রূপরসদ I শেভিং ক্রিমের বিকল্প
খুব জরুরি উপকরণটি হাতের কাছে নেই? কিন্তু শেভ তো করতেই হবে। সমাধান মিলছে বাড়িতে
সকালে ব্যস্ততার মধ্যে ঝটপট শেভ করতে গিয়ে দেখা গেল, শেভিং ক্রিমের টিউব খালি! এমনটি কারও না কারও জীবনে দু-একবার ঘটে। সাধারণত অনেকেই সেদিনের জন্য শেভিংয়ের ঝামেলা বাদ দিয়ে দেন। আবার কেউ কেউ শেভিং ক্রিম ছাড়াই শেভ করে ফেলেন। তবে বিকল্প হিসেবে খুব সহজেই এমন কিছু উপকরণ ব্যবহার করা যেতে পারে, যার কোনো না কোনোটা ঘরেই সব সময় থাকে।
নারকেল তেল
ত্বকের যত্নে নারকেল তেলের গুরুত্ব সবারই জানা। এটি শেভিং ক্রিমের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা যায়। ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ নারকেল তেলের বাড়তি হাইড্রেটিং উপাদান ত্বকে একটা হালকা প্রলেপ তৈরি করে, যা রেজরের আঁচড় থেকে মুখত্বক রক্ষার উপায়। তা ছাড়া এই তেলের ময়শ্চার শেভিং আরও সহজ করে দেয়। তবে ত্বক সেনসিটিভ কিংবা একনেপ্রবণ হলে এই উপকরণ এড়িয়ে যাওয়াই ভালো। কারণ, এটি সবচেয়ে বেশি কমেডোজেনিক তেল হিসেবে পরিচিত, যা ত্বকের পোরগুলো বন্ধ করে দিতে পারে।
অলিভ অয়েল
রান্নার কাজে অলিভ অয়েলের ব্যবহার থাকলেও মসৃণ শেভের জন্যও তা অনেক বেশি কার্যকর। এই তেলের ফ্যাটি লুব্রিক্যান্ট শুধু শেভিং ক্রিমের বিকল্প হিসেবেই কাজ করে না, ত্বকে ময়শ্চারও ধরে রাখে। অন্যদিকে, বয়সের ছাপ পড়া থেকে রক্ষা করে। তবে নারকেল তেলের মতো অলিভ অয়েল ব্যবহারে সতর্কতা জরুরি। এতেও কমেডোজেনিক উপাদান রয়েছে, যা একনের কারণ হতে পারে। তাই খুব বেশি প্রয়োজন না পড়লে মুখত্বকে এর ব্যবহার না করাই ভালো। আর্মপিট কিংবা হাত-পায়ের শেভিংয়ে এটির ব্যবহার সবচেয়ে ঝুঁকিমুক্ত।
অ্যালোভেরা জেল
যেকোনো ধরনের ত্বকের জন্যই খুব উপকারী। বিশেষ করে সানবার্ন অথবা ত্বকের ব্রেকআউট রোধ করতে অ্যালোভেরা জেল যথেষ্ট কার্যকর। ত্বক মসৃণ করতেও এই জেল অনেকেই ব্যবহার করে থাকে। এটি শেভিং ক্রিমের বিকল্প হতে পারে। ত্বক মসৃণ করে বলে রেজরের ব্যবহার সহজ হয়। অ্যালোভেরা জেল একধরনের শীতল অনুভূতি দেয়, যা শেভের পরবর্তী জ্বালাপোড়া থেকে ত্বককে মুক্ত করে।
বডিওয়াশ
শেভিং ক্রিমের বিকল্প হতে পারে বডিওয়াশ। ত্বক বিশেষজ্ঞরা এ বিষয়ে একমত। বডিওয়াশ যে পরিমাণ ফেনা তৈরি করে, তাতে শেভিং সহজ হয়ে ওঠে। ত্বকের আর্দ্রতায়ও ব্যাঘাত ঘটে না। তবে ব্যবহারের আগে খেয়াল রাখা দরকার, যেন তা উদ্ভিজ্জ উপাদানে তৈরি হয়। ডাভ-এর বডিওয়াশ এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে উপযোগী।
বডি অয়েল
প্রায় সবারই ওয়াশরুমে একটা-দুটো বডি অয়েল থাকে। শেভের আগে কিছু সময়ের জন্য দাড়ি কিংবা যে স্থানে শেভ করা দরকার, সেখানে এর একটা প্রলেপ দিয়ে রাখতে হবে। কিছুক্ষণ পর শেভ করতে হয়। অন্য সব বিকল্পের মতো এটিও ত্বক মসৃণ ও শেভিং সহজ করে। বডি অয়েল ব্যবহারে শেভিং-পরবর্তী রুক্ষতা থাকে না বললেই চলে। ত্বক হাইড্রেটিং রাখতে এবং বাড়তি উজ্জ্বলতা আনতে ভিটামিন সি বডি অয়েল ব্যবহার করা যায়। পাশাপাশি বেবি অয়েলও সহায়ক হতে পারে। একই উপায়ে। এটি ত্বককে আরও স্বাস্থ্যোজ্জ্বল রাখবে।
বডি লোশন
ক্রিমি টেক্সচার আর হাইড্রেটিং উপাদানের জন্য বডি লোশন শেভিং ক্রিমের বিকল্প হিসেবে কাজ করে। বডি অয়েলের মতোই লোশনের প্রলেপ শেভের স্থানে মাখিয়ে শেভ করতে হয়। লোশন ব্যবহারে শেভ করলে পরে আলাদাভাবে ময়শ্চারাইজের প্রয়োজন পড়ে না, যদি না ত্বক খুব বেশি শুষ্ক হয়ে থাকে।
মধু
ঘরে বসে তৈরি করা প্রায় সব ডিওয়াইআই মাস্কেরই মূল উপাদান মধু। এর অ্যান্টিইনফ্ল্যামেটরি উপাদান ত্বকের জ্বালাপোড়া রোধ করে। তাই এটি শেভিং ক্রিমের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করলে রেজর বাম্প কিংবা শেভিং-পরবর্তী জ্বালাপোড়ায় বাধা দেয়।
শিয়া বাটার
বেশ কিছু হ্যান্ডক্রিম কিংবা লোশনের একটি সাধারণ উপাদান শিয়া বাটার। প্রতিদিনের ময়শ্চারাইজার হিসেবে ব্যবহৃত হলেও শেভিং ক্রিমের বিকল্প হতে পারে এটি। শিয়া বাটারের ডিপ ময়শ্চারাইজিং উপাদান একটা পরিষ্কার এবং মসৃণ শেভ পেতে সাহায্য করবে। পাশাপাশি শেভিংয়ের পরবর্তী প্রভাব কিংবা রুক্ষতা থেকে রেহাই মিলবে এই বিকল্পে। শেভের পরে অতিরিক্ত ময়শ্চারাইজার ব্যবহারেরও দরকার হয় না।
শিরীন অন্যা
মডেল: প্রেজুয়াল
মেকওভার: পারসোনা
ছবি: জিয়া উদ্দীন