ফিচার I বাগানে ত্বকের প্রাণ
বাড়ির বারান্দা-টব কিংবা ছাদবাগান। সেখানেই মিলবে রোজকার রূপ-সমস্যার কিছু সমাধান। ত্বকযত্নের জরুরি সামগ্রী
সুন্দর হয়ে ওঠার জন্য সব সময় পার্লারে ছোটার দরকার নেই। ঘরের কোণে, বারান্দা বা ছাদে এক চিলতে বাগান থাকলেই চলবে। সেখানে জন্মানো গাছপালা দিয়ে ত্বকের দেখভাল সম্ভব। একদম অ্যাট হোম স্কিন কেয়ার সলিউশন।
গোলাপ
ত্বককে নজরকাড়া করে তুলতে এর জুড়ি নেই। গোলাপ সবচেয়ে ভালো কাজ করে শুষ্কতা সারাইয়ে। ময়শ্চারাইজার হিসেবে দারুণ এ ফুলের নির্যাস। এমনকি রোজ অয়েলেও মিলবে অ্যান্টিসেপটিক এবং অ্যাস্টিনজেন্ট প্রোপার্টি, যা অ্যাকনে ও ব্রণ সারাইয়ে কার্যকর। এর অ্যান্টিইনফ্ল্যামেটরি প্রোপার্টি ত্বকের লালচে ভাব কাটায় নিমেষেই। রোজ অয়েল তৈরিও সহজ। প্রথমে একটা গ্লাস জারে পছন্দমতো তেল নিতে হবে। এতে গোলাপের পাপড়ি ছিঁড়ে, কুচি করে অথবা থেঁতলে মিশিয়ে দিতে হবে। জার ঢাকনা দিয়ে আটকে একটা গরম পানির পাত্রে রেখে দিতে হয় ২৪ ঘণ্টা অব্দি। তারপর ছেঁকে নিলেই হবে রোজ অয়েল।
ধনে
খাবারের স্বাদবর্ধক হার্বজাতীয় এ উদ্ভিদ ত্বকযত্নে দারুণ কার্যকর। ধনেপাতা এবং বীজ উভয়ই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ঠাসা; যা ত্বককে পরিবেশের ক্ষতিকর ফ্রি র্যাডিক্যাল থেকে বাঁচায়। সেই সঙ্গে ভিটামিন সি-এর বেশ ভালো উৎসও। এর অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিফাঙ্গাল প্রোপার্টি অ্যাকনে যুক্ত ত্বকের যত্নে জাদুকরী। ত্বকের জ্বালাপোড়া কমাতেও কার্যকর। বাড়িতে তৈরি ফেসপ্যাকের সঙ্গে অনায়াসেই এর ব্যবহার সম্ভব। ধনেবীজ গুঁড়া করে মিশিয়ে নেওয়া যেতে পারে প্যাকের সঙ্গে। কোমল, মসৃণ, জ্বালাপোড়াবিহীন ত্বকের জন্য।
পুদিনা
সুগন্ধি এ হার্বের পাতা ব্রণ সারাইয়ে কার্যকর সমাধান। ত্বককে দাগছোপ মুক্ত, সুন্দর এবং সতেজ রাখতে পুদিনা প্রাচীনকাল থেকেই ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এ ছাড়া এতে আছে স্যালিসাইলিক অ্যাসিড, যা এক্সফোলিয়েটর হিসেবে ত্বকের জন্য কোমল কিন্তু ফলপ্রসূ। পুদিনার এই অ্যাসিড লোমকূপ পরিষ্কার করে, ব্রণ থেকে ত্বক বাঁচায়। এতে আরও আছে অ্যান্টিপিউরেটিক এজেন্ট, যা ত্বকের সংক্রমণ রোধ ও চুলকানি কমাতে সাহায্য করে। এর ভিটামিন এ ত্বককোষে শক্তি জোগায়, অতিরিক্ত তেল নিঃসরণের হার কমায়। পুদিনার এসেনশিয়াল অয়েল এ ক্ষেত্রে বেশি ব্যবহার উপযোগী। তৈরিতেও সহজ। পুদিনাপাতা কুচি করে থেঁতলে নিয়ে তা পুরে নিতে হবে লিড দেওয়া গ্লাস জারে। এর মধ্যে দিতে হবে পরিমাণমতো অলিভ অয়েল। ভালোভাবে ঝাঁকিয়ে পাতা আর তেল মিশিয়ে নিতে হবে। এই তেলসহ জারটি তিন দিন রেখে দিতে হয়। তারপর ছেঁকে নিতে হবে। অন্য একটি জারে তাজা পুদিনাপাতা পুরে এর ওপর আগে থেকে তৈরি করে রাখা তেল ছেড়ে দিতে হয়। শুধু ত্বকে নয়, চুলের যত্নেও উপকারী এ তেল। মাথার ত্বকে নিয়মিত মাখলে চুল দ্রুত বাড়ে।
অ্যালোভেরা
ত্বকের যত্নে জাদুকরী। ব্যবহারেও সহজ। বাগান থেকে এনে অ্যালোভেরা পাতা ভেঙে নিতে হবে। ভেতরের জেলটা সানবার্ন সারাতে দারুণ। আক্রান্ত স্থানে ঘষে নিলেই হবে। অ্যালোভেরার দুই ধরনের হরমোন- জিবারেলিনস এবং অক্সিন ত্বককোষকে উদ্দীপ্ত করে, নতুন কোষ তৈরিতেও সাহায়ক হয়। এ ছাড়া প্রাকৃতিক ময়শ্চারাইজার হিসেবে এর জুড়ি মেলা ভার। এতে থাকা ভিটামিন সি এবং ই ত্বকের সুস্থতা রক্ষা করে, রাখে তারুণ্যোজ্জ্বল।
জাহেরা শিরীন
মডেল: শিখা
মেকওভার: পারসোনা
ছবি: ফারাবী তমাল