বক্সে পানি ব্যবহার করে ধোয়ার বিষয়টি উল্লেখ থাকলে ব্রাশ দিয়ে চুল সরিয়ে নেওয়ার পর পরিষ্কার করার জন্য পানিতে ধুয়ে নিতে হবে। এরপর ব্লেডের উপর দু-এক ফোঁটা বডিওয়াশ দিতে হয়। এবার কিছুক্ষণ ট্রিমার চালিয়ে রাখতে হবে, যাতে সাবান ভালোভাবে ব্লেডে ঢুকে সব দাড়ি, মরা কোষ আর তেল পরিষ্কার করতে পারে। তারপর আবার পানির নিচে কিছুক্ষণ ধরে রাখতে হবে।
বিয়ার্ড ব্রাশ
এটি ছেলেদের প্রতিদিনের ব্যবহার্য। অনেকের দিনে ২-৩ বারও ব্যবহার করার দরকার হতে পারে। বিয়ার্ড ব্রাশ ময়লাও হয় বেশি। তাই শুরুতেই নিজের হাতে কিংবা কোনো নরম সমতলে বারবার জোরে ঝাঁকি দিয়ে জমে থাকা ময়লা কিংবা দাড়িগুলো আলগা করে ফেলতে হবে। এরপর একটা চিরুনি কিংবা কটন সোয়্যাবের সাহায্যে সেগুলো বের করে নিতে হয়। একটা পাত্রে পানি দিয়ে কয়েক ফোঁটা শ্যাম্পু ঢেলে নেওয়া যেতে পারে। তার মধ্যে ব্রাশ কিছুক্ষণ চুবিয়ে রেখে ভালোভাবে হাত দিয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে। প্রতি সপ্তাহে অন্তত একবার বিয়ার্ড ব্রাশ পরিষ্কার করলে তাতে কম ময়লা জমবে। ব্যবহারের আগে বিয়ার্ড ব্রাশ শুকিয়ে নেওয়া ভালো।
বিয়ার্ড স্ট্রেইটনার
এখন অনেকেই এই বিশেষ গ্রুমিং টুল ব্যবহার করেন। সব ধরনের সাবধানতা অবলম্বন করে এটিও পরিষ্কার রাখা জরুরি। দুটি উপায়ে তা করা যেতে পারে। প্রথমটি হলো ডিসইনফ্যাকটিং ওয়াইপস। এই জীবাণুনাশক ব্যবহারের আগে অবশ্যই স্ট্রেইটনারটি বন্ধ অবস্থায় ঠান্ডা করে নিতে হবে। তারপর স্ট্রেইটনারের মাঝে মাঝে ওয়াইপস ঢুকিয়ে ভালো করে পরিষ্কার করে নেওয়া যায়। এতে তেলতেলে ভাব থাকলে কয়েকটি ওয়াইপ পরিবর্তন করে পরিষ্কার করতে হবে। আরেকটি পদ্ধতি হচ্ছে হোয়াইট ভিনেগার ব্যবহার। একটা পাতলা কাপড় এতে চুবিয়ে সেটি দিয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে বিয়ার্ড স্ট্রেইটনার। ভিনেগারের গন্ধ খুব কড়া মনে হলে সামান্য পানি মিশিয়ে নেওয়া যায়। এর এসিটিক এসিড স্ট্রেইটনারের ময়লা কিংবা তেল চিটচিটে ভাব দূর করবে।
টুকটাক
এ ছাড়া ছেলেরা প্রতিনিয়ত নেইল কিট কিংবা ছোট কাঁচি ব্যবহার করে। সেগুলো পরিষ্কার রাখা খুবই সহজ। কুসুম গরম পানিতে একটু লেবুর রস কিংবা শ্যাম্পু দিয়ে এসব ছোটখাটো কিট পাঁচ-সাত মিনিট চুবিয়ে রাখা যেতে পারে। তারপর হাত দিয়ে ঘষে শুকনা তোয়ালে কিংবা টিস্যু পেপারে মুছে নিতে হবে।

 শিরীন অন্যা
ছবি: ইন্টারনেট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top