বিউটি সার্ভিস I কেরাটিন স্মুদেনিং
কোঁকড়া, ঢেউ খেলানো চুলকে নিমেষেই সটান সোজা করে দেওয়ার দারুণ সমাধান মিলছে এখন নামীদামি বিউটি স্যালনগুলোর সার্ভিস লিস্টে। কেরাটিন স্মুদেনিং নামের এই হেয়ার ট্রিটমেন্ট মূলত একটি অস্থায়ী বা স্বল্প মেয়াদি সৌন্দর্যসেবা, যা চুলের গঠন পরিবর্তনে সহায়তা করে। নিরাপদ রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় চুলকে নরম করে এতে পছন্দসই টেক্সচার দেওয়া হয়। ফলে কার্লি, ওয়েভি চুলও দেখায় একদম স্ট্রেইট, ম্যানেজেবল। চকচকে আর মসৃণ। যারা স্ট্রেইটনারের মতো হেয়ারস্টাইলিং টুলগুলো নিয়মিত ব্যবহার করেন, তাদের জন্য জুতসই অপশন এই ট্রিটমেন্ট।
শুরু হয় শ্যাম্পুয়িংয়ের মাধ্যমে। এ জন্য সাধারণত ক্ল্যারিফায়িং শ্যাম্পু ব্যবহৃত হয়। তবে কন্ডিশনার ব্যবহার মানা। তারপর আশি ভাগ অব্দি চুল শুকিয়ে পুরো চুল আলাদা সেকশন করে নেওয়া হয়। ছোট ছোট এসব চুলের গোছায় মাখিয়ে নিতে হয় বিশেষায়িত ট্রিটমেন্ট ক্রিম।
চুলের ধরনের ওপর নির্ভর করে কতটা সময় ক্রিম রাখা হবে। ভার্জিন হেয়ার অর্থাৎ যে চুলে কখনো কেমিক্যাল ট্রিটমেন্ট করা হয়নি, সেগুলোর জন্য অপেক্ষা করতে হবে ৩৫ মিনিট। কেমিক্যালি ট্রিটেড হেয়ারে ক্রিম মাখিয়ে আধঘণ্টা অপেক্ষা করলেই চলবে। তারপর সেরে নেওয়া হয় স্ট্র্যান্ড ইলাস্টিসিটি টেস্ট। এর পরেই পরিষ্কার পানি দিয়ে চুলে মাখানো ক্রিম ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে। অতঃপর ১০ মিনিটের জন্য ইমালসিফাই করে নেওয়া হয়। আবার ধুতে হয় ভালো করে। তারপর চুল পুনরায় সেকশন করে শুরু হয় ব্লো ড্রায়িং। পুরোপুরি শুকিয়ে গেলে করা হয় আয়রনিং। পাতলা চুলের জন্য ১৮০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা হলেই চলবে। মোটা চুলে আয়রনের টেম্পারেচার হওয়া চাই ২০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। প্রতিটি সেকশন খুব ভালোভাবে সময় নিয়ে স্ট্রেইট করে নিতে হবে। তারপর চুলে মাখাতে হয় নিউট্রিলাইজার। বিশ মিনিট পর তা আবার ভালো করে ধুতে হবে। এর পরেই বিশেষ ধরনের মাস্ক মাখাতে হয় চুলে। সবশেষে ব্লো ড্রাই করে নিতে হবে।
মূলত চুলের দৈর্ঘ্য আর ঘনত্বের ওপর নির্ভর করে আড়াই থেকে তিন ঘণ্টা সময় লেগে যেতে পারে কেরাটিন স্মুদেনিং ট্রিটমেন্টে। খরচটাও নির্ধারণ করা হয় এসব মাথায় রেখে। চুলের দৈর্ঘ্য আর ঘনত্বভেদে খরচ পড়বে ৯০০০ থেকে ১৫০০০ টাকা অব্দি। এই ট্রিটমেন্টের কার্যকারিতা চুলে টিকে থাকে চার থেকে ছয় মাস। তবে তা নির্ভর করে চুলের স্বাস্থ্য আর টেক্সচারের ওপর।
কেরাটিন স্মুদেনিং ট্রিটমেন্টের পর চুলের বিশেষ দেখভাল প্রয়োজন। স্টাইলিংয়ের ক্ষেত্রেও চাই সতর্কতা। টুল আর প্রডাক্ট বাছাই করতে হবে বুঝেশুনে। স্মুদেনিং ট্রিটমেন্ট করা চুল স্টাইলিংয়ের সময় এর ওপর যেন বেশি চাপ না পড়ে। ড্রায়ার ব্যবহারও কমিয়ে আনতে হবে। কার্লার ব্যবহার না করাই ভালো। এ ছাড়া সমুদ্রের পানি, সুইমিংপুলের পানি এড়িয়ে যাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। চুলে রঙ করতে চাইলে স্মুদেনিং ট্রিটমেন্টের এক-দেড় মাস পর করানোর পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের। তবে সবচেয়ে ভালো হয় ট্রিটমেন্টের আগেই যদি হেয়ার কালারিংয়ের কাজটা সেরে নেওয়া যায়। বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মেনে নিয়মিত চুলচর্চা করা গেলে ট্রিটমেন্টের সুফল থাকবে অনেক দিন।
বিউটি ডেস্ক
মডেল: মাহি
মেকওভার: পারসোনা
ছবি: ক্যানভাস