skip to Main Content

বিশেষ ফিচার I মসলিনের প্রত্যাবর্তন

বাংলার অহংকার। সূক্ষ্ম ও মূল্যবান এই বস্ত্র ফিরে এলো। বিলুপ্তির এক শ বছর পর। লিখেছেন আল মারুফ রাসেল

মসলিন- হিউয়েন সাংয়ের বর্ণনায় ‘ভোরের শিশির’। মহার্ঘ এই কাপড় ঢাকা থেকে রপ্তানি হতো ইউরোপে। মেঘনা নদীর ধারে জন্মানো দুর্লভ তুলা- ফুটি কার্পাস ছিল তৈরি উপকরণ। এর পৃষ্ঠপোষক আদিকাল থেকে ছড়িয়ে ছিল বিশ্বজুড়ে- প্রাচীন গ্রিসে দেবীদের প্রতিমা থেকে শুরু করে দূর দেশের সম্রাট এবং মোগল রাজবংশের কয়েক প্রজন্মের পরিধেয় ছিল এটি।
অনেক ধরনের হলেও সেরা মসলিনগুলোর নাম রাখতেন রাজসভার কবিরা- যেমন ‘বাফত হাওয়া’ বা বয়ন করা বাতাস। বলা হয়, এই হাই-এন্ড মসলিন হালকা ও কোমল ছিল, বাতাসের মতোই। এক পর্যটকের লেখা থেকে জানা যায়, ৩০০ ফুটের একটি কাপড় নাকি ভাঁজ করে আংটির ভেতর দিয়ে ঢোকানো যেত। আরেকজন বলেছেন, ছোট নস্যির কৌটোয় ঢুকে যেত ৬০ ফিটের এই ‘বাফত হাওয়া’। স্বচ্ছতা ছিল ঢাকার মসলিনের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য। এ ছাড়া ছিল সঙ্গতি, সরবতি, ঝুনা, আবরুয়া, সরকার আলি, শবনম, মলমল খাস, রং, বদন খাসা, আলবল্লা, তঞ্জেব, তরন্দাম, নয়নসুখ, সরকন্দ ইত্যাদি নামের মসলিন। আবরুয়া পানিতে ফেললে জলের সঙ্গে মিশে যেত। শবনম ঘাসের ওপর রাখলে শিশিরের মতো ঘাসের সঙ্গে জড়িয়ে থাকত। শোনা যায়, একবার নবাব আলীবর্দী খাঁ একটা শবনম ঘাসের ওপর ফেলে পরীক্ষা করতে গিয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত একটা গরু তা ঘাসের সঙ্গে খেয়ে ফেলেছিল।
ঢাকার বুটা-তোলা মসলিন কাসিদা নামে পরিচিত ছিল। পাগড়ি তৈরিতে ব্যবহৃত এই কাপড় রেশম মিশ্রিত। আরব বণিকেরা এটা সংগ্রহ করে নিয়ে যেত পারস্য ও তুরস্কে। ১৮৯৬ সালেও আড়াই লাখ টাকার কাসিদা রপ্তানি হয়েছিল। ঢাকার জামদানি ছিল কারেলা, তোড়াদার, বুটিদার, তেরছা, জলবায়, পান্না হাজরা, ছাওয়াল, দুবলী জাল, মেল ইত্যাদি ভাগে বিভক্ত। প্রতিটি ২৫০ থেকে ৪৫০ টাকায় বিক্রি হতো। সম্রাট আওরঙ্গজেবের জন্য ২৫০ টাকার জামদানি তৈরি হতো। ১৮৮৭ সালে ২ লাখ ৮০ হাজার টাকার কাপড় রপ্তানি হয়েছিল। ছিল মসলিনের ছিট- কবুতর খোপ, নন্দনশাহী, আনারদানা, পাছাদবর, কুন্ডিদার ইত্যাদি নামে।
বলা হয় ১৬৬৬-৭০ সালে মসলিন প্রথম বিলাতে যায়। সে সময়েই ইংরেজ, ফ্রেঞ্চ আর ডাচরা ঢাকায় কুঠি স্থাপনের পর এই কাপড়ের ব্যবসা শুরু করে। কথিত আছে, প্রতিবছর কোটি টাকার মসলিন কেবল ইউরোপেই যেত। দিল্লির বাদশাহসহ অন্যান্য প্রদেশের প্রশাসকেরাও ছিলেন এর ক্রেতা। ১৭৮৭ সাল পর্যন্ত এই ব্যবসা উল্লেখ করার মতো একটা পর্যায়ে ছিল।
মসলিনের ইউরোপ যাত্রার পর এ নিয়ে সেখানে জলঘোলা কম হয়নি। প্রচুর স্যাটায়ার, কার্টুন, কৌতুক হয়েছে এই কাপড়ের স্বচ্ছতা নিয়ে। তারপরও যুক্তরাজ্য আর ফ্রান্সে বিশেষ করে লন্ডন এবং প্যারিসে এই পোশাকের জনপ্রিয়তায় তা কোনো ছাপ ফেলতে পারেনি। এর ভক্তদের তালিকায় ছিলেন ফরাসি রানি মারি অন্তুইনেত, ফরাসি সম্রাজ্ঞী জোসেফিন বোনাপার্ত আর জেন অস্টিন। কিন্তু ইউরোপের আলোকিত যুগে এসে মসলিন যেন হাওয়ায় মিলিয়ে যায়।
বিংশ শতাব্দীর শুরুতে ঢাকার মসলিন পৃথিবীর প্রায় সব প্রান্ত থেকেই হারিয়ে যায়, কেবল কিছু ব্যক্তিগত সংগ্রহ এবং জাদুঘর ছাড়া আর কোথাও তাদের অস্তিত্ব ছিল না। এটা তৈরির জটিল প্রক্রিয়া হারিয়ে যায়, এতে ব্যবহৃত তুলা ফুটি কার্পাসের গাছও আপাতদৃষ্টে বিলুপ্ত। একটা গৌরবজনক অধ্যায়ের সমাপ্তি হলো সেখানেই।
ঢাকাই মসলিন তৈরি হতো মেঘনার তীরে জন্মানো বিশেষ প্রজাতির ফুটি কার্পাস থেকে। এই গাছ পরিণত হলে প্রতিবছর দুবার হলুদ রঙের ফুল দিত, যেগুলো থেকে একসময় বেরিয়ে আসত তুষার-শুভ্র তুলার আঁশ। যেকোনো তুলার আঁশের চেয়ে সেগুলো খাটো-মোটা আর ক্ষয়িষ্ণু হতো, যেটা আপাতভাবে সমস্যা মনে হলেও, এটা দিয়েই তৈরি হতো মসলিনের সুতা। ভঙ্গুর প্রকৃতির কারণে এটা দিয়ে মেশিনে তৈরি সস্তা সুতির কাপড় তৈরি করা সম্ভব ছিল না। স্থানীয়রা এই সুতাগুলোকে জটিল প্রক্রিয়ায় বশ করত হাজার হাজার বছর ধরে। পুরো প্রক্রিয়া ১৬টি ধাপ অনুসরণে করার নিয়ম ছিল। যেগুলো এতটাই বিশেষায়িত যে একেকটা কাজ ঢাকার একেকটা গ্রামে করা হতো। এটা ছিল দলবদ্ধ প্রক্রিয়া, যাতে তরুণ-বৃদ্ধ, পুরুষ-মহিলা- সবারই হাতের প্রয়োজন পড়ত। প্রথমে তুলার গোলকটাকে পরিষ্কার করা হতো বোয়াল মাছের ছোট ছোট দাঁত দিয়ে। এরপর সুতা কাটার পালা। খাটো তুলার আঁশ লম্বা করতে প্রয়োজন প্রচুর আর্দ্রতা, তাই এই অংশটা করা হতো নৌকায়, মহিলারা এই জলযানে বসে ভোরবেলায় এবং শেষ বিকেলে কাজটা করত। বয়স্ক লোকেরা সুতা কাটার কাজ করতে পারত না; কারণ, এই সুতা এতটাই সূক্ষ্ম যে তারা দেখতে পেত না। ছোট ছোট গিঁট থাকত সুতায়, যার মাধ্যমে একটির সঙ্গে আরেকটি জড়িয়ে থাকত। এর ফলে কাপড়ে একধরনের রুক্ষতা আসত, যা বেশ আরামদায়ক অনুভূতি দিত। সবশেষ ধাপে বয়ন। প্রক্রিয়াটি কয়েক মাসের। ক্ল্যাসিক জামদানি প্যাটার্নই সরাসরি কাপড়ে ফুটিয়ে তোলা হতো, অধিকাংশই ছিল ফুলের জ্যামিতিক নকশা। এর ফলে সূক্ষ্ম এক চিত্রকর্ম ফুটে উঠত হাজার হাজার রুপালি, রেশমি সুতায়।
ভারতবর্ষেরই পশ্চিম দিকের লোকেরা বিশ্বাস করত না যে এমন সূক্ষ্ম কাজ মানুষের হাতে তৈরি। তাদের ধারণা ছিল, এই কাজ মৎস্যকুমারী, পরী এমনকি ভূতেরাও করে দিয়ে যেত। কেউ বলত, এটা পানির তলেই তৈরি। এর ওজনহীনতা, কোমলতার সঙ্গে এখনকার কোনো কিছুই মেলানো যায় না। তবে আসল অর্জন ছিল এর থ্রেড কাউন্ট। এটির চাহিদা ছিল বেশি; কারণ, এর ফলে কাপড় নরম হতো এবং বহু সময় ধরে পরা যেত। এখনকার বেশির ভাগ কাপড়ে ৪০ থেকে ৮০ কাউন্টের সুতার ব্যবহার হয়, সেখানে ঢাকাই মসলিনে থ্রেড কাউন্ট ছিল ৮০০ থেকে ১২০০। যদিও তা হারিয়ে গেছে শ খানেক বছর আগে, কিন্তু এখনো এই বস্ত্রে তৈরি শাড়ি, টিউনিক, স্কার্ফ এবং জামার সন্ধান মেলে বিভিন্ন জাদুঘরে। কালের আবর্তে সেগুলো নষ্ট হয়ে যায়নি। মাঝেমধ্যে নিলামঘরে দেখা মেলে এবং হাজার হাজার পাউন্ডে বিক্রি হয়।
ইউরোপে এই ব্যবসার শুরু। অন্যদিকে, পৃথিবীব্যাপী ছড়িয়ে পড়ার কিছুকালের মধ্যে তা বিলীন হয়- দুটোই ঘটেছে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির হাতে। ১৭৫৭-তে ব্রিটিশরা বাংলা দখল করল। ঢাকাই মসলিন প্রথম যুক্তরাজ্যে প্রদর্শিত হয় ১৮৫১ সালে প্রিন্স অ্যালবার্টের উদ্যোগে। সে সময়ে এক গজ মসলিনের দাম হতো ৫০ থেকে ৪০০ পাউন্ড পর্যন্ত, যা এখনকার সময়ে ৭ থেকে ৫৬ হাজার পাউন্ড। তখনকার সেরা সিল্কের দামও ছিল এর ২৬ ভাগ কম।
ইউরোপীয়দের বিলাসিতার তৃষ্ণা বাড়তে থাকলে বাড়ির পাশেই সস্তায় এই কাপড় তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়। ল্যাংকাশায়ার কাউন্টিতে টেক্সটাইল ব্যারন স্যামুয়েল ওল্ডনো ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অর্জিত জ্ঞান আর সে সময়ের সবচেয়ে আধুনিক প্রযুক্তি- স্পিনিং হুইল ব্যবহার করে লন্ডনিদের প্রচুর কাপড় দিতে থাকেন। ১৭৮৪ সালে তার কাছেই ছিল এক হাজার ব্রিটিশ বয়নশিল্পী।
১৭৮৫ সালে কলের সুতা আসে। ফলে মসলিনের বাজার মন্দার মধ্যে পড়ে। ১৮০০ সালে ভারতীয় বস্ত্র রপ্তানি স্থগিত হয়ে যায়, যদিও পরের বছর তা উঠিয়ে নেয়। মসলিনের ওপর ১৫ টাকা শুল্ক ধার্য করে। এই বিরূপ অবস্থায়ও ১৮০৭ সালে সাড়ে আট লাখ টাকার মসলিন ইউরোপে যায়। ১৮১৩ সালে এর পরিমাণ ছিল সাড়ে তিন লাখ টাকা। ১৮১৭ সালে ঢাকার ইংরেজ কুঠি বিলোপ হলে মসলিনের বিলাত যাত্রা একেবারেই বন্ধ হয়ে যায়। ১৮২১ সালে বিলাতি চিকন সুতার আমদানি হলে দেশীয় সুতাও বাজার থেকে উঠে যায়। ১৮২৫ সালে মসলিনের মাশুল ১০ টাকা কমিয়েও পরিস্থিতির আর উন্নতি হয়নি। এরপর ১৮২৮ সাল থেকে বিদেশি কলের সুতার মসলিন তৈরি হতে থাকে। এই অধঃপতনের পরও ঢাকায় ২০ হাজার পিস মসলিন তৈরি হতো প্রতিবছর। ১৮৯০ সালে কলিন্স লিখেছেন, বিদেশি সুতার মসলিন তৈরি করতে পারে এমন ৫০০ ঘর ব্যবসায়ী তখনো ছিল। দু-একটি পরিবার সে সময়ও আদি ঢাকাই মসলিনের ঐতিহ্য ধরে রেখেছিলেন। ঢাকার কমিশনার পিককের লেখা থেকে জানা যায়, ১৮৭৫ সালে নবাব আবদুল গণি প্রিন্স অব ওয়েলসকে উপহার দেওয়ার জন্য তিনখানা মসলিন তৈরি করিয়েছিলেন, যার মোট ওজন হয়েছিল সাড়ে নয় তোলা। ২০ গজ প্রস্থ ও ১ গজ দৈর্ঘ্যরে ছিল প্রতিটি কাপড়, যেগুলো আগেকার ঢাকাই মসলিনের অনুরূপ। ১৯০৯ সালেও মসলিন আফগানিস্তান, তুরস্ক, পারস্য ও আরবে রপ্তানি হতো।
২০১৪ সালে শুরু হয় মসলিন পুনরুদ্ধারের অভিযান। ২০১৩ সালে এক প্রদর্শনীর জন্য মসলিনের খোঁজ নিতে গিয়ে দেখা যায়, পর্যাপ্ত তথ্য-উপাত্ত হাতে নেই। দৃক নিজেরাই গবেষণার জন্য একটি দল তৈরি করে, নেতৃত্বে ছিলেন সাইফুল ইসলাম। ২০১৪ সালে মসলিন তৈরির জায়গাগুলো এবং ইউরোপের কয়েকটি জাদুঘরে খুঁজে বেড়ান ঢাকাই মসলিন। ভিক্টোরিয়া অ্যান্ড অ্যালবার্টে তারা প্রায় ১০০টি আর ইংলিশ হেরিটেজ ট্রাস্টের কাছে দুই হাজার নমুনা পান। কিন্তু ঢাকার জাদুঘরে রয়েছে মাত্র একটি মসলিনের পাগড়ি। এর মধ্যে প্রদর্শনী, ছবি আর বই প্রকাশের পর মাথায় আসে মসলিন পুনরুদ্ধার হয়তো অসম্ভব নয়- এভাবেই প্রতিষ্ঠা হয় বেঙ্গল মসলিন নামের বেসরকারি উদ্যোগ।
বীজ না পেয়ে কিউয়ের রয়্যাল বোটানিক গার্ডেনের বুকলেটে পাওয়া শুকিয়ে যাওয়া ফুটি কার্পাস পাতার ডিএনএ সিকোয়েন্সিং করা হয় প্রথমে। এরপর মেঘনাপারের সম্ভাব্য সব জায়গায় খুঁজে বেড়ানো হয় সেই গাছ। এভাবে কাছাকাছি দেখতে একটি গাছের সঙ্গে সিকোয়েন্সিং করে দেখা গেল, ৭০% মিলে গেছে। সম্ভবত এই গাছেরই পূর্বপুরুষ ছিল কোনো এক ফুটি কার্পাস। মেঘনার পলি-জমা এক চরে এক শ বছরের বেশি সময় পর এ গাছের চাষ হলো। সে বছরেই তুলা সংগ্রহ করে ভারতের সুতা তৈরির কারিগরদের দিয়ে সাধারণ তুলা আর ফুটি কার্পাসের তুলায় তৈরি হলো হাইব্রিড তিন শ কাউন্টের সুতা। বয়নের সময় দেখা গেল, কেউই রাজি হচ্ছে না। অনেক তাঁতি তো একে ¯্রফে পাগলামিও বললেন। খুঁজে পাওয়া গেল আল-আমিনকে। তার কাজের ঘর শীতাতপনিয়ন্ত্রিত, সেখানে হিউমিডিফায়ার যোগ করা হলো মসলিন তৈরির অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টির জন্য। এর মধ্যে আরও ৫০ রকমের যন্ত্রপাতি তৈরি করে নিতে হলো, যেগুলো বাজারে পাওয়া যায় না। অনেক ব্যর্থতা আর সুতা নষ্ট করার ছয় মাস পর বিজয়ের হাসি ফুটল আল-আমিনের মুখে; তৈরি হলো তিন শ কাউন্ট সুতার ঢাকাই মসলিন! এ পর্যন্ত বেঙ্গল মসলিন প্রচুর শাড়ি তৈরি করেছে হাইব্রিড মসলিনে। এর মধ্যে অনেকগুলো হাজার হাজার পাউন্ডে বিক্রি হয়েছে। আর এতেই প্রমাণিত হয়েছে, এই ফ্যাব্রিকের ভবিষ্যৎ রয়েছে। এই ম্যাস প্রোডাকশনের সময় হাতে তৈরি কিছু পেতে সবারই ভালো লাগে। আর মসলিন নামটাই অনেক শক্তিশালী।
সরকারি উদ্যোগও রয়েছে। ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ নির্দেশে মসলিন পুনরুদ্ধারের জন্য গঠিত হয়েছিল এক কমিটি। ১৪ সদস্যের সেই কমিটি ‘বাংলাদেশে সোনালি ঐতিহ্য মসলিন সুতা তৈরির প্রযুক্তি ও মসলিন কাপড় পুনরুদ্ধার (প্রথম পর্যায়)’ নামের প্রকল্প হাতে নেয়। তারই ধারাবাহিকতায় ২০১৭ সালে তারা কুমিল্লার খদ্দরের কাপড়ের সুতা-কাটুনিদের প্রশিক্ষণ দিয়ে, নতুন চরকা বানিয়ে ৫০০ কাউন্টের সুতা বের করতে সক্ষম হয়েছে। এরপর খুঁজতে হয় নতুন তাঁতিদের। প্রথমে আল-আমিন থাকলেও পরে তারা খুঁজে বের করেন রুবেল মিয়া ও মোহাম্মাদ ইব্রাহিমকে। নানা পর্যায়ের প্রশিক্ষণের পর তারা তৈরি করলেন ভিক্টোরিয়া অ্যান্ড অ্যালবার্টে সংরক্ষিত ১৭১০ সালের মসলিন শাড়ির নকল। আপাতত ৬টি শাড়ি তৈরি হয়েছে গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত। প্রতিটিতে খরচ পড়েছে সাড়ে তিন লাখ টাকার মতো। সেগুলোর একটি উপহারও দেওয়া হয়েছে প্রধানমন্ত্রীকে।
এখন সরকারি ও বেসরকারি প্রচেষ্টায় বেঙ্গল মসলিনের উদ্যোগে চাষ হচ্ছে ফুটি কার্পাসের, ফলে বাড়ছে এর মজুত।

তথ্য
১। শ্রী কেদারনাথ মজুমদার, ঢাকার বস্ত্রশিল্প ও ঢাকা নামের কারণ, ঐতিহাসিক চিত্র (পঞ্চম পর্যায়), ১৩১৬ বঙ্গাব্দ
২। Zaria Gorvett, The ancient fabric that no one knows how to make, bbc.com
৩। সরকারি প্রজ্ঞাপন ও প্রথম আলো

মডেল: জুই ও অর্পিতা
মেকওভার: পারসোনা
ওয়্যারড্রোব: ক্লোরাল ক্লসেট
আইওয়্যার: মুক্তা
ছবি: জিয়া উদ্দিন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top