রসনাবিলাস I বার্গারবাড়ি
সাত বছরেই রাজধানী ও দেশের সীমানা ছাড়িয়েছে। মজাদার ও বিচিত্র বার্গারের বদৌলতে
বার্গারপ্রেমীদের প্রিয় স্থান টেকআউট। হলুদ রঙের আবহে তৈরি করা হয়েছে ইন্টেরিয়র থেকে শুরু করে সবকিছু। এখন এ রঙের সঙ্গে টেকআউটকে খুব ভালোভাবে মেলানো যায়।
বার্গারের রেস্টুরেন্ট হিসেবে আজকাল এটি বেশ জনপ্রিয়। ভিন্ন স্বাদের বার্গার তৈরি করে ভোজনরসিকদের প্রিয় হয়ে আছে প্রায় সাত বছর ধরে। শুরুটা ফাহিম কবিরের হাত ধরে। ছোটবেলা থেকেই ভোজনরসিক টেকআউটের বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফাহিম।
বার্গারের রেস্টুরেন্ট খোলার পরিকল্পনা নিয়ে বন্ধু জুবায়েরের সঙ্গে একদিন চলে যান সীমান্ত স্কয়ারে। সেটি তখন পরিচিত ছিল ‘রাইফেলস স্কয়ার’ নামে। সেখানে একটি ফুড কোর্ট ছিল। নানা খাবার পাওয়া যেত। এখন তা পার্কিং জোন। স্বল্প পুঁজিতে সীমান্ত স্কয়ারের ফুড কোর্ট দিয়েই যাত্রা শুরু করে টেকআউট। তারিখটা ছিল ২০১৪ সালের ৮ জুন। ফাহিম কবির, জুবায়ের মোকাররম হোসেন, ইবাদুল ইসলাম, জিয়াউল হক—এই চার তরুণের হাত ধরেই শুরু হয় টেকআউট। বর্তমানে জুবায়ের মোকাররম হোসেন অপারেশন ডিরেক্টর, ইবাদুল ইসলাম ফিন্যান্স ডিরেক্টর এবং চেয়ারম্যান জিয়াউল হক। ফাহিম কবির আছেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে। আরেকজন যুক্ত হয়েছেন টেকআউট টিমে। তিনি ফারশিদ ভূঁইয়া, এক্সটার্নাল অ্যাফেয়ার্স ডিরেক্টর।
এর ১০টি আউটলেট রয়েছে। ২০১৪ সালে যাত্রা শুরুর এক বছর পর বনানীতে দ্বিতীয় আউটলেট শুরু করে। এ ছাড়া ধানমন্ডি, উত্তরা, রমনা, মিরপুর, যমুনা ফিউচার পার্ক, মোহাম্মদপুর, খিলগাঁওয়ে আউটলেট রয়েছে। গ্রিন রোডে চলছে নতুন ক্লাউড কিচেন তৈরির কাজ। ঢাকার বাইরে চট্টগ্রামে ও নাজিম রোডে শাখা রয়েছে।
দেশের বাইরে শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোতে ২০১৭ সালে চালু করে একটি শাখা। দীর্ঘ সাত বছরে ১৫০ জনের অধিক মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে এখানে, জানিয়েছেন ফাহিম কবির।
তিনি বলেন, ‘আমাদের একটা পরিকল্পনা ছিল, ভিনদেশি একটি খাবারকে কীভাবে দেশীয় ফ্লেভার দেওয়া যায়। শুরু থেকেই সেটা করার চেষ্টা করেছি এবং আমরা বিশ্বাস করি, তা করতে পেরেছি। টেকআউটের বার্গারের বিশেষত্ব এটা।’
কলম্বোতে হরেক রকম স্বাদের বার্গার পরিবেশন করে ভোজনরসিকদের মন জয় করে চলেছে এটি। জনপ্রিয় আইটেমগুলোর মধ্যে রয়েছে বিফ চিজ ডিলাইট, বিফ চিজ বার্গার, চিকেন চিজ বার্গার, চিকেন চিজ ডিলাইট, ফ্রেঞ্চ ফ্রাইজ এবং নানান স্বাদের মিল্ক শেকস। নতুনের মধ্যে চিক গট ফ্রাইড বার্গারও জনপ্রিয়। খাবারের কোয়ালিটিতে কোনো ছাড় দিতে রাজি নয় টেকআউট টিম। এমনকি সেখানে কোনো খাবার নিয়ে ভ্যালিড অভিযোগ করলে সম্পূর্ণ পরিবর্তন করে দেওয়া হয়।
ফুড ডেলিভারি কোম্পানি ফুডপান্ডায় এদের সব খাবার পাওয়া যায়। এ ছাড়া টেকআউটের ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম পেজে আছে সরাসরি অর্ডার করার সুযোগ। নির্দিষ্ট হটলাইন নাম্বারে কল করলে নিজস্ব ডেলিভারি ম্যান খাবার পৌঁছে দেয়। সুযোগ থাকলে আউটলেটে ঘুরে আসা যায়। খাবার পরিবেশনে খুব একটা সময় নেয় না প্রতিষ্ঠানটি।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে ফাহিম কবির বলেন, ‘আমরা সব সময়ই নতুন স্বাদের খাবার আনার চেষ্টা করি। ঢাকায় ইতিমধ্যে আটটা শাখা চালু করেছি। পরিকল্পনা রয়েছে ঢাকার সর্বত্র আমাদের খাবার পৌঁছে দেওয়ার। এ ছাড়া ঢাকার বাইরে চট্টগ্রামে একটা শাখা রয়েছে। ইচ্ছা রয়েছে ঢাকার বাইরে বিভাগীয় শহরে আমাদের খাবার পৌঁছে দেওয়ার।’
গোলাম মোর্শেদ সীমান্ত
ছবি: টেকআউট কর্তৃপক্ষ