ফিচার I জিনস ফর হেভি বটম
মাথায় রাখতে হবে কতটা আরামদায়ক আর মানানসই। কাজটি সহজ নয়, যদিও রয়েছে যথেষ্ট অপশন
ছেলেদের জিনসের ধরন কিংবা ডিজাইনে রয়েছে বৈচিত্র্য। তবে বেছে নিতে হয় যা আরামদায়ক ও মানানসই। বিশেষত হেভি বটমের অধিকারী হলে একটু ঝক্কিতে পড়তে হয়। শরীরের নিচের অংশ বেশি প্রশস্ত হলে কিংবা পায়ে অধিক চর্বিযুক্ত পেশি থাকলে, তবে সে অনুযায়ী জিনস বেছে নিতে হবে।
শারীরিক গঠন অনুযায়ী জিনস বেছে নেওয়ার সময় দেখতে হবে, যাতে কোনোভাবেই সেটি খুব বেশি ঢোলা কিংবা টাইট ফিটেড না হয়। নইলে স্টাইল স্টেটমেন্ট হিসেবে এটি বেমানান লাগবে এবং অস্বস্তিকর হবে। হেভি বটমের অধিকারী হয়ে থাকলে টাইট ফিট কিংবা স্কিনি জিনস বেছে না নেওয়ার অনেক কারণ রয়েছে।
গায়ে লেগে থাকা স্কিনি জিনসকে বলতে হবে ‘নো’! এমনকি স্লিম ফিট জিনসও চলাফেরার সময় পায়ের স্বস্তি নষ্ট করতে পারে।
ফ্যাব্রিকের ঘষা খেয়ে পায়ে র্যাশ হতে পারে। তাই জিনসের সাইজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
ফ্যাব্রিক ভালো না হলে স্ট্রেচিংয়ের সময় টাইট জিনস ছিঁড়ে যেতে পারে, যেমন বসতে গেলে এমন আশঙ্কা থাকে।
টাইট জিনস ঊরুসন্ধিতে অতিরিক্ত ঘাম তৈরি করতে পারে, যা অস্বস্তিকর তো বটেই, এমনকি ত্বকের জন্যও ক্ষতিকর।
হেভি বটমের কারণে কোমরে স্কিনি জিনস ঠিকঠাক বসবে না।
এর পকেট ব্যবহারেও হতে হবে সমস্যার সম্মুখীন, হোক সেটা সামনের কিংবা পেছনের।
তবে হতাশ হওয়ার কিছু নেই! এগুলো ছাড়াও এমন অনেক ধরনের জিনস এখন ট্রেন্ডে উঠে এসেছে, যেগুলো খুব সহজেই বহন করা এবং স্টাইল স্টেটমেন্ট ধরে রাখা যায়।
রেগুলার ফিট
এ ধরনের জিনস প্রথম পছন্দ। দৈনন্দিন ব্যবহারের জন্য এগুলো খুব আরামদায়ক। এসব পা থেকে কোমর পর্যন্ত সমান্তরাল, যা ঊরুসন্ধির জন্য স্বস্তিকর। রেগুলার ফিট জিনসগুলো যেকোনো পরিস্থিতিতে অস্বস্তির হাত থেকে রক্ষা করবে। তাই হেভি বটমের জন্য কোনো চিন্তা ছাড়াই বেছে নেওয়া যেতে পারে রেগুলার ফিট জিনস।
রিল্যাক্সড ফিট
নাম দেখেই জিনসের ধরন হয়তো বোঝা যাচ্ছে। হেভি বটমের সঙ্গে ঊরুর অংশও মোটা হয়ে থাকলে বেছে নেওয়া যায় এগুলো। এসব জিনস হাঁটুর কাছেও একটু ঢিলেঢালা হয়ে থাকে, পরতে খুবই আরামদায়ক। এটি হিপ এবং ঊরুর চারপাশে পর্যাপ্ত জায়গা রাখে যাতে চলাফেরা কিংবা স্ট্রেচিংয়ে কোনো সমস্যা না হয়। রিল্যাক্সড ফিট জিনসগুলো সাধারণত বডি বিল্ডার কিংবা প্লাস সাইজের ছেলেদের বেশি ব্যবহার করতে দেখা যায়।
ব্যাগী ফিট
এই জিনসের ধরনও ঠিক এর নামের সঙ্গে মানানসই। ব্যাগী জিনসকে অনেকে লুজ ফিট নামেও চেনে। এগুলো পুরোটা খুব ঢোলাঢালা হয়, যা শরীরের ত্বককে শ্বাস নেওয়ার মতো স্থান করে দেয়। দীর্ঘ সময় জিনস পরে থাকার প্রয়োজন হলে এই ধরনের প্যান্ট রাখা যেতে পারে পছন্দের তালিকায়। কারণ, এগুলো ঊরু এবং হিপ শক্ত করে আঁকড়ে রাখে না। তবে এই প্যান্ট পরলে শরীর আরেকটু বড় দেখাবে। মানানসই হলে তবেই ব্যাগী জিনস বেছে নেওয়া যায়।
অ্যাথলেটিক ট্যাপারড ফিট
এখন জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছে। ট্যাপারড জিনসগুলো সাধারণত ওপরের দিকে একটু প্রশস্ত আর নিচের অংশ সংকীর্ণ ধাঁচের হয়ে থাকে। হেভি বটমের ক্ষেত্রে এগুলো আদর্শই বটে। এটি হিপের চারপাশে যথেষ্ট জায়গা রেখে চিকন হতে হতে হাঁটু থেকে গোড়ালি পর্যন্ত নেমে আসে। ফলে শরীরের আয়তন বড় দেখায় না। পাশাপাশি একটা সুন্দর স্টাইলিশ লুকও এনে দিতে পারে।
স্লিম স্ট্রেইট ফিট
ঊরুর দিকে একটু স্লিম ফিট ধাঁচের, তবে পায়ের দিকে সমান্তরাল। সব কটি কাটের মধ্যে এটি সবার শেষে রাখার কারণ, স্লিম ফিট কখনোই হেভি বটমড মানুষের জন্য আরামদায়ক নয়। তবে ঊরুর স্থানে কিছুটা অস্বস্তি মানিয়ে নিতে পারলে এই ধরনের জিনস পরে দেখা যেতে পারে। কোনো পার্টি কিংবা ক্যাজুয়াল মিটিংয়ের ক্ষেত্রে বেছে নেওয়া যায় এটি। তবে স্লিম স্ট্রেইট ফিট জিনস বেছে নিলে দৈর্ঘ্যরে চেয়ে একটু বড় সাইজের জিনস কেনা দরকার। এতে একটা স্লিম কাটও পাওয়া যাবে আর হিপ অঞ্চলের অস্বস্তি থেকে কিছুটা মুক্তি মিলবে।
কাস্টম ফিট
এই ফিট একটা উটকো ঝামেলা মনে হয় অনেকের কাছে। তবে ওপরের কোনো ধরনের জিনসই শরীরের গঠনের সঙ্গে না মানালে এটি সেরা বিকল্প। একটি কাস্টম মেইড জিনস শুধু ভালো ফিটই দেয় না, বিভিন্ন ডিজাইন নিয়ে কাজ করারও সুযোগ থাকে। জিনসে অন্য রকম ডিজাইন চাইলে সেটাও সম্ভব এর মাধ্যমে। এতে এমন একটি ফিট পাওয়া সম্ভব, যা কেবল আরামদায়কই নয়, এটি দেহের গঠনের পরিপূরকও হবে।
কিছু বোনাস টিপসও রয়েছে হেভি বটম আড়াল করার
স্কিনি ফিট আর সাইজ-আপ এড়িয়ে চলতে হবে।
স্বাভাবিকের থেকে এক সাইজ বাড়িয়ে জিনস কেনা জরুরি।
জিনসের কালারের সঙ্গে শার্ট কিংবা টি-শার্টের রঙে খুব বেশি কন্ট্রাস্ট করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
উজ্জ্বল রঙের জিনস না পরে অপেক্ষাকৃত গাঢ় রঙের বেছে নেওয়া দরকার।
জিনসের সঙ্গে বেল্টের রং মিলিয়ে পরা যেতে পারে।
বেল্ট খুব বেশি শক্ত করে না বাঁধাই ভালো। নইলে শরীরের নিচের অংশ আরও বড় দেখাতে পারে।
চেষ্টা করতে হবে ওয়ালেট কিংবা ফোন সামনের পকেটে রাখার।
বক্সার এড়িয়ে ট্রাংস ব্যবহার করা যেতে পারে। কারণ, এতে বটম আরও ভারী করে তুলতে পারে।
শিরীন অন্যা
ছবি: ইন্টারনেট