সাজসারাই I আলসেদের সাজ
যাদের কাছে মেকআপমাত্রই পরিশ্রম, তাদের জন্য। কিন্তু রয়েছে এমন সব কৌশল, যেগুলো সহজ ও সময় বাঁচোয়া
অনেকেই যত্ন নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সাজতে ভালোবাসেন, আবার এমন অনেককেই খুঁজে পাওয়া যাবে, যারা মেকআপ করতে বসার নাম শুনলে আঁতকে ওঠেন। সাজতে পছন্দ করলেও আয়নার সামনে বসে দুচোখে একদম পারফেক্ট উইংড লাইন টানা কিংবা কনটুরিংয়ের মাপজোখ, তাদের জন্য মোটামুটি যুদ্ধের শামিল। ট্রেন্ডি ইলাবোরেট মেকআপেও অনীহা। তাহলে উপায়? জাদুর জিনি এসে তো আর মেকআপ করিয়ে দেবে না, বরং কৌশলী হতে হবে নিজেকেই। দরকার শুধু মেকআপ কিটে কিছু এসেনশিয়াল আইটেমের উপস্থিতি আর কিছু স্মার্ট মেকআপ টেকনিক রপ্ত করে ফেলা। চটজলদি সেজে সবার মধ্যমণি হয়ে উঠতে।
প্রথমে মাইল্ড ক্লিনজার দিয়ে মুখ আর গলা পরিষ্কার করে নেওয়া চাই। ত্বক পরিষ্কার না থাকলে যতই মেকআপ করা হোক না কেন, ভালো দেখাবে না। বেজটা তৈরি করে নেওয়া চাই শুরুতেই। চটজলদি বেজের জন্য টিন্টেড ময়শ্চারাইজার ভালো অপশন। হালকা টিন্টেড ময়শ্চারাইজার স্মুদ বেজ ফিনিশ তৈরিতে সাহায্য করে। এর সান প্রটেকশন ফ্যাক্টর রোদ থেকে ত্বককে রক্ষা করে, জেল্লাও এনে দেয়। না হলে ত্বক খসখসে দেখাবে। দাগছোপ ঢাকতে কনসিলার জুতসই। চোখের নিচে কালি লুকাতেও এর বিকল্প হয় না। ফাউন্ডেশন চাইলে মাখা যেতে পারে। কিন্তু ব্লেন্ডিংয়ের ঝামেলায় না যেতে চাইলে বিবি অথবা সিসি ক্রিম মাখা যেতে পারে। তারপর ফেস পাউডার পাফ করে নিলেই চলবে। একটা ব্রাশ দিয়ে গালের বাইরের দিকে ব্রঞ্জার ডাস্ট করে নিলে চেহারায় দ্যুতি ছড়াবে। চিকবোনের নিচ থেকে নিয়ে টেম্পল পর্যন্ত ডাস্ট করলেই চলবে। আর গালে হালকা ব্লাশন মেখে নিলে তৈরি মুখের মেকআপ।
চোখে ইনস্ট্যান্ট গ্লামের জন্য চটপট ব্রাইট আইলাইনার অ্যাপ্লাই করে নেওয়া যায়। এক্সপেরিমেন্টে আপত্তি না থাকলে রঙিন আইলাইনার দারুণ দেখাবে। আইলিডের ওপর নিউট্রাল শেডের আইশ্যাডোই যথেষ্ট এর সঙ্গে। যত্ন করে লিকুইড আইলাইনার মাখতে না পারলে, কাজল পেনসিল চমৎকার অপশন। তবে মাসকারা মাস্ট। ইলাবোরেট আইমেকআপ না করতে পারলেও মাসকারা মাখতে ভোলা যাবে না। তা ছাড়া সুন্দর করে শেপ করা আইব্রো গোটা লুকটাই পাল্টে দিতে পারে। আইব্রাও শেপ করা না থাকলে ক্লিয়ার মাসকারা ব্যবহারে শেপ করে নিলেও ভালো এফেক্ট দেবে সাজে।
সারা মুখে বিশেষ মেকআপ না করেও নজর কাড়ার জন্য দারুণ শেডের একটা লিপস্টিকই যথেষ্ট। পছন্দসই উজ্জ্বল রঙে ঠোঁট সাজালে পুরো লুকটাই হয়ে উঠবে গ্ল্যামারাস। বাকি মেকআপ না করলেও চলবে। চোখ বা ঠোঁটের মধ্যে যেকোনো একটা অংশ হাইলাইট করা যেতে পারে। ডিপ স্মোকি আইজ পছন্দ করলে, ঠোঁটে ন্যাচারাল শেডের লিপকালার ভালো দেখাবে। বেশিক্ষণ কাভারেজ চাইলে প্রথমে লিপবাম মাখিয়ে নিতে হবে, তার ওপর ম্যাট লিপস্টিক। শেষ মুহূর্তে মেকআপের শেড নিয়ে কনফিউশন হলে জেনে রাখতে হবে ফরসা, গমরঙা বা শ্যামলা—সব ধরনের স্কিনটোনের সঙ্গে ন্যুড লুক ভালো কাজ করে।
চুলের কথা ভুলে গেলে চলবে না! একটা দারুণ হেয়ার ডু সবার মধ্যেও একেবারে আলাদা করে তুলতে পারে। একটু বুদ্ধি খাটালে সামান্য এফোর্ট দিয়েও সুন্দর হেয়ারস্টাইল তৈরি করে নেওয়া যায়। আগের দিন রাতে চুলে হালকা হাতে মুজ বা ক্রিম মাখিয়ে নিতে হবে। তারপর দুটো বেণি করে শুয়ে পড়তে হয়। সকালে সফট কার্লস পাওয়া যাবে। টপ নটও করে নেওয়া যেতে পারে। সঙ্গে পরে নেওয়া যায় মানানসই হেয়ার অ্যাকসেসরিজ। সময় বাঁচবে, স্টাইলও হবে। খোলা চুলে স্টাইল করতে চাইলে চুল উল্টে নিয়ে ব্যাক কম্ব করে নিলেই চলবে। ইনস্ট্যান্ট ভলিউম আসবে চুলে। ছোট চুলে ভলিউম আনতে ব্যবহার করা যেতে পারে রোলার। চুলের সামনের দিক পিন করে বাকিটা খুলেও রাখা যায়।
জাহেরা শিরীন
মডেল: মিলি
মেকওভার: পারসোনা
ছবি: সৈয়দ অয়ন