ফিচার I ডলফিন স্কিন
সামার লুকে এটাই এখন ট্রেন্ডি। চকচকে ভেজা আর উজ্জ্বল। কিন্তু কীভাবে?
উজ্জ্বল ও স্নিগ্ধ ত্বক পেতে সৌন্দর্যপ্রেমীরা প্রায় সবকিছুই করতে চায়। লক্ষ্য থাকে নিত্যনতুন ট্রেন্ডের দিকে। বিশেষত সুপারমডেল ও মেকআপ আর্টিস্টের চর্র্চিত কৌশলের প্রতি আগ্রহ দেখা যায়।
এখন বিভিন্ন বিউটি ব্লগজুড়ে চলছে চকচকে উজ্জ্বল ত্বকের ট্রেন্ড, যার প্রেরণা এসেছে ডলফিন থেকে।
এর নামকরণ হয়েছে ‘আইকনিক লন্ডন’র অ্যাম্বাসেডর মেকআপ আর্টিস্ট মেরি ফিলিপসের নামে। যিনি এই ট্রেন্ডের জন্ম দিয়েছিলেন। ডলফিন স্কিন বুঝতে একটু কল্পনার আশ্রয় নিতে হবে। যেমন জলে ডুব দেওয়ার পর মুখটা চকচকে, সানকিসড ও কিছুটা পিচ্ছিল হয়ে থাকা। অনেকটা গ্লাস স্কিনের মতোই— সুপার রেডিয়েন্ট, মসৃণ, লুমিনাস। এমন ত্বক পাওয়াটা স্কিন কেয়ার রুটিনের ওপর নির্ভরশীল। তবে কৌশলে হাইলাইটার ব্যবহার করেও এমনটি পাওয়া সম্ভব। কিছুটা ওয়েট লুক বলে এটি দিতে পারে নিখুঁত সামার ভাইব। কেননা এ সময় ঘাম এড়ানো প্রায় অসম্ভব।
ব্রণ-প্রবণ ত্বক সত্যিকার অর্থে কখনো গ্লাসস্কিন লেভেলে পৌঁছাতে পারে না। তাই বলে ডলফিন স্কিন নিরীক্ষায় কেউ পিছপা হতে রাজি নয়।
ত্বকের প্রস্তুতি
এই লুকের জন্য চাই বিশেষ রকম মেকআপ। তবে প্রস্তুতি তো লাগবেই। ন্যাচারাল স্কিন এই স্নিগ্ধ, হাইপার-রেডিয়েন্ট লুক পাওয়ার ভিত্তি। যদি রূপ রুটিন মানতে আলসেমি লাগে, তাহলে রয়েছে কিছু তাৎক্ষণিক সমাধান, যেগুলো গ্লোয়িং মেকআপের উপকরণগুলো প্রয়োগের আগে ব্যবহারযোগ্য।
প্রথমে ত্বকের উজ্জ্বলতা এবং দীপ্তি এক্সফোলিয়েটিংয়ের মাধ্যমে বাড়িয়ে তুলতে হবে এ ক্ষেত্রে। অনেক সৌন্দর্যবিশেষজ্ঞ কেমিক্যাল এক্সফোলিয়েশনের জন্য পিল প্যাড আর ফিজিক্যাল এক্সফোলিয়েশনের জন্য নাবি ক্লথ ব্যবহারের পরামর্শ দেন। এক্সফোলিয়েট করার আরেকটি উপায় হলো ডার্মাফ্ল্যাশের মতো ডার্মাপ্ল্যানিং ডিভাইস ব্যবহার করা। এতে পিচ ফাজ দূর হয়, পাশাপাশি মৃত ত্বক কোষের পুরোনো স্তর রিমুভ হয়। ফ্ললেস মুখত্বক তৈরির এটি একটি সহজ ও কার্যকর হোম সলিউশন। এতে ত্বক দীপ্তি ছড়ায়।
এক্সফোলিয়েট করার পর একটি হাইড্রেটিং মাস্ক ব্যবহার জরুরি। সবশেষে মাখতে হবে ড্রাই অয়েল, যাতে তেল চিটচিটে ভাব থাকবে না, কিন্তু বজায় থাকবে আর্দ্রতা।
বেজ তৈরি
এই লুকের সেরাটা তখনই পাওয়া যাবে, যখন ত্বক প্রস্তুতির রুটিন ধারাবাহিকভাবে ফলো করা যায়। হাইড্রেটিং ও লুমিনাস ফিনিশযুক্ত প্রডাক্ট ব্যবহার ভালো। তেলের মতো হাইপার-রেডিয়েন্ট হাইলাইটিং প্রডাক্ট দিয়ে আরও ভালো লুক আসে।
প্রস্তুতির পর ফাউন্ডেশন লাগিয়ে নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে ত্বক উজ্জ্বল রাখাটা ভালো। শিশিরসিক্ত লুকের জন্য লুমিনাস প্রাইমার ও ফাউন্ডেশন ব্যবহার করা যায়। কিন্তু অয়েলি স্কিন হলে ম্যাট ফাউন্ডেশন ব্যবহার করে পরে কৌশলে গ্লো অ্যাড করে নিলে ত্বক তেল চিটচিটে হবে না।
গেট ওয়েট
এবার ডলফিন ডিউ যোগ করে নেওয়ার পালা। শাইনি লুক তৈরির জন্য টার্গেট এরিয়ায় দ্যুতি তৈরি করতে হবে। এ ক্ষেত্রে মুখাবয়বের সব ন্যাচারাল হাই পয়েন্ট চকচকে হলে বেশ সুন্দর দেখায়। যেমন নাকের ব্রিজ, দুই ব্রাওয়ের মধ্যখানে, ব্রাওবোন, টেম্পল, চিকবোনের ওপর ও চিবুক। তবে নাক ও কপালের চারপাশ গ্লো করা থেকে বিরত থাকা ভালো।
পণ্য বাছাইয়ের সময় মনে রাখতে হবে, এটি পুরোটাই ওয়েট লুক আর ন্যাচারাল শাইন দেয় কি না। সে ক্ষেত্রে গ্লিটারি সবকিছুই বাদ দিতে হবে। ডিউই বাম ও ক্রিমি প্রডাক্টে তো বটেই। ক্রিম বা পাউডার দিয়ে শুরু করা যায়। এখানে সিক্রেটটি হলো উঁচু জায়গাগুলোতে একটি ক্রিস্টাল ক্লিয়ার বাম বা গ্লস লাগিয়ে নেওয়া। ব্যস, হয়ে গেল গ্লোয়িং ডলফিন স্কিন।
তাসমিন আহমেদ
মডেল: আরনিরা
মেকওভার: পারসোনা
ছবি: তানভীর খান