সম্পাদকীয়
শুরু হলো সংযমের মাস রমজান। এই ত্রিশ দিনের জীবনধারা বছরের বাকি সময়ের মতো নয়। অপরিহার্য সব কাজ আগের মতো চলবে বটে; খাদ্যাভ্যাস, ঘুম, শয্যাত্যাগ, প্রার্থনা ইত্যাদিতে ঘটবে পরিবর্তন। বলা যায়, জীবনযাপনকে আমরা সিয়াম সাধনার নিয়ন্ত্রণে রাখবো মাসজুড়ে। এটি সৃষ্টিকর্তার বিশেষ এক উপহার, কেননা, এ সময়ে ধর্মীয় মূল্যবোধ চর্চার পাশাপাশি মানবিক আদর্শ ও সামাজিক নৈকট্যের অনুশীলনও হয়। পরিবারের সদস্যরা কিংবা সহকর্মীরা একসঙ্গে ইফতারে বসি, ভোর হওয়ার আগে জেগে উঠি সবাই, সেহরিতে অংশ নেবো বলে। আমরা একে অন্যের কাছাকাছি হয়ে আসি। সত্যি, সময়টার কোনো তুলনা হয় না।
রোজার শুরুতেই ক্যানভাস এক্সক্লুসিভ আপনাদের হাতে তুলে দিতে পেরে আমাদের গর্ব আর আনন্দের যেন শেষ নেই। কেননা, হাতে সময় ছিল কম, এর মধ্যে সংখ্যাটি কলেবরে বড়, প্রতিবারের মতো সঙ্গে আবার পোর্টফোলিও। ঈদ আসছে মহাসমারোহে, তা যে আপনারা উদ্যাপন করবেন, প্রস্তুতি তো লাগবেই। ফলে, জানা ও দেখা দরকার, এবারের ঈদ ফ্যাশন কী নিয়ে হাজির হচ্ছে, উৎসবকে রঙিন করে তোলার জন্য।
ফ্যাশনের কথা যখন উঠলো, এবারের কভারস্টোরির উল্লেখ করতেই হয়। শপিংয়ে গিয়ে আমরা পোশাকশোভিত শোকেস আর ম্যানিকুইন দেখি। এসব পণ্য চটজলদি তৈরি কিছু নয়, বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে এগুলো ক্রেতার সামনে আসে। কিন্তু শুরু আড়ালের একটা ঘর থেকে, সেখানে ডিজাইনাররা আপন মনে কাজ করেন, সৃষ্টিশীল পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালান নতুন নতুন পোশাক উদ্ভাবনের জন্য। রীতিমতো একটা ল্যাবরেটরি। হ্যাঁ, এ সংখ্যার কভারস্টোরি ডিজাইন স্টুডিও। প্রচলিত ছকের বাইরে ভিন্ন কিছু ভাবনা নিয়ে এটি রচিত হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, কস্টিউম ডিজাইন নিয়ে নবীন-প্রবীণ ডিজাইনার ও চলচ্চিত্র নির্মাতার সমন্বয়ে একটা আড্ডার আয়োজন করেছে ক্যানভাস, যা এই সংখ্যায় প্রকাশ করা হয়েছে। উল্লেখ্য, এটি ঈদ এক্সক্লুসিভের একটি রীতিতে পরিণত হয়েছে। পাঠক-চাহিদার কথা বিবেচনা করেই।
গরম বেড়েছে আগের তুলনায়। রোজার দিনগুলোতে এই তাপমাত্রা অপেক্ষাকৃত কষ্টকর। তাই এখন থেকে পানি পানের মাত্রা খানিকটা বাড়িয়ে দিন। শরীর সারা দিন চাঙা ও কর্মক্ষম রাখতে ইফতার ও সেহরির মধ্যবর্তী সময়ে পর্যাপ্ত পানি খান। কাজ ও প্রার্থনার সময় বাদে যথাসম্ভব বিশ্রাম নেয়ার চেষ্টা করুন।
এত কথা বলছি, কিন্তু দুটি বিয়োগান্ত ঘটনার ব্যথা থেকে মন সরাতে পারছি না। সাবেক সচিব, কূটনীতিক ও লেখক ফারুক চৌধুরী এবং বিশিষ্ট ভাস্কর, চিত্রশিল্পী, অধ্যাপক, অপরাজেয় বাংলার স্রষ্টা সৈয়দ আবদুল্লাহ খালিদ আমাদের মাঝে আর নেই। উভয়েই নিজ নিজ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে গেছেন। তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই।
সংযমের মাস প্রশান্তিকর ও সৌহার্দ্যময় হোক।