সম্পাদকীয়
মার্চ খুব তাৎপর্যবহ একটি মাস। একদিকে বাংলাদেশের মানুষের জন্য, অন্যদিকে বিশ্বের সব নারীর কাছেও।
কিন্তু বাংলাদেশ স্বাধীন হলেও নারী কি তা হতে পেরেছে? ঘটেছে কি তার মুক্তি? তা যদি ঘটত, নারীকে শৃঙ্খলিত দেখা যেত না, শাসিত ও শোষিত হতে হতো না আজও। তা সত্ত্বেও বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী আর্থসামাজিক অগ্রগমনে নারীর ভূমিকা অব্যাহত। বিভিন্ন ক্ষেত্রে তারা নেতৃত্বও দিচ্ছে।
নারীর টিকে থাকার সংগ্রাম এবং নিজের অবস্থান সুদৃঢ় করার জন্য পিতৃতান্ত্রিক সমাজের পটভূমিতে তাকে খুঁজে নিতে হয়েছে নিজেরই পথ। এগিয়ে চলার কিছু কৌশল। এটা তার নিজস্ব ও স্বতন্ত্র এক রাজনীতি। যার মাধ্যমে সে মোকাবিলা করছে বিদ্যমান নানা প্রতিকূলতা ও পিতৃতান্ত্রিক কাঠামো, বিভিন্ন উপাদান এবং সংস্কৃতিকে। এবার ক্যানভাসের কভারস্টোরি তাই নারীর রাজনীতি। ইতিহাসের আদি পর্ব থেকে মানুষের গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার হয়েছে নারীর হাতে, কিন্তু তখন সমাজ সেই কাঠামোগত পিতৃতন্ত্রের হাতে বন্দি ছিল না, ফলে তাকে নিজের স্বতন্ত্র অবস্থান তৈরিতে কোনো কৌশল অবলম্বন করতে হয়নি। যেটি পরবর্তীকালে পরিবার-সমাজ-রাষ্ট্রে নারীর আত্মমর্যাদা প্রতিষ্ঠা ও মানুষ হিসেবে তার স্বীকৃতির নিজস্ব রাজনীতি হয়ে ওঠে। কভারস্টোরিতে এসব ভাবনাই উঠে এসেছে।
এই রচনার জের ধরে প্রাসঙ্গিক কিছু বিষয় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। যেমন বলা হয়েছে সেই সব নারীর কথা, যারা সমাজবহির্ভূত অবস্থান থেকে মানুষের জন্য কাজ করে ইতিহাসে প্রসিদ্ধি অর্জন করেছেন।
বলছিলাম নারী নিজের অপরিহার্যতা সৃষ্টির পথ কীভাবে তৈরি করছে, তা নিয়ে। সেই দৃষ্টান্ত দেখা গেল এই অতিমারিতে। কীভাবে? চাকরি হারিয়ে তারা হাল ধরেছে সংসারের অর্থনীতির। ঘরে খাবার বানিয়ে, কাপড় সেলাইসহ অন্যান্য কাজের মাধ্যমে নারীই হয়ে উঠেছে এ সময়ের আর্থসামাজিক প্রধান চালিকাশক্তি। এ বিষয়েও থাকছে দুটি নিবন্ধ। নতুন স্বাভাবিকে নারীর সাজ, মেনোপোজাল মেকআপ, ত্বকের যত্ন, লেগিং লেয়ারিং, কেরাটিন স্মুদেনিং, মাইক্রোবায়োম ইত্যাদি নিয়েও থাকছে কয়েকটি রচনা। পোর্টফোলিওতে রয়েছে নারীশিল্পীর কলম ও তুলিতে রূপময় হয়ে ওঠা ছয় নারীর গল্প।
নারীর জয় হোক।
মার্চ আমাদের স্বাধীনতার মাস। এবারের আলাপনে আমরা পেয়েছি বীর মুক্তিযোদ্ধা রোকেয়া কবীরকে। যিনি একই সঙ্গে নারীর মানবাধিকারকর্মী। সংগঠকও বটে।
সম্প্রতি আমরা হারিয়েছি বিশিষ্ট অভিনয়শিল্পী এ টি এম শামসুজ্জামানকে। বাংলা চলচ্চিত্র ও নাটকে তিনি হয়ে উঠেছিলেন আপামর মানুষের বিনোদনের উৎস। তার কর্ম ও স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই।
সবাইকে স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা।