ইভেন্ট I ট্রেসেমে স্প্রিং ইন ব্লুম ২০২১
ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রিগুলো করোনা অতিমারির আঘাত কাটিয়ে রানওয়েতে ফিরেছে। শিকড়ের সন্ধানে। ট্রেসেমের উদ্যোগে ১৮ থেকে ২০ মার্চ অনুষ্ঠিত হয় ব্র্যান্ডটির প্রদর্শনী। ঢাকার এজ গ্যালারিতে। সবার জন্য উন্মুক্ত এই শোর পার্টনার ছিল ফ্যাশন ডিজাইনার কাউন্সিল অব বাংলাদেশ।
বাংলাদেশি ফ্যাশন ডিজাইনাররা অংশগ্রহণ করেন এই আয়োজনে। মাহিন খান, এমদাদ হক, শৈবাল সাহা, কুহু প্লামন্দন, চন্দনা দেওয়ান, ফারাহ আনজুম বারী, লিপি খন্দকার, শাহরুখ আমিন, তেনজিং চাকমা, ফাইজা আহমেদ, তাসফিয়া আহমেদ, আফসানা ফেরদৌসী, রীমা নাজ, রিফাত রহমান, সাদিয়া রশিদ এবং হোসনা এমদাদ তাদের সিগনেচার ওয়ার্ক প্রদর্শন করেন।
শৈবাল সাহা বলেন, ‘করোনা আমাদের বুঝিয়েছে, ধরণিকে ভালোবাসতে হবে। প্রকৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে প্রেমে। বিশ্ব কঠিন সময়ে নতুন করে বাঁচতে শিখেছে। ফ্যাশন এসবের বাইরে নয়। এবারের ট্রেসেমে ফ্যাশন আয়োজনে তাই আমরা ফিরেছি প্রকৃতির কাছে। পণ্যের গুণাবলি পেয়েছে গুরুত্ব। টেকসই পণ্য ব্যবহারের মাধ্যমে প্রকৃতি-পরিবেশের যত্ন নেওয়াকে আমরা ধারণ করি মনেপ্রাণে। প্রতিটি পণ্য তৈরি হয়েছে প্রকৃতির প্রতি মায়া থেকে।’
তিনি জানান, বিশ্বায়ন সব ফ্যাশনপ্রেমীকে এনেছে কাছাকাছি। একে অপরের কাজ দেখার, জানার সুযোগ হয়েছে। আয়োজনে অংশ নেওয়া প্রত্যেকের কালেকশনে সিগনেচার ডিজাইন প্রদর্শন করা হয়। শিকড়ে ফিরে যাওয়ার জান্য কাজের ধারাবাহিকতা ধরে রাখা হয়েছে এবারও। ফ্যাব্রিক, ডাই এবং অর্নামেন্টেশন- এই তিনেই রয়েছে শতভাগ দেশীয় উপকরণের ব্যবহার। অলংকরণের ক্ষেত্রেও দেশীয় মাধ্যমের বাইরে যাওয়া হয়নি। সিকুইন এবং স্ক্রিন প্রিন্ট এড়িয়ে এমব্রয়ডারি ব্লকের মতো দেশীয় নকশা প্রাধান্য পেয়েছে।
আয়োজনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘করোনাকালে এবং এর পরবর্তী সময়ে কারুশিল্পের যাত্রা বেশ কঠিন হয়েছে। কারুশিল্পীদের সৃজনশীলতা ধরে রেখে তাদের যাত্রা সহজ-সাবলীল করে তাদের পাশে থাকার জন্যই এই আয়োজন।’
ফ্যাশন ইভেন্টে প্রদর্শিত বেশির ভাগ পোশাকে ফ্যাব্রিক হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে ১০০ কাউন্টের সুতা। যেগুলো গুণে ও মানে উন্নত। এমন সুতার তৈরি ফ্যাব্রিক ওজনে হালকা। পোশাকের প্যাটার্নে বিভিন্ন নিরীক্ষা হয়েছে। সৃজনশীলতা এ ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছে।
দেশের সবচেয়ে বড় এ ফ্যাশন ইভেন্টে সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি মেনে আয়োজন সম্পন্ন হয়েছিল। শেষ দিনে মোড়ক উন্মোচন করা হয় ‘রানওয়ে অব লাইফ’ নামের একটি বইয়ের। ইউনিলিভারের হেয়ার কেয়ার ব্র্যান্ড ট্রেসেমের টাইটেল থেকে শিরোনাম নির্ধারণ করা হয়েছে। আধুনিক নারীর বিজয়যাত্রায় ট্রেসেমে কীভাবে অনুপ্রাণিত করে, সে বিষয়ে জানা যাবে এ বই থেকে। বাংলাদেশস্থ ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত উইনি এস্ট্রাপ পিটারসন বইটির মোড়ক উন্মোচন করেন।
শেষ দুদিন আয়োজন করা হয় ফ্লাশ ফ্যাশন শো। দেশসেরা মডেলরা ডিজাইনারদের নকশা করা পোশাক পরে ফ্যাশন ওয়াক করেন। আউটফিটের সঙ্গে অ্যাকসেসরিজেও দেশি পণ্য ব্যবহৃত হয়েছে। প্রদর্শনীর ভেন্যু সাজিয়ে তোলার ক্ষেত্রেও দেশীয় ঐতিহ্য প্রাধান্য পেয়েছে।
ফ্যাশন ডেস্ক
ছবি: সংগ্রহ