skip to Main Content

সঙ্গানুষঙ্গ I ঘুঙুর ঘুঙুর

নৃত্যের জন্য ব্যবহৃত হলেও উপমহাদেশের ফ্যাশনে জায়গা করে নিয়েছে। দৃষ্টি ও শ্রুতি-দুটোরই আরাম নিয়ে। লিখেছেন সারাহ্ দীনা

ঘুঙুর ভারতীয় নাচে ব্যবহৃত হয়। ভরতনাট্যম, কত্থক, লাভানি, ওডিসি নাচে আবশ্যক এটি। নৃত্যের তালে তালে ঘুঙুরেও সুর তোলেন নাচিয়ে। ফ্যাশন অনুষঙ্গ হিসেবে এটি জনপ্রিয়।
পোশাকসহ লাইফস্টাইলের বিভিন্ন পণ্যে ঘুঙুরের ব্যবহার দেখা যায়। এগুলো বিভিন্ন আকারের হতে পারে। কোন পণ্যের সঙ্গে ব্যবহৃত হবে, তার ওপর ভিত্তি করে ঘুঙুর বেছে নিতে হয়।
এই উপমহাদেশের ওম্যান ওয়্যারে নিরীক্ষা দেখা যায় সব থেকে বেশি। উৎসবের পোশাক ঘাগরা-চোলিতে ঘুঙুরের ব্যবহার গেছে বহু আগেও। চোলির ব্যাক সাইড নকশায় সৌন্দর্য প্রকাশে এগুলো বেশ জনপ্রিয়। পিঠ খোলা চোলিতে রঙিন ফিতার বাঁধনের সঙ্গে ঘুঙুরের জোড়ায় জৌলুশ বাড়ে। ঘাগরাতেও ব্যবহার করা যায়। কোমরে বিছার মতো যুক্ত করা যেতে পারে, আবার এক পাশে রংবেরঙের ফিতার সঙ্গে বাঁধা ঘুঙুর যখন ছন্দ তৈরি করে, তখন এর জুড়ি মেলা ভার।
লেহেঙ্গাতেও মানাবে ঘুঙুর। ঘাগরার মতোই বটমে যুক্ত করা যাবে। লেহেঙ্গার চোলির নকশাতেও ব্যবহৃত হতে পারে। চোলির নিচের অংশ, যেটি কোমর পর্যন্ত ছুঁয়ে যায়, সেখানে থাকতে পারে ছোট, রঙিন ঘুঙুর।
কামিজের ঝুলে ছোট সাইজের ঘুঙুর যোগ করলে দৃষ্টিনন্দন লাগবে। এ-লাইন শেপ কামিজের সাইডে আর আঙরাখা নকশার ফ্রকের সামনের কাটিংয়ে রঙিন ফিতার সঙ্গে ব্যবহার করা যেতে পারে এই অনুষঙ্গ। ফিতায় ঘুঙুর যোগে সৌন্দর্যের সঙ্গে মৃদু ছন্দ পথচলাকে করে তুলবে আরও আনন্দময়।
ওড়না বা উড়নির আঁচলের দুই অংশে ছোট ছোট ঘুঙুর মন কাড়ে। এক লহর ছোট ঘুঙুর কিংবা আঁচলে রঙিন ফিতায় বাঁধা মাঝারি আকারের ঘুঙুর ব্যবহারে শুধু ওড়না নয়, পুরো পোশাকেই আসবে সৌন্দর্য।
মোগল আমলের অভিজাত নকশা করা জুতা ফ্যাশনে ফিরেছে। জুতি ও নাগরা-উভয় নামেই পরিচিত এই ফুট অ্যাকসেসরিজ। এসবে রঙিন অভিজাত নকশার সঙ্গে ছোট ঘুঙুরের ব্যবহার দেখা যায়। এতে জুতির সৌন্দর্য যেমন বেড়ে যায়, তেমনি চলার সময় মৃদু আওয়াজ মন মাতিয়ে দেয়। সাধারণ পোশাকের সঙ্গে এমন জুতি সাজকে অনন্য করে তুলতে পারে। শুধু উৎসব নয়, এসব ফুটওয়্যার নিত্যদিনের আউটফিটের সঙ্গে দারুণ মানাবে।
উৎসবের পোশাকের সঙ্গে বটুয়া মানানসই। এতে দুটি ঘুঙুরের দোলা মন কেড়ে নেবে। তাই রঙিন বটুয়াতে চোখে পড়ে বর্ণিল ঘুঙুর। ছোট অথবা মাঝারি- সবই চলে। সঙ্গে থাকতে পারে রঙিন ফিতা।
হাত ভর্তি কাচের চুড়ি সব সময়েই ইন ফ্যাশন। কাপড় দিয়ে মুড়িয়ে নেওয়া সৃজনশীল নকশার চুড়ির প্রতিও মানুষের আগ্রহ রয়েছে। এসবের সঙ্গে ঘুঙুর ব্যবহৃত হতে দেখা যায়। ছোট ছোট ঘুঙুরের ব্যবহারে চুড়ি হয়ে ওঠে আরও নান্দনিক। সিগনেচার স্টাইল তৈরিতে ভূমিকা রাখে এমন ফ্যাশন জুয়েলারি অ্যাকসেসরিজ।
‘খোঁপায় তারার ফুল’ দিতে না পারলেও ঘুঙুর ঝোলানো ব্যান্ড ব্যবহার করা যায়। খোঁপার চারপাশজুড়ে ব্যান্ডের সঙ্গে এই অনুষঙ্গ থাকতে পারে। আবার লম্বা বেণি সাজিয়ে নিতেও ঘুঙুর বসানো টারসেল ব্যবহার করা যায়।
ঘুঙুর তৈরি হয় মেটালে। হালকা ওজনের হলে নকশার কোনো প্রকার ক্ষতি হবে না। মসৃণতায় নজর রাখতে হয়, নয়তো নষ্ট হতে পারে নকশা ও ফ্যাব্রিক। পোশাকে রঙিন সুতোর হ্যান্ড এমব্রয়ডারি করা থাকলে ঘুঙুর খুব কাছাকাছি ব্যবহার না করাই ভালো। কারণ, এ ধরনের সূচিকর্ম ঘুঙুর ধাতুর ছোঁয়ায় বিলীন হতে পারে।
নানান রঙের ঘুঙুর পাওয়া যাচ্ছে এখন। সবেতেই সৌন্দর্যের বিচ্ছুরণ। ঘুঙুর ব্যবহার করে নিজের মতো নকশা করা যেতে পারে প্রিয় পোশাক। তা ছাড়া এই অনুষঙ্গ যুক্ত তৈরি পোশাকও পাওয়া যায়। সৌন্দর্যের সঙ্গে নজর রাখতে হবে এর মান এবং কতটুকু টেকসই, সে দিকে।
মডেল: সানি
মেকওভার: পারসোনা
ওয়্যারড্রোব: অদ্রিয়ানা এক্সক্লুসিভস
জুয়েলারি: আটপৌরে
জুতি: লোকাল লেবেল
ছবি: সৈয়দ অয়ন ও ফারাবী তমাল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top