ফরহিম I নেকলাইন ক্লিনিং
সময় এখন মেসি হেয়ারের। তবে এই হেয়ার লুক করতে গিয়ে নেকলাইনে একরাশ চুল জমে গেলে তা কখনোই দৃষ্টিনন্দন হয় না। প্যানডেমিকের রেশ অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে এলেও স্যালনে চুল কাটা কিংবা গ্রুমিংয়ে আগের পরিস্থিতি ফিরে আসতে এখনো কিছু সময় হয়তো বাকি। তা ছাড়া এই লকডাউনে নিজেদের গ্রুমিংয়ে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছেন অনেকে। কিছু জিনিস মেনে ঘরে বসেই নেকলাইনের সঠিক যত্ন নেওয়া যায়।
প্রপার টুলস
ছেলেদের গ্রুমিং সরঞ্জামে এক বা একাধিক ট্রিমার থাকা দরকার। ক্লিপারের চেয়ে একটু ছোট একধরনের ট্রিমার আছে। এগুলো বিশেষভাবে নেকলাইনের চুল পরিষ্কারের জন্যই ব্যবহার করা হয়। শেষ হেয়ারকাটের লাইন অনুযায়ী কানের পেছন থেকে শুরু করে কাঁধের দিকে ট্রিম করতে হবে। ট্রিমারটা খুব ধীরগতিতে নেকলাইনের এক স্থান থেকে অন্য স্থানে নিতে হয়। খেয়াল রাখতে হবে যেন মাথা সোজা থাকে। কাজের সুবিধার্থে হাতে একটা ছোট আয়না রাখা যেতে পারে, যাতে মাথার পেছনটা দেখে নেকলাইনের চুল কাটা যায়। যদি একই সঙ্গে আয়না ধরা আর ট্রিম করা খানিকটা ঝামেলা মনে হয়, তাহলে শক্ত একটা স্থানে মাউন্টিং মিরর রেখেও কাজটি করা সম্ভব। এসব বিষয়ে তাড়াহুড়া না করাটাই ভালো। এ ক্ষেত্রে আরও একটা বিষয় মাথায় রাখা জরুরি, নেকলাইন নিয়ে কাজ করার জায়গায় যেন আলোর সমতা থাকে।
ড্রপ দ্য ইরিটেশন
সময়ের স্বল্পতা থাকলে ছেলেরা নিজের নেকলাইন ঘরে বসেই পরিষ্কার করে নেয়। ধরা যাক, হুট করে একটা ইন্টারভিউর ডাক পড়ল, অথবা প্রিয়জন করে বসল ডেটিংয়ের আবদার। হাতে সময় নেই স্যালনে যাওয়ার। এমন পরিস্থিতিতে নিজেকেই সাহায্য করতে হবে! অল্প সময়ে নেকলাইন পরিষ্কার করার পাশাপাশি শেভিংয়ের কারণে হওয়া নেকলাইনের লালচে ভাব আর জ্বালাপোড়ার প্রতিকারও খুঁজে নিতে হবে। খুব জোরে চাপ দিয়ে নেকলাইনে শেভ না করার পরামর্শ দেন গ্রুমিং স্পেশালিস্টরা। সাধারণত ট্রিমারের তুলনায় রেজর বেশি জ্বালাপোড়ার সৃষ্টি করে। পাশাপাশি ত্বকে মাত্র শেভ করা হয়েছে এমন বুঝিয়ে দেওয়ার চিহ্নও রেখে দেয় বহু সময় ধরে। তবে যদি রেজর ব্যবহার করতেই হয়, শেভিং ক্রিম মেখে কিংবা পরে গরম তোয়ালে দিয়ে নেকলাইন আস্তে আস্তে চেপে নিলে লালচে আর জ্বালাপোড়া ভাব অনেকটা কমে যাবে।
ইউজ আ লাইট হ্যান্ড
ট্রিমিংয়ের সময় খুব আলতোভাবে করাই শ্রেয়। হার্ড লাইন করে ট্রিম করলে সেটা খুব ভালো দেখায় না, পরে নতুন চুলও অগোছালোভাবে গজায়। তাই পরিষ্কারের সময় টেপারড নেকলাইন করে নেওয়া যেতে পারে। এতে দেখতে স্বাভাবিক লাগবে এবং নতুন চুলও গজাবে সঠিকভাবে। নেকলাইন নিয়ে কাজ করার সময় খুব বেশি ‘ওভার দ্য টপ’ হলে বিপদ। চুল না গজালে এর স্বাভাবিক লাইন ধরে এগোনো দরকার। বেড়ে যাওয়া চুল পরিষ্কার করে কাটা কিংবা নেকলাইনের শেষ প্রান্ত ট্রিমার দিয়ে শার্প করা ভালো, কিন্তু অনেকেই এটা করতে গিয়ে নিজেদের স্বাভাবিক নেকলাইন থেকে সরে খুব বেশি ছোট করে ফেলেন। এই ভুল শুধু নিজে ট্রিম করতে গেলে যে হয় তা নয়, অনেক নরসুন্দরও এমনটা করে ফেলেন কখনো কখনো। এর ফলে খুবই বেমানান এবং অস্বাভাবিক একটি নেকলাইন তৈরি হতে পারে। তাই এ বিষয়টাও মাথায় রাখার চেষ্টা করা জরুরি। বিশেষ করে বাড়িতে নেকলাইন পরিষ্কারের সময়।
বারবার ইজ দ্য বেস্ট
সময় এবং বাড়তি টাকা- দুটোই থাকলে স্যালনে যাওয়ার বিকল্প নেই। এমন অনেকেই আছেন যারা খুব বেশি সময় ধরে হাত স্থির রাখতে পারেন না, এমনকি কারও কারও হাত কাঁপে। তাদের জন্য ঘরে বসে নেকলাইন পরিষ্কার খুব ঝক্কির কাজ। আবার তাড়াহুড়ো করতে গেলে হিতে বিপরীতও হতে পারে। তাই প্রস্তুতি আছে কি না, তা আগেই ভেবে নিতে হবে। স্যালনে গিয়ে নেকলাইন পরিষ্কার করার সবচেয়ে ভালো দিক হলো, হেয়ারকাট বেশি দিন স্থায়ী করতে সাহায্য করবে এমন ক্লিনআপ। স্বাভাবিকভাবে ছেলেরা এক মাস পর পর চুল কাটান। এই সময়সীমা আরও একটু প্রসারিত করতে এবং নতুন হেয়ারকাটের বাড়তি খরচ কিছুদিনের জন্য বাঁচাতে চাইলে স্যালনে গিয়ে নেকলাইন পরিষ্কার করে আসার বিকল্প নেই।
শিরীন অন্যা
মডেল: ইলিয়াস
মেকওভার: পারসোনা মেনজ
ছবি: জিয়া উদ্দিন