আড্ডা I মনোভাবের পরিবর্তন
বাংলাদেশের ফ্যাশন পরিমন্ডলে এই ধারা নতুন নয়। তবে কিছুটা যেন অন্তরালে থেকে যাওয়া। ক্ষীণতোয়া থেকে ক্রমেই স্রোতস্বিনী হয়ে ওঠা এই ধারায় যোগ হচ্ছে দক্ষ সব ডিজাইনার। ফ্যাশন লেবেল হিসেবেও প্রতিষ্ঠা পাচ্ছে। লোকপ্রিয়তাও। ফ্যাশনপ্রিয়দের পছন্দের ব্র্যান্ড হয়ে উঠছে এসব বুটিক লেবেল। আটপৌরে পোশাকের ঘেরাটোপ থেকে বেরিয়ে এসব আউটফিট উচ্চতর বৃত্তের উপযোগী হিসেবে আদৃত হচ্ছে। তাদের সৃজনকর্ম অনায়াসেই প্রতিযোগিতা করছে বিদেশি নামি সব ব্র্যান্ডের সঙ্গে। এমনকি এদের কারণে উচ্চবিত্তরা দেশমুখী হচ্ছে। আত্মবিশ্বাসে ভরপুর এসব ব্র্যান্ডের নেপথ্যের মানুষগুলো। করোনাকালের ভাটার মধ্যেও তাই তারা জোর গলায় শোনাতে পারে তাদের ব্যবসাসাফল্যের কথা। এমনই চারজনের সঙ্গে সম্প্রতি আড্ডায় মেতে জানা গেল এসব বিষয়। উপস্থিত ছিলেন হাউস অব আহমেদের কো-ওনার তানজিলা এলমা, মুক্তা অফিশিয়ালের ওনার ফারিয়া মেহমুদ, সাহার ওনার নাতাশা সাহা কেজরিওয়াল ও সিমিলি ওত কতুরের ওনার সিমিলি রহমান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন প্রথম আলোর উপসম্পাদক শেখ সাইফুর রহমান
ক্যানভাস: বাংলাদেশের মানুষ কি ডিজাইনার ওয়্যার পরার জন্য প্রস্তুত?
ফারিয়া মেহমুদ বলেন, ডিজাইনার ওয়্যার শুধু সেলিব্রিটিদের জন্য- এমন একটি ধারণা ছিল মানুষের মধ্যে। সেখান থেকে এখন অনেকেই বেরিয়ে আসছেন। এবং নিজেদের জন্য আজকাল অনেকে ডিজাইনার ওয়্যার খুঁজছে। অনেকেই আছে যারা বিদেশে গিয়ে পোশাক কিনতে পছন্দ করে। তবে আমরা কোয়ালিটির নিশ্চয়তা দিলে কেন তারা বাইরে যাবে।
প্রসঙ্গের রেশ ধরে তানজিলা এলমা বলেন, এত দিন পর্যন্ত ডিজাইনার ওয়্যার বা গর্জাস অথবা ইউনিক ওয়েডিং ওয়্যারের জন্য মানুষ দেশের বাইরে যেত। বিশেষ করে পার্শ্ববর্তী দেশে। আমরা শুরুর আগে একটি সার্ভে করি, যেখানে বিদেশ থেকে ওয়েডিং ড্রেস কেনেন এমন অনেক ক্রেতাকে ইন্টারভিউ করি। তাদের কাছে আমরা জানতে চাই, দেশেই যদি আপনারা এ ধরনের পোশাক পান, তবে এখান থেকেই কিনবেন কি না। সব ক্রেতাই আমাদের জানিয়েছেন, তারা দেশ থেকেই পোশাক কিনতে বেশি আগ্রহী। এমনকি আমি বলতে চাই, গত বছরের লকডাউন অনেক ডিজাইনারের জন্য আশীর্বাদ ছিল। কারণ, যেসব ক্রেতা দেশের বাইরে থেকে পোশাক কিনতেন, তারা বাইরে যেতে না পেরে দেশ থেকেই পোশাক কিনেছেন। লকডাউনে আমরা ওয়েডিং ইভেন্টও করেছি। যেখান থেকে প্রচুর সাড়াও পেয়েছি। আমাদের কারখানা দুটি থেকে তিনটি করতে হয়েছে। কারণ, আমাদের পোশাকের যথেষ্ট চাহিদা ছিল। আমরা কুলিয়ে উঠতে পারছিলাম না। মানুষের এখনো ইচ্ছা আছে দেশীয় কাপড় কেনার। এ জন্য দরকার কোয়ালিটি পণ্য সরবরাহ করা।
এই প্রসঙ্গে নাতাশা সাহা বলেন, আসলে মানুষ কোয়ালিটি প্রডাক্ট পছন্দ করে। সেটা দেশে না পেয়ে বিদেশে গিয়ে কেনে। কিন্তু দেশে সেটা পেলে অনেকেই বাইরে যাবে না। এটা আমার লেবেল দিয়েই বলতে পারি। এ ক্ষেত্রে আমার এক্সপেরিয়েন্স যথেষ্ট ভালো।
ক্যানভাস: আমি আরও একটা বিষয় জানতে চাই, ডিজাইনার ওয়্যার পরার মতো এত বেশি ইভেন্ট আমাদের দেশে আছে কি না। কারণ, দিন শেষে ব্যবসায় সাসটেইন করতে হলে চাহিদা থাকা জরুরি। ডিজাইনার ওয়্যারের সেই চাহিদা আছে কি?
নাতাশা সাহা বলেন, আমার মনে হয় সাসটেইন করার মতো বাজার তৈরি হয়েছে; যেটা আমরা গত লকডাউনের সময় দেখেছি। দেশীয় ক্রেতাদের শতভাগকে দেশমুখী করা গেলে বাজার আরও বড় হবে। অন্যদিকে তাদের চাহিদা মেটানোর জন্য অবশ্য কোয়ালিটি পোশাক তৈরি করতে হবে। সঙ্গে থাকতে হবে ইউনিক ডিজাইন। মূলত কোয়ালিটি পোশাক না পেয়েই তারা দেশের বাইরে থেকে কেনাকাটা করে।
তানজিলা এলমা যোগ করেন, এই বিষয়টিই নিশ্চিত করতে চাই বলে দেশেই আমরা মানসম্মত কাঁচামাল সংগ্রহের চেষ্টা করি। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে আমাদের ডিজাইনে কাপড় তৈরি করিয়ে নিই আর তা দিয়েই কাজ করাই।
ক্যানভাস: পোশাকের কোয়ালিটি নিয়ে কথা হচ্ছে, এখানে আমার জানার বিষয় হলো, ভালো কোয়ালিটির পোশাক তৈরিতে ভালো মানের কাঁচামাল যেমন প্রয়োজন, তেমনি দরকার দক্ষ কারিগর। এ ক্ষেত্রে কোনো সমস্যায় পড়তে হচ্ছে কি?
সিমিলি রহমান বলেন, আমাদের দেশে বেশ ভালো কারিগর রয়েছে। সুযোগ দিলে তারা ভালো মানের পোশাক তৈরি করতে পারবে। সে জন্য তাদের কাজের জোগান দিতে হবে। যেমন জামদানির মতো বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন কাপড় আমাদের দেশেই তৈরি হয়। সুতরাং যদি উৎসব বা বিয়ের পোশাকের চাহিদা তৈরি করা যায় এবং এই কারিগরদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়, তবে তারা আরও ভালো কাজ করতে পারবে।
তানজিলা এলমা সংযোজন করেন, বাংলাদেশে দক্ষ কারিগর আছে। তবে আমরা প্রয়োজন অনুযায়ী তাদের দিকনির্দেশনা দিয়ে থাকি। আবার নিয়মিত প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা করা হয় তাদের মেধা বিকাশের জন্য।
ক্যানভাস: এই কারিগরদের দিয়ে কাজ করাতে গিয়ে আপনারা কোনো সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন কি?
সিমিলি রহমান বলেন, আমাদের এখানে কারিগরদের একটা প্রধান সমস্যা হচ্ছে, তাদের কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই। তারা হাতে-কলমে বা দেখে দেখে শেখে। অনেকে আবার বংশপরম্পরায় কাজগুলো করে। আগে যারা সেসব করত, তাদের কাজের প্রতি একটা মায়া ছিল। এখনকার তরুণদের মধ্যে এই বোধটা নেই। তাদের দৃষ্টিভঙ্গি আলাদা। তারা এখানে মূলত কোনো ভবিষ্যৎ দেখতে পায় না। এর একটা বড় কারণ হচ্ছে, তাদের কোনো নির্দিষ্ট মজুরি নেই। কাজের ওপর বা সময় হিসেবে তাদের বেতন নির্ধারণ করা হয়। তরুণ কারিগরদের আরও একটা বড় সমস্যা হচ্ছে, তারা কোনো একটা কাজে পারদর্শী নয়। নানা ধরনের কাজ করে, ফলে নির্দিষ্ট কোনো মাইন্ড সেটও নেই। এরা চিন্তাভাবনায় অনেক বেশি পরিবর্তনশীল। এসব কারণে কোনো ডিজাইনারেরই নিজস্ব কারিগর রাখা সম্ভব হয় না। আর তাই একই কারিগর ভিন্ন ভিন্ন প্রতিষ্ঠান বা ডিজাইনারের সঙ্গে কাজ করছে। এতে ডিজাইনারদের স্বকীয়তাও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তাই যদি কোনো ডিজাইনার নিজস্ব কারিগর তৈরি করে নিতে পারেন, তাহলে কাজের আলাদা বৈশিষ্ট্য সৃষ্টি হবে।
ক্যানভাস: লকডাউনে বিভিন্ন সেক্টর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রিও। এই ইন্ডাস্ট্রির পার্ট হিসেবে আপনারা কতটা ক্ষতির সম্ম্খুীন হয়েছেন?
তানজিলা এলমা বলেন, মানুষ দেশের বাইরে কেন কেনাকাটা করতে যায়, এই বিষয়ে একটু চিন্তা করতে হবে, জানতে হবে, বুঝতে হবে। আমার মনে হয়, বাইরের ব্র্যান্ডগুলো একটা ট্রেন্ড সেট করতে পারে। যার সঙ্গে ক্রেতা নিজেকে কানেক্ট করতে পারে। সুতরাং ক্রেতার মাইন্ড সেটআপ বুঝে কাজ করা যায়। পাশের দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশি ক্রেতাদের টানতে কোনো কোনো ক্রেতার পুরো পরিবারের জন্য প্লেনের টিকিট পর্যন্ত পাঠিয়ে দেয়।
ফারিয়া মেহমুদ বলেন, তবে তাদের মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজিটাও উল্লেখ করার মতো। আমাদেরও সেই দিকে নজর দিতে হবে।
তানজিলা উল্লেখ করেন, স্বীকার করতেই হবে, লকডাউনে আমাদের ব্যবসা যথেষ্ট ভালো হয়েছে। তাই বলে বসে থাকলে চলবে না। ভাবতে হবে স্বাভাবিক সময়ের ব্যবসা নিয়ে। ক্রেতার চাহিদা নিয়ে।
ফারিয়া মেহমুদ আরও জানান, আমার ব্র্যান্ড একেবারেই নতুন। তবু বলব, এই সময়ে যথেষ্ট ভালো ব্যবসা হয়েছে।
নাতাশা সাহা বলেন, বেশি দিন নিজের ব্র্যান্ড নিয়ে কাজ করছি এমন নয়। তবে ঢাকার ফ্যাশন-অনুরাগীদের আন্তর্জাতিক মানের পোশাক দেওয়ার ইচ্ছা থেকেই শুরু করি। আমার একটা ক্লায়েন্টটেল তৈরি হয়েছে। তারা নিয়মিত আসেন। ফলে লকডাউনে আমার কোনো সমস্যা হয়নি।
ক্যানভাস: ঢাকার বাইরের ক্রেতারা কি ডিজাইনার ওয়্যার কিনতে প্রস্তুত? বা এই মার্কেটকে কীভাবে আরও বড় করা যায়?
ফারিয়া মেহমুদ বলেন, ঢাকার বাইরে ইতিমধ্যে চট্টগ্রাম, সিলেটে ডিজাইনার ওয়্যারের চাহিদা তৈরি হয়েছে। এই মার্কেট আরও বড় করতে হলে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করার ব্যবস্থা রাখতে হবে। তারা যেন পছন্দের পোশাক দেশেই পায়, পোশাকের জন্য যেন তাকে দেশের বাইরে যেতে না হয়। যারা এই ধরনের পোশাক কিনতে চান, তারা আসলে কাপড় ধরেই ভালো-মন্দ বুঝতে পারে। ফলে আমরা কোয়ালিটি এনশিওর করতে পারলে ক্রেতা আসবে। আমার এখানে যেমন ঢাকার ক্রেতা ছাড়াও চট্টগ্রামের ক্রেতা আসেন। অনেকে তো ফ্লাই করেই চলে আসেন আমার কাপড় কেনার জন্য। আবার একজনের কাছে শুনে তার পরিচিতরাও আসেন।
নাতাশা সাহা বলেন, আমাদের দেশে অনেকেই আছেন ফ্রিকোয়েন্ট ট্রাভেলার। তারা বাইরে গিয়ে পোশাক কিনে আনে। পরে। আমার ইচ্ছা ছিল এদের জন্য পোশাক তৈরি করার। যাতে তারা বাংলাদেশের কাপড় পরে বিদেশে যায়। সেটা করতে পেরেছি। আমার কাপড় এই বৃত্তের মানুষ কিনছে এবং পরছে। আমার কাপড় পরে দুবাই ফ্যাশন উইকেও গেছে। এটা একটা অবশ্যই বড় সাফল্য। এভাবেই বাজারটা বড় হচ্ছে। তবে মার্কেট বড় হতে গেলে কেবল ওয়ার্ডস অব মাউথ হলেই হবে না; বরং প্ল্যাটফর্মও লাগবে। যেমন ক্যানভাস বা অন্য ম্যাগাজিন এবং ডেইলিগুলো আমাদের নিয়ে লিখবে। মানুষকে জানাবে। তবেই হবে।
ক্যানভাস: যেসব ক্রেতা দেশের বাইরে যাচ্ছে শপিং করতে, তাদের প্রায়ই একটি অভিযোগ করতে শোনা যায়, আমাদের দেশে পোশাকের দাম বেশি। আরও একটি অভিযোগ রয়েছে, তা হচ্ছে আমাদের দেশের ডিজাইনাররা যা বানায়, তা ইন্ডিয়ান পোশাকের মতো।
সিমিলি বলেন, ইন্ডিয়ান বা পাকিস্তানি পোশাকের সঙ্গে আমাদের ড্রেসের অনেক মিল থাকাটাই স্বাভাবিক; কারণ, এই দুই দেশের সঙ্গে এখানকার আবহাওয়া ও রুচির অনেক মিল রয়েছে। যেমন তারাও বাটিকের জামা পরে, আমরাও তা ব্যবহার করে থাকি। আবার প্রিন্টের ক্ষেত্রেও কিছু কিছু মিল রয়েছে। এই সব বিবেচনায় কিছুটা মিল থাকতেই পারে। কিন্তু কেউ যদি বলে, পুরোটাই নকল বা কপি, তবে সেটা গ্রহণযোগ্য নয়। দামের বিষয়টিও আমার মনে হয় একই রকম নয়। কারণ, যে ক্রেতারা বিদেশ থেকে শপিং করেন, তাদের ক্রয়ক্ষমতা অনেক। এটা হয়তো তাদের মাইন্ড সেট যে আমাদের এখানে পোশাকের দাম বেশি।
ফারিয়া মেহমুদ জানান, বিদেশে গিয়ে অনেকে রেপ্লিকা বেশি দামে কিনে আনলেও তারা সেটা নিয়ে কিছু বলে না, বা মনেই করে না। অথচ বাংলাদেশে তৈরি প্রডাক্টের দাম বেশি হলে তা নিয়ে কথা বলে থাকে।
ক্যানভাসের নির্বাহী সম্পাদক হোসনে নুজহাত বলেন, বাংলাদেশে র ম্যাটেরিয়ালের সহজলভ্যতা এবং সঠিক দামে পাওয়ার বিষয়টাও একটা ফ্যাক্টর। কারণ, অনেক কিছুই আমাদের দেশে তৈরি হয় না। সেগুলো আমদানি করতে হয়। ফলে পোশাক বানাতে গিয়ে স্বাভাবিকভাবেই কস্ট প্রাইস বেশি হয়ে যায়।
এই প্রসঙ্গে তানজিলা এলমা বলেন, আমাদের কারখানা ক্রেতাদের ঘুরিয়ে দেখানো গেলে তারা বুঝবে, দেশের বাইরে থেকে যে ধরনের হাতের কাজের পোশাক যে দামে তারা কিনে থাকে, সে তুলনায় আমাদের পোশাক যথেষ্ট ভালো মানের। কিন্তু ক্রেতার মাইন্ড সেটআপই হলো, বিদেশের পোশাক মানেই ভালো। তাদের সেখান থেকে ফিরিয়ে আনতে হবে। গত বছর লকডাউনে অনেক ক্রেতাই দেশ থেকে পোশাক কিনেছেন। তারা সন্তুষ্ট হয়েছেন। হয়তো তারা বিদেশে যেতে পারেননি বলেই কিনেছেন। কিন্তু কেনার পর তাদের মনোভাবের পরিবর্তন হয়েছে। এটা আমাদের একটা বড় সাফল্য। এখন প্রয়োজন হলো, এদের ধরে রাখা, তাদের চাহিদার প্রতি মনোযোগ দেওয়া, পছন্দ অনুযায়ী পোশাক দিতে পারা আর নতুন ক্রেতা তৈরির জন্য কাজ করা।
ক্যানভাস: প্যানডেমিকে মানুষ ভার্চ্যুয়াল শপিংয়ের প্রতি ঝুঁকেছে। আপনার ডিজাইনাররা কী ভাবেন? কোনটা প্রেফার করেন?
সিমিলি বলেন, আমি সরাসরি বিক্রির প্রতি আগ্রহী। মানুষ দেখে কিনবে।
ক্যানভাস: এ ক্ষেত্রে বোধ হয় নিউ জেনারেশনের ডিজাইনারদের মনোভাব জানাটা বেশি জরুরি।
ফারিয়া মেহমুদ জানান, আমার নতুন ব্র্যান্ড। ওয়েবসাইট আছে। কিন্তু বলতে গেলে ৯৫ ভাগই বিক্রি হয় অফলাইনে। অনেকেই ওয়েবসাইটে থেকে দেখে ছবি তুলে জানতে চায়, স্টোরে অ্যাভেইলেবল কি না; যদি সেটা থাকে, তাহলে তারা সরাসরি এসেই কিনে নিয়ে যায়।
তানজিলা এলমা বলেন, আমরা এই সমস্যার সমাধানে লকডাউনের সময় ট্রাঙ্ক শোর ব্যবস্থা করেছিলাম। যেটা বেশ পপুলারও হয়েছে। কারণ, ট্রাঙ্কের মধ্যে আমরা সবকিছু পাঠিয়ে দিতাম। সেখান থেকে তাদের পছন্দ হলে রেখে দিত। বাকিগুলো ফেরত পাঠাত।
নাতাশা সাহা উল্লেখ করেন, আমার মনে হয়, মানুষ দামি জিনিস সরাসরি দেখেই কিনতে বেশি আগ্রহ বোধ করে। আর টাচ অ্যান্ড ফিল বলে একটা বিষয় তো আছেই।
ক্যানভাস: প্যানডেমিকের কারণে অ্যান্টিভাইরাস ফ্যাব্রিক বা জীবাণুপ্রতিরোধী কাপড় নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। এর উদ্ভাবন নিয়ে কাজ হচ্ছে। আপনারাও সেসব ভাবছেন কি না?
সিমিলি বলেন, এর কোনো সায়েন্টিফিক প্রুফ নেই; বরং আমি ওয়াশেবল কাপড় দিয়ে পোশাক তৈরি করছি। যাতে অনেকবার ধোয়া যায়। নষ্ট না হয়।
ফারিয়া মেহমুদ বলেন, এখন প্রয়োজন বারবার ধুলেও নষ্ট হবে না এমন টেকসই কাপড়।
ক্যানভাস: ব্র্যান্ডের পোশাকের ক্ষেত্রে আপনারা কোনো সেগমেন্টেশন করেন কি না?
নাতাশা সাহা বলেন, এখন আসলে সেই দিন নেই। সবাই সবারটা পরতে পারে; বা সেভাবেই হয়তো ভাবে। আর কে কীভাবে ক্যারি করছে, সেটাই বড় বিষয়। এ ক্ষেত্রে আমার মনে হয় ইউনিভার্সাল ইজ দ্য রাইট ওয়ার্ড। অন্তত আমার পোশাকের ক্ষেত্রে।
তানজিলা এলমা বলেন, আমরা ওয়েডিংকে বেশি প্রাধান্য দিই, সে জন্য বর-কনে আমাদের প্রধান লক্ষ্য। এরপর অন্যরা আসেন।
ক্যানভাস: কোনো ইন্টারন্যাশনাল ফ্যাশন উইকে অংশগ্রহণের পরিকল্পনা কি আছে কারও? অদূর ভবিষ্যতে? বা বাইরে কোথাও ফ্যাশন শো করা?
ফারিয়া মেহমুদ জানান, তার দুবাইতে যাওয়ার ইচ্ছা আছে।
আড্ডা শেষে ক্যানভাসের পক্ষ থেকে সবাইকে ধন্যবাদ জানানো হয়।
ছবি: মাল্টিপ্লাই
লোকেশন: উনান রুফ টপ রেস্টুরেন্ট