কভারস্টোরি I চা-চক্র: লোকালয়ের বাইরে
এ এক বিচ্ছিন্ন জীবন। সেখানে চাকচিক্য আর অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির আড়ালে বিপুল এক জনগোষ্ঠীর সুখ-দুঃখ ও হাসি-কান্নার স্পন্দন। পাহাড়ের ঢালে কিংবা উঁচু সমতলে নিরন্তর শ্রমের গল্প। মনোমুগ্ধকর নিসর্গের মধ্যে সেখানকার জীবন ও সংস্কৃতির রূপটি কেমন? জানিয়েছেন জাকিয়া সুলতানা
ধূমায়িত এক কাপ চা নিমেষেই চাঙা করে দেয়। কিন্তু কোথা থেকে এলো এমন জাদুকরি পানীয়টি? কেমনই-বা এর সঙ্গে জড়িত মানুষগুলোর জীবন?
চীনের অনুকরণেই পরীক্ষামূলক ভারতবর্ষের আসামে চা-চাষ শুরু করে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। এ অঞ্চলে চায়ের আবাদ শুরু হয় উনিশ শতকের মধ্যভাগে সিলেটের মালনীছড়ায়। ব্রিটিশরা তখন পুরো ভারতবর্ষ কবজা করে ফেলেছে। তাদের অর্থনীতি ও বাজার সম্প্রসারণে যেসব পণ্য লাভজনক ছিল, সেগুলোর মধ্যে চা-যুক্ত হয়। ব্রিটিশদের অধীনে নীলচাষিদের যে জীবন, নতুন উদ্ভূত চা-শ্রমিকদের অবস্থা তার চেয়ে মোটেও ভালো ছিল না। পার্থক্য একটাই, প্রথমটি সমতলে দ্বিতীয়টি পাহাড়ি এলাকায়। এমনিতেই স্থানিক প্রকৃতি ও পরিবেশ মানুষের জীবনের ওপর বিশেষভাবে প্রভাব বিস্তার করে। এর সঙ্গে উৎপাদনব্যবস্থাও প্রধান একটি নিয়ামক।
প্রচুর বৃষ্টিপাত হয় এমন পাহাড়ি বা উঁচু জমি চা-চাষের উপযোগী। পানিনিষ্কাশনের ব্যবস্থা থাকলে উঁচু সমতল উভয়েই এর চাষ সম্ভব। ১৭৫-২৫০ সেন্টিমিটার বৃৃষ্টিপাত, উষ্ণ, আর্দ্র এবং দো-আঁশ মাটিতে এটি বেশি ফলনশীল। বীজ থেকে এর চারা তৈরি করা হয় সমতল ভূমিতে। সেগুলো ২০ সেন্টিমিটার দীর্ঘ হলে পাহাড়ের ঢালুতে দেড় মিটার পরপর সারিবদ্ধভাবে লাগানো হয়। আগাছা পরিষ্কার, সার প্রয়োগ, প্রয়োজনীয় পানিনিষ্কাশনের ব্যবস্থা রেখে তিন থেকে পাঁচ বছর পরিচর্যার পর পাতা সংগ্রহের উপযোগী করে তোলা হয়। ১২০—১৩০ বছর উৎপাদন উপযোগী থাকে একটি গাছ। তবে ৮০-৮৫ বছর পর এর উৎপাদনক্ষমতা কমে যাওয়ায় আবার নতুন গাছ লাগাতে হয়। স্বাভাবিক নিয়মে এই গাছ বাড়তে দিলে ৩০-৪০ ফুট উঁচু হয়। কিন্তু পাতা তোলার সুবিধার্থে এবং ঝোপালো করার জন্য ছেঁটে দেওয়া হয়। প্রতিবছরের ডিসেম্বর-জানুয়ারির পর মাটিতে যখন আর্দ্রতা কমে যায়, তখন এটি করতে হয়। একবার পাতা তোলার সাত-আট দিন পর আবার নতুন পাতা তোলা যায়। গ্রীষ্ম ও বর্ষা হলো এর ভরা মৌসুম। বীজতলা তৈরি, আগাছা পরিষ্কার, গাছ রোপণ, সার প্রয়োগ, ড্রেনেজ ব্যবস্থা, গাছ ছাঁটা, পাতা চয়ন, পাতা সংগ্রহ, তৈরি প্রক্রিয়া সম্পাদন, গ্রেড নির্ধারণ, প্যাকিং ইত্যাদি কর্মকা-ে দক্ষ-অদক্ষ অসংখ্য শ্রমিক নিয়োজিত থাকেন।
সমাজের সব পেশার শ্রমিকেরা চাহিদার কাছাকাছি মজুরি পেলেও চা-শ্রমিকেরা এই শুরু থেকেই উপেক্ষিত। ২০০৭ সালে শ্রমিকদের মজুরি ছিল ৩২ টাকা। ২০০৯ বাড়িয়ে করা হয় ৪৮। ২০১৩-তে ৬৯ টাকা, এরপর ৮৫, সম্প্রতি ১২০ টাকা মজুরির খসড়া অনুমোদিত হয়েছে। এর বাইরে আবাসন, ভর্তুকি মূল্যে সপ্তাহে তিন কেজি চাল বা আটা, বছরে দুটি উৎসব ভাতাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নির্ধারিত আছে। সময়ের পরিবর্তনে কিছু নিয়ম বদলে হচ্ছে। যেমন আগে সপ্তাহে এক দিনের ছুটি ছিল উইদাউট পে, এখন সেটাকে উইথ পে করা হয়েছে। প্রতিবছর মজুরি বাড়ানোর নিয়ম থাকলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তা মানা হয় না।
ন্যায্য মজুরি, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, আবাসন, সুপেয় জল, স্যানিটেশনসহ অন্যান্য মৌলিক অধিকার থেকে বাগানের শ্রমিকেরা বঞ্চিত। অথচ চা-শিল্প উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে তারা বংশপরম্পরায়। চা বোর্ডের নিবন্ধিত ১৬৭টি বাগানে প্রায় দেড় লাখ শ্রমিক কাজ করেন। দেশের একটি বড় রপ্তানি খাতের চাকা চালু রাখলেও তাদের জীবনের পথ কঠিন আর বঞ্চনায় ভরা।
বাগানের অন্যান্য কাজ পুরুষ শ্রমিকেরা করলেও পিঠে ঝুড়ি বেঁধে পাতা বা কুঁড়ি তোলার সূক্ষ্ম কাজটি দক্ষতার সঙ্গে করে নারী শ্রমিকেরা। সবুজ চায়ের বুকে ‘দুটি পাতা একটি কুঁড়ি’ তোলার দৃশ্যে যতটা মুগ্ধ হই আমরা, দিনের পর দিন মাসের পর মাস পাহাড়ের ঢালে দাঁড়িয়ে রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে চা-পাতা তোলার গল্পটা তত আনন্দদায়ক নয়। মাঝেমাঝে অল্পসংখ্যক ট্রি শেড ছাড়া বাগানে বা আশপাশে অন্য কোনো গাছ থাকে না। তাই সকাল নয়টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজেই কাজ করতে হয় শ্রমিকদের। তাদের শ্রমের জায়গায় নেই শৌচাগার, চা-গাছের আড়ালেই সারতে হয় প্রাকৃতিক কাজ। কখনোবা দীর্ঘক্ষণ আটকে রাখতে হয় প্রস্রাব-পায়খানা। এতে স্বাস্থ্যঝুঁকি বেড়ে যায় বহুগুণে।
শ্রমিকদের সন্তানদের লেখাপড়া শেখার তেমন কোনো সুব্যবস্থা নেই এখানে। অপ্রতুল স্কুল যা-ও আছে; বাগানের অলিগলি, উঁচু-নিচু টিলা পার হওয়া অনিরাপদ বলে অনেক বাবা-মা বাচ্চাদের পাঠাতে চান না সেখানে। প্রাথমিক শিক্ষার খরচ কোম্পানি থেকে বহন করার কথা। কিন্তু বই, খাতা, কলম কিছুই ঠিকঠাক পায় না তারা। ফলে শৈশবেই সন্তানদের বাগানের কাজে লাগিয়ে দিচ্ছে তাদের অনেকেই। পাবলিক পরীক্ষায় কেউ পাস করলে তাকে শ্রমিকদের ঊর্ধ্বতন কোনো পদে বাগানেই চাকরি দেওয়া হয়। ‘বাবু’ বলে সম্মোধনও করে তাকে। এ বিষয়ে একটি গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, ‘আসলে চা-বাগানের মালিকেরা কখনোই চান না যে শ্রমিকেরা বা তাদের সন্তানেরা শিক্ষিত সচেতন হয়ে উঠুক। কারণ, তা হলে মালিকেরা এত অল্প মজুরিতে তাদের খাটাতে পারবে না। বাইরে এই দামে কোনো শ্রমিকও পাবে না। তাই এটি মালিকদের একধরনের কৌশল। মানে, শ্রমিক আটকে রাখার কৌশল হিসেবেই তারা শ্রমিক শ্রেণিকে শিক্ষিত হতে দিচ্ছে না বা দেবে না।’
একদিকে অর্ধাহারে-অনাহারে ভুগে কাটছে এদের জীবন। অন্যদিকে তাদের সীমানায় নেই সরকারি হাসপাতাল। বাগানমালিক পরিচালিত স্বাস্থ্য বিভাগ থাকলেও এর পরিষেবা খুবই সীমিত। কখনো সরকারি হাসপাতালে যাওয়ার প্রয়োজন হলেও মজুরি হারানোর ভয়ে রোগ চেপে থাকে শ্রমিকেরা। ফলে, অসুস্থ শরীর নিয়েই দিনের পর দিন কাজ করতে হয় তাদের। অভিজ্ঞ বা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ধাত্রী না থাকায় চা-বাগানগুলোতে শিশুমৃত্যুর হার বেশি। ঝোপালো গাছের মধ্যে কাজ করতে গিয়ে অনেক সময় হাত-পা-কোমর ছিলে যায়, আর বিষাক্ত পোকামাকড়ের কামড়ও খেতে হয়।
সকালে একমুঠো ভাত চা—গাছের কচিপাতা কুচিয়ে ভেজে বা লবণ দিয়ে খেয়ে দল বেঁধে বাগানে আসে শ্রমিকেরা। কখনোবা, একমুঠো চাল ভাজা বা দুটো রুটি। দিন শেষে হাতে পায় ১২০ টাকা। হাজিরা ঠিক রাখতে বাগানভেদে তুলতে হয় ২০-২৫ কেজি পাতা। বা ২৫০টি গাছ ছাঁটা অথবা এক একর জমিতে কীটনাশক ছিটাতে হয় তাদের। দুপুরে আলুভাজা, চায়ের পাতার চাটনি দিয়ে ভাত বা কাঁচা মরিচ, মুড়ি-চিড়া। কাজ শেষে তিন থেকে পাঁচ কিলোমিটার হেঁটে এসে কারখানায় পাতা মেপে জমা দিতে হয়। নির্দিষ্ট পরিমাণের কম হলে হাজিরা থেকে টাকা কাটা যায়। একটু ভালো থাকার জন্য বা একটু বেশি পয়সার আশায় অনেক শ্রমিক নির্ধারিত হিসাবের বেশি কাজ করেন। কেউ কেউ গোপনে বাগানের বাইরেও কাজ করেন। তাতে আরও বেশি স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়তে হয় তাদের। কুঁড়ির খোঁজ করতে করতেই অস্ত যায় সূর্য, দিন শেষে শ্রমিকদের ফিরতে হচ্ছে কোম্পানির নির্ধারিত ৭ ফিট বাই ২৫ ফুট অস্বাস্থ্যকর ঘরে। যেখানে দুজন মানুষ থাকার উপযোগী নয়, এমন ঝুপড়িঘরে বাচ্চা-কাচ্চা নিয়ে পরিবারের ছয়-সাতজনের বাস। প্রতিবছর শ্রমিকদের গৃহ নির্মাণের চুক্তিপত্র থাকলেও সেটা বাস্তবায়ন হয়ে ওঠে না। বংশানুক্রমে শত বছর ধরে বাগানের জমিতে বসবাস করেও মালিক হতে পারে না। মধ্যযুগের ভূমিদাসের মতোই চা-বাগানের মালিকেরাই নির্ধারণ করে রেখেছে তাদের নিয়তি। ঘরে ফিরে আবার গৃহের কাজ, রাতের খাবারেও সেই একই মেনু। অর্ধাহারে-অনাহারে যাদের বাস, শিক্ষা-স্বাস্থ্য নিয়ে ভাবনা সেখানে বিলাসিতারই নামান্তর। বহুকাল ধরে নিরক্ষরতা, নিপীড়ন, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বঞ্চনার মধ্যে দিয়ে জীবন যাপন করে আসছে তারা। এবং দেশের অন্যান্য জনগোষ্ঠীর তুলনায় চা-শ্রমিকেরা সব দিক দিয়ে রয়েছে পিছিয়ে।
এই শ্রমিকশ্রেণির রয়েছে নিজস্ব সংস্কৃতি ও জীবনাচার। কিন্তু দারিদ্র্য, অসচেতনতা এবং বিচ্ছিন্নভাবে বাগানগুলোতে বসবাসের কারণে তাদের আত্মপরিচয় বিপন্ন। অন্যদিকে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের অনুপ্রবেশের ফলে সেই সংকট আরও ত্বরান্বিত হচ্ছে। তারা হয়ে পড়ছে কেবল চা-শ্রমিক বা কুলি। অন্য কোনো পরিচয়ে তাদের চিহ্নিত করার উপায় থাকছে না। উল্লেখ্য, চা-শ্রমিকদের বড় একটা অংশ মুন্ডা ভাষাভাষী। ভাষার আগ্রাসনের ফলে তাদের কথাবার্তায়ও ঢুকে পড়েছে বহু বাংলা শব্দ। এমনকি এ প্রজন্মের অনেকেই তাদের নিজের ঐতিহ্য ও কৃষ্টি ভুলে গেছে। গবেষকদের মতে, আর্থসামাজিক অবস্থা এমন এক পর্যায়ে গেছে, এখন অনেকে তাদের আত্মপরিচয় যেমন ভুলছেন, তেমনি কেউ কেউ আত্মপরিচয় গোপনও করছেন, বাধ্য হয়েই। কারণ, আদিবাসী চা-জনগোষ্ঠীর মানুষ সমাজের মূলস্রোত থেকে বিচ্ছিন্ন। তারা সংখ্যালঘু ও বিচ্ছিন্ন হওয়ায় এবং সমাজের মানুষ তাদের খাটো করে দেখার জন্য তারা নিজেদের পরিচয় গোপন রাখেন।
চা-শ্রমিকদের মধ্যে বিভিন্ন জনগোষ্ঠী রয়েছে। এদের যেমন আছে নিজস্ব ভাষা, তেমনি পৃথক সংস্কৃতি। অনেক উৎসবের মধ্যে মাত্র দুটিতে চা-বাগানের মানুষেরা অংশগ্রহণের সুযোগ পায়। দুর্গাপূজা ও রঙের উৎসব ‘ফাগুয়া’। ফাল্গুনের শেষ সপ্তাহে বা চৈত্রের পূর্ণিমার প্রথম তিথিতে দ্বিতীয়টি অনুষ্ঠিত হয়। ওই উৎসব ঘিরে সবাই একসঙ্গে মেতে ওঠে রঙের খেলায়। এটিকে কেন্দ্র করেই শ্রমিকদের ছন্দহীন জীবনে আনন্দের জোয়ার আসে। এবং এক মাস আগেই শুরু হয় সেই মহড়া। এ সময় দুই দিনের ছুটিও দেওয়া হয় চা-বাগানগুলোতে। ব্যবস্থাপক, অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ স্থানীয় ব্যক্তিদের নিয়ে প্রতিটি বাগানেই আলাদাভাবে আয়োজিত হয় এটি। শুধু রঙের হোলিই নয়, এখানে তুলে ধরা হয় বিভিন্ন ক্ষুদ্র জনজাতির নানা সাংস্কৃতিক রূপ ও রীতি। পরিবেশিত হয় বিচিত্র নৃত্য, গীত ও বিরহা। শুধু চা-শ্রমিক বা তাদের পরিবারই নয়, অন্যান্য ভাষা-সংস্কৃতির মানুষও মেতে ওঠে এতে। উৎসব-পরবর্তী বাগানে এর রেশ থাকে আরও প্রায় ১৫ দিন।
চা-বাগানের এসব জমি সরকারের খাসজমি। সামান্য অর্থে লিজ নিয়ে সস্তায় বাগান করে মালিকেরা। ভর্তুকি মূল্যে সার পায়, সহজ শর্তে স্বল্প সুদে ঋণও বরাদ্দ থাকে তাদের জন্য। কিন্তু শ্রমিকেরা কী পায়? পরিত্যক্ত জমিতে শ্রম-ঘাম ঝরিয়ে মূল্যবান চা উৎপাদন করে যাচ্ছে এরা। এবং পৃথিবীর ২৫টি দেশে রপ্তানিও করা হয়। এরপরও সব নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত তাদের পরিবার।
ব্রিটিশদের রেখে যাওয়া সেই বাংলোবাড়ির আদলেই এখনো গড়ে উঠছে ব্যবস্থাপকদের সুবিশাল থাকার জায়গা। বয়, বেয়ারা, মালি নিয়োজিত থাকে তাদের গৃহ পরিচালনার কাজে। ব্যবস্থাপকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ব্রিটিশদের মতো শর্টস, ক্যাপ আর বুট পরেই যেতে হয় কাজে। শ্রমিকদের ভাষার ব্যবহার দেখলে মনে হবে এখনো ব্রিটিশ শাসনামল চলছে। যেমন ব্যবস্থাপককে ডাকেন ‘বড় বাবু’, তার সহকারীকে ‘ছোট বাবু’। বাসার কাজের লোকদের ‘বেয়ারা’। এ ছাড়া কেউ বেড়াতে গেলে তাকে ‘সাহেব’ ডাকেন শ্রমিকেরা। চা-বাগানগুলো সাধারণত শহর কিংবা লোকালয়ের বাইরে থাকায় দেশের মূল জনগোষ্ঠীর সঙ্গে তাদের সামাজিক যোগাযোগ তেমন থাকে না। বাইরে ব্রিটিশদের রেখে যাওয়া জীবনধারার চাকচিক্য ভেতরে দরিদ্র অপুষ্টি আর অজ্ঞতায় জরাজীর্ণ এক বিপুল জনগোষ্ঠী।
তবে অবস্থার পরিবর্তন ঘটেছে। কোথাও কোথাও ব্রিটিশদের রেখে যাওয়া আইন ও প্রথার সংস্কার হয়েছে। শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নে কর্তৃপক্ষ আজকাল মনোযোগ দিচ্ছে। চিকিৎসা, শিক্ষা, বাসস্থান ইত্যাদি বিষয়ে নজর রাখা হচ্ছে। পরিবেশবান্ধব জীবনধারা গড়ে তোলা ও রক্ষায় বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে জানা যায়।
মডেল: তানিয়া
মেকওভার: পারসোনা
ওয়্যারড্রোব: কস্টিউমিয়ার বাই যুবাইদা আহবাব
আইওয়্যার: মুক্তা
ছবি: ইভান সরদার ও সংগ্রহ