ডিলব্রেকার I মিথের গল্প
করোনাপীড়িত সময়েও বৈশাখ ও ঈদ- দুটি উৎসবের পদধ্বনি। ফ্যাশন ব্র্যান্ড মিথ নতুন কী পোশাক নিয়ে হাজির হচ্ছে? এ নিয়ে পরিকল্পনাই-বা কী? জানাচ্ছেন প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজিং ডিরেক্টর জুনায়েদ রহমান
ক্যানভাস: মিথ শুরুর গল্প জানতে চাই?
জুনায়েদ রহমান: মানুষ সুন্দরের পূজারি। মানুষকে আরও বেশি সুন্দর লাগে যখন সে নিজেকে সাজিয়ে-গুছিয়ে রাখে। এই কাজটিই আমি প্রফেশন হিসেবে বেছে নিয়েছি। শুরুতে বিদেশে রপ্তানির মাধ্যমে দেশের রেমিট্যান্স বৃদ্ধিতে অংশগ্রহণ করার চেষ্টা করেছি। পরে বাংলাদেশের মানুষের জন্য ফ্যাশনকে সহজলভ্য করার প্রত্যয় থেকে মিথ লাইফস্টাইল যাত্রা শুরু করি। একমাত্র এই কারণে মিথ ব্র্যান্ডের স্লোগান দেওয়া হয় ‘ফ্যাশন ফর অল’।
ক্যানভাস: ফ্যাশনে আপনাদের নতুনত্ব কোথায়?
জুনায়েদ রহমান: রেডিমেড ফ্যাশন মার্কেট কয়েক বছর ধরে স্থিতিশীল নয়। কিন্তু আমরা কাস্টমারের কাছে কোয়ালিটি প্রডাক্ট দেওয়ার মাধ্যমে নিজেদের ইউনিক পজিশন তৈরির চেষ্টা করেছি। এ ছাড়া আমরা কাস্টমারের প্রয়োজন অনুযায়ী প্রতিনিয়ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সময় উপযোগী ও সহজলভ্য প্রডাক্ট প্রস্তুত করার চেষ্টা করি। যেমন এক বছর ধরে কোভিড-১৯-এর কারণে মানুষ বেশির ভাগ সময় বাড়িতে অবস্থান করেছে। সেই কারণে আমরা বাড়িতে পরার জন্য সহজলভ্য ও আরামদায়ক কাপড় তৈরি করছি। এ ছাড়া বাংলাদেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে প্রমোট করি কাজের মধ্য দিয়ে। জাতিগতভাবে আমরা পারিবারিক বন্ধনে আবদ্ধ থাকতে পছন্দ করি, এই ভাবনা থেকে নিয়ে এসেছি ফ্যামিলি কম্ব প্রডাক্ট। সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে গর্ভবতী মায়েদের জন্য স্পেশাল কাপড় তৈরি করেছি। এভাবে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে, ভোক্তার প্রয়োজনীয়তা মাথায় রেখে নতুন কিছু উপহার দেওয়ার চেষ্টা করি।
ক্যানভাস: আপনাদের কাজ সম্পর্কে ক্রেতাদের দৃষ্টিভঙ্গি কেমন?
জুনায়েদ রহমান: আমার মনে হয়, এই প্রশ্নের উত্তর ক্রেতারাই ভালো দিতে পারবেন। কিন্তু আমরা আমাদের জায়গা থেকে সর্বোচ্চ যত্ন নিয়ে কাজ করার চেষ্টা করি।
ক্যানভাস: অতিমারির সময়ে আপনাদের অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?
জুনায়েদ রহমান: সারা দুনিয়াতেই করোনাজনিত সংকট চলছে। ফলে যেকোনো সময় বাইরে যাওয়া, জমকালো পোশাক পরা, অনুষ্ঠানের উপযোগী সাজগোজ- এসবের গুরুত্ব কমানো হচ্ছে। দিনের একটা বড় সময় এখন মানুষ ঘরে কাটায়। হোম অফিস, অনলাইন ক্লাস, জুম মিটিং, অনলাইন ইন্টারভিউ বা ভিডিও কনফারেন্সে আত্মীয়-বন্ধুদের সঙ্গে কথোপকথন এখনকার প্রেক্ষাপটে খুবই সাধারণ ব্যাপার। তবে সেই সঙ্গে প্রয়োজন অনুযায়ী চাকরি বা ব্যবসার খাতিরে হোক অথবা দরকারি বাজার সদাই, কেনাকাটা ও সীমিত পরিসরে পারিবারিক বা অফিশিয়াল অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার জন্য হোক, আমাদের বাইরে যেতেই হয়। তাই ঘরে ও বাইরের মধ্যে সমন্বয় করার মতো আউটফিট আসছে বছরগুলোতে সমান গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হবে ফ্যাশনের ট্রেন্ডে। দেখা যাচ্ছে, ২০২০ ও ২০২১-এর ফ্যাশনের পূর্বাভাসে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়টি বেশি প্রাধান্য পেয়েছে। যে কারণে আমরা অনলাইনে বিক্রির বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়েছি।
ক্যানভাস: ক্রেতাদের পুনরায় আকৃষ্ট করতে কী পদক্ষেপ নিয়েছেন আপনারা?
জুনায়েদ রহমান: কাস্টমারের আর্থসামাজিক অবস্থা বিবেচনা করে, বিশেষ ডিসকাউন্টে প্রডাক্ট দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি।
ক্যানভাস: বিপণনের ক্ষেত্রে আপনাদের পরিকল্পনা বা পদ্ধতি কী?
জুনায়েদ রহমান: আমরা সার্ভিসের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে থাকি। যেন কাস্টমাররা প্রতিবার একটি ভালো অভিজ্ঞতা নিয়ে যেতে পারে।
ক্যানভাস: বৈশাখ ও ঈদ নিয়ে আপনার নতুন কোনো পরিকল্পনা আছে কি? সে বিষয়ে যদি বলেন।
জুনায়েদ রহমান: একটি কঠিন বছর পার করার পর উৎসব উদ্যাপনের সুযোগ এসেছে। স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও সংক্রমণজনিত নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে আমরা সব ধরনের পরিকল্পনা করছি। দুটো উৎসবই গ্রীষ্মের মধ্যে হবে। সেই কথা মাথায় রেখে আমরা উজ্জ্বল রং ও আরামদায়ক ফ্যাব্রিক ব্যবহার করছি। এ ছাড়া ছেলেদের জন্য থাকছে বিশেষ পাঞ্জাবি ও কাবলি। মেয়ে ও বাচ্চাদের জন্য থাকছে নিউ ট্রেন্ড ও প্যাটার্নের এথনিক এবং ওয়েস্টার্ন কালেকশন। আমরা সামনের উৎসবগুলো নিয়ে ভীষণ আশাবাদী।
ছবি: সংগ্রহ