ফুড বেনিফিট I ভিনেগার
এটি ক্লান্তি দূর করে। শরীরে অক্সিজেনের প্রবাহ বাড়িয়ে দেয়। ওজনও কমায়
অম্ল ও পানির বিশেষ মিশ্রণই ভিনেগার। এটি তৈরির কাঁচামাল মূলত ফলের রস। কোনোটায় অ্যালকোহলও থাকতে পারে। ব্যাকটেরিয়া যোগেও তৈরি হতে পারে ভিনেগার। প্রায় পাঁচ হাজার বছর আগে মিসরে এটি ব্যবহারের নজির মিলেছে।
দুই ধরনের ভিনেগার বেশি প্রচলিত। সাধারণ তথা সাদা ভিনেগার এবং অ্যাপেল সিডার। ইদানীং খেজুর, টমেটো, নাশপাতি, নারকেল ইত্যাদি ফলেরও ভিনেগার হয়। যে ফলের রস দিয়ে তৈরি হয়, ভিনেগারের নাম সেই ফলানুসারেই হয়।
বিভিন্ন রোগের পথ্য এটি। যেমন যারা টাইপ টু ডায়াবেটিসে ভোগেন, তারা অ্যাপল সিডার ভিনেগার খেয়ে উপকৃত হন। এটি রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। স্থূলতার কারণে এ ধরনের ডায়াবেটিস শরীরে বাসা বাঁধতে পারে। অ্যাপেল সিডারের আম্লিক উপাদান শরীরের মেদ, কোলেস্টেরল কমায়। ফলে ওজন কমে। বিভিন্ন প্রাণীর ওপর এটি প্রয়োগ করে দেখা গেছে, এতে রক্তের ট্রাইগ্লিসারাইডস কমায়। মূলত ট্রাইগ্লিসারাইড ও কোলেস্টেরলই হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়। নিয়মিত ভিনেগার খেলে এ বিপদ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
পাকস্থলীতে অম্লের মাত্রা বাড়লে খাবার ঠিকঠাক হজম হয় না। এতে কিডনিতে পাথর জমার আশঙ্কা তৈরি হয়। ভিনেগার খাদ্য হজমে সহায়তা করে পাকস্থলী ও কিডনির সুরক্ষা নিশ্চিত করে। যদি পাথর জমেই যায়, সে ক্ষেত্রে কষ্ট কমাতেও ভিনেগার খাওয়া যেতে পারে। এটি খেলে বৃক্কের ক্ষতও নিরাময় হয়। অ্যাপেল সিডার শরীরে টক্সিন বের করার পাশাপাশি দেহের বর্জও অপসারণ করে। এই তরলটি প্রাকৃতিক অম্ল হিসেবে কাজ করে। ফলে কিডনির পাথর নরম করে ভেঙে মূত্রের সঙ্গে বের করে দিতে পারে। ইঁদুরের ওপর করা এক গবেষণায় দেখা গেছে, অ্যাপেল সিডারে থাকা অ্যাসিটিক অ্যাসিড ক্যানসার কোষ ধ্বংস করে। দৈনিক খাদ্যতালিকায় এটি রাখলে বিশেষ উপকার পেতে পারেন এই রোগীরা। এটি শরীরের রক্তপ্রবাহ সচল রাখে। ফলে দেহকোষে সমভাবে অক্সিজেন পৌঁছায়। এতে ক্লান্তি দূর হয়, শরীরে চনমনে ভাব আসে। অনিদ্রা দূর করতেও খাওয়া যেতে পারে ভিনেগার। গরম পানির সঙ্গে তরলটি মিশিয়ে ঘুমাতে যাওয়ার আগে গোসল করে নিলে ¯œায়ুর উত্তেজনা কমে। তাতে মন প্রশান্ত হয়, ভালো ঘুমেও সহায়ক।
শরীরের অভ্যন্তরীণ সুবিধার পাশাপাশি রূপচর্চায়ও লাগে ভিনেগার। এতে থাকা হাইড্রোক্সি অ্যাসিড ত্বকের মরা কোষ এবং বলিরেখা কমায়, যা বার্ধক্য রোধে সহায়ক। তবে ভিনেগারের কিছু মন্দ দিকও আছে। এটি সরাসরি ত্বকে ব্যবহারের উপযোগী নয়। তাতে ত্বক জ্বালা করতে পারে। সব ধরনের ডায়াবেটিসের জন্যও ভিনেগার উপযোগী নয়। পেপটিক আলসার থাকলে তরলটি এড়িয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
ফুড ডেস্ক
ছবি: ইন্টারনেট