সম্পাদকীয়
সকালে কিচেন থেকে চায়ের গন্ধ ডাইনিংয়ে যখন ছড়িয়ে পড়ে, তখনই মনে হয়, দিনটা সত্যিই শুরু হলো। চিন্তা, ইচ্ছা, আকাঙ্ক্ষা, কর্ম— সবকিছু নিয়ে একটা নতুন দিন চিরচেনা ও সুখকর এক ঘ্রাণসমেত আমার সামনে এসে দাঁড়িয়েছে। আমি চা শুধু পান করি না, এর গন্ধের আস্বাদও গ্রহণ করি। অথচ এই পানীয়ে বাঙালির অভ্যস্ত হওয়ার বয়স বেশি দিনের নয়। একসময় শহুরেদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল এটি। এখন তো গ্রামগঞ্জ, হাটবাজার— সর্বত্র এর উপস্থিতি চোখে পড়ে। ঊর্ধ্বমুখী চাহিদার কারণে বাংলাদেশে দিন দিন বাড়ছে চা-বাগান আর উৎপাদন। একসময় পাহাড়ি এলাকায় চাষ হতো, এখন সমতলেও বিস্তৃত হয়েছে আবাদ।
ফলে ক্যানভাসের এবারের সংখ্যা চা নিয়ে। এই পানীয় ঘিরে যা কিছু, সেগুলোর প্রায় সবই অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। তাই কলেবরও বেড়েছে। এ সংখ্যার বিশেষত্ব হলো, চার বিভাগের জন্য চারটি পৃথক কভারস্টারি। দৃষ্টির তৃষ্ণায়, বিউ-টি বুস্টিং, চাঙা বাঙালি এবং লোকালয়ের বাইরে— এই চারটি শিরোনামে। এ ছাড়া সব বিভাগেই চা-সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ কিছু নিবন্ধ প্রকাশ করা হয়েছে। আলাপনে অংশ নিয়েছেন দেশের শীর্ষস্থানীয় টি ব্র্যান্ডের প্রধান নির্বাহী। তিনটি বিশেষ সাক্ষাৎকারও সন্নিবেশিত হয়েছে। গ্রিন টির কথা সবাই জানি, কিন্তু সাদা চায়ের খবর আমরা কজনই-বা রাখি? ডুয়ার্সের বাগান সেই চায়ের জন্য বিখ্যাত। সেখানে ভ্রমণের চমকপ্রদ অভিজ্ঞতা নিয়ে হাজির হলো এবারের ছুটিরঘণ্টা। জার্মান ফ্যাশন ডিজাইনার ক্যাথরিন ফন রেচেনবার্গের নাম যারা জানেন, তারা প্রায় হারিয়ে যাওয়া টি সিল্কের পুনরুত্থানের গল্প কোনো দিন ভুলবেন না। কেননা অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে এই ফ্যাব্রিকের পুনর্জন্মে যে বুদ্ধি, শ্রম ও সময় ব্যয় করেছিলেন তিনি, তা বস্ত্রের ইতিহাসে প্রাতঃস্মরণীয় হয়ে আছে। চা থেকে তৈরি পরিবেশবান্ধব সেই কাপড় কীভাবে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ল, তা নিয়ে রচিত নিবন্ধও এ সংখ্যায় মুদ্রিত হলো। এ ছাড়া বিভিন্ন বিভাগের নিয়মিত ফিচার তো থাকছেই। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। কাজেও আসবে। শুভকামনা রইল।