ফিচার I চুমুকধারায়
চাই ক্ল্যাসিক ও স্টাইলিশ লুক। সময় ও পরিবেশ মেনে। পরতে আরামদায়ক হতে হবে
আমেরিকায় হাই টি ফ্যাশন মানে চমৎকার একটি বিকেল। তবে এই নয় যে এ সময়টিতে অলংকৃত বা ফ্যান্সি—কোন পোশাক পরতে হবে। জেনে নেওয়া যাক এ উপলক্ষে ঠিকঠাক পোশাক নির্বাচনের উপায়—
প্রথমেই নিতে হবে ফ্যাশনেবল একটি পোশাক। যা হাই টি-এর পরিচয়বাহী। স্টাইলিশ, আরামদায়ক ও ফ্যাশনেবল। পোশাক বাছাইয়ের সময় এমন একটি প্যাটার্ন নিতে হবে, যা ফ্ল্যাটারিং ও নজরকাড়া। তবে চোখ ধাঁধিয়ে যাবে, এমন কিছু থেকে দূরে থাকাই ভালো। এ ক্ষেত্রে রংও গুরুত্বপূর্ণ। তাই সেই শেড বেছে নিতে হবে, যা স্কিন টোনের সঙ্গে মানিয়ে যায়।
হাই নেকলাইন ও ফ্লেয়ার্ড হেম
এ ধরনের পোশাক হতে পারে হাই টি পার্টিতে পরার জন্য আরামদায়ক অপশন। ফিগার-হাগিং ডিজাইনের বদলে বেছে নিতে হবে ফ্লেয়ার্ড হেমের সুন্দর ও আরামদায়ক পোশাক।
টি ড্রেস
এর হেমলাইনের কথা বলতেই হয়, যা গোড়ালির ওপরে ও হাঁটুর নিচে পড়ে। ছোট বা লম্বা স্লিভ যেমনই হোক না কেন, আরও ফ্যাশনেবল ও এলিগ্যান্ট দেখানোর জন্য একটি কুইল্টেড ক্রস-বডি ব্যাগ সঙ্গে নেওয়া যায়।
লং ম্যাক্সি ড্রেস
এমন অকেশনের জন্য বেশ জুতসই হতে পারে। এটি অনায়াসে শিক দেখানোটা নিশ্চিত করে। স্ট্র্যাপলেস সামার ড্রেসে অস্বস্তি হলে এর সঙ্গে ম্যাচিং কার্ডিগান বা কটি জড়িয়ে নেওয়া যায়।
বিবেচ্য রং
এমন রং বেছে নিতে হবে, যা আয়োজনে মানানসই। নিজের সঙ্গেও। টিল, সবুজ, বেরি, সফট রোজ, ভায়োলেট। কালো, সাদার শেডগুলোও মানানসই। তবে এই কালারগুলো কিছুটা অনমনীয় দেখাতে পারে। সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।
ফেমিনিন স্কার্ট
অলংকৃত ট্যাংক টপস এবং প্রিন্টেড ব্লাউজের সঙ্গে সুন্দর মানিয়ে যায়। সাধারণ নিয়ম হলো এটি নিশ্চিত করা যে স্কার্ট যেন হাঁটুতে বা হাঁটুর নিচে থাকে পারফেক্ট।
টেইলার্ড পেনসিল স্কার্ট
এই অকেশনে বেশ ভালোভাবে মানিয়ে যায়। কারণ, এগুলো সাধারণত ফরমাল হিসেবে বিবেচিত। নিরাপদ ও বাস্তবসম্মত অপশন হলো একটি নজরকাড়া ফ্লেয়ার্ড হেমের প্রিন্টেড স্কার্টের সঙ্গে কালো শার্ট, ব্লাউজ বা ক্যামি পরে নেওয়া। স্টেটমেন্ট তৈরির জন্য।
ফ্লোয়িং ম্যাক্সি স্কার্ট
নান্দনিকতার জন্য বেছে নেওয়া যায় রোম্যান্টিক রাফেলস বা স্যাসি স্লিটের লম্বা ফ্রি-ফ্লোয়িং ম্যাক্সি স্কার্ট। রঙের ক্ষেত্রে মিউটেড প্লেইন ভার্সনের মধ্য থাকা ভালো, যা উজ্জ্বল রঙা ব্লাউজ বা প্যাটার্নড টপের সঙ্গে স্টাইল করে নেওয়া যায় ক্ল্যাসিক, পরিমার্জিত লুকের জন্য। নিউট্রালের সঙ্গেও জোড় বাঁধা যায়।
পরা যায় প্যান্ট
হাই টিতে প্যান্ট পরাতে কোনো দোষ নেই। শুধু বেছে নিতে হবে সঠিকটি। এড়িয়ে যেতে হবে হাফপ্যান্ট ও প্যান্টের ক্রপড ভার্সন। ঋতুর বিষয়টিও মাথায় রাখা চাই। হাই টি-এর জন্য সব প্যান্ট এমন মাপে তৈরি করতে হবে, যাতে এর ঠিকঠাক ইমপ্রেশন বজায় থাকে। কালার ও ফ্যাব্রিক ঋতুর সঙ্গে মানানসই হওয়া প্রয়োজন। উষ্ণ মাসগুলোতে লিনেন ও পশমের মতো ভারী কাপড় ঠান্ডার সময় পরতে হয়।
অনেকেই হাই টিতে জিনস পরবেন কি না, তা নিয়ে দ্বিধায় ভোগেন। এটি পরা যাবে না, এমন কোনো নিয়ম নেই; বিশেষ করে যদি ডার্ক কালারের হয় বা তৈরিতে ভিন্নতা থাকে। তবে খেয়াল রাখতে হবে, হাই টি-এর জন্য পোশাক নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে কিনা। সে ক্ষেত্রে অবস্থানগত পরিবেশ বিবেচনা করতে হবে।
উদ্দেশ্য হলো, চা পানের সময় যেন নিজেকে পরিপাটি, পলিশড ও স্বচ্ছন্দ দেখায়। পোশাক ও অ্যাকসেসরিজ নির্বাচনে স্থান, পরিবেশ, সময় সব মাথায় রাখতে হবে।
জুয়েলারিকে কখনো না বলা যায় না, তবে একবারে অনেক আইটেম পরা ঠিক নয়। একটি আকর্ষণীয় নেকলেস সুন্দর আউটফিটের অংশ হিসেবে উপস্থাপিত হতে পারে। তেমনি ব্রেসলেট ও কানের ছোট দুল। নেকলেস, ইয়াররিং ও ব্রেসলেট যদি পরা হয়ে যায়, তাহলে টি রুমে যাওয়ার আগে অন্তত একটি আইটেম খুলে রাখা ভালো।
জুতা
হাই টি-এর জন্য স্নিকার এড়িয়ে যাওয়া ভালো, তার বদলে বেছে নেওয়া যায় ক্ল্যাসিক ব্যালে ফ্ল্যাট। হিল পছন্দনীয় হলে, স্টিলেটো বাদ দিয়ে স্ট্যাকড স্টাইলেরগুলো বেছে নেওয়া ভালো। এক জোড়া প্রিটি স্যান্ডেলও মানানসই। এটি পোশাকের সৌন্দর্য বাড়ায়।
অবশ্যই রিল্যাক্স ও আনন্দে থাকা চাই। হাই টি একটি স্পেশাল অকেশন, যা শিগগিরই ভুলে যাওয়ার নয়। তাই এমন পোশাক ও অনুষঙ্গ বেছে নিতে হবে, যা মানানসই। সেই আউটফিট নির্বাচন করা উচিত, যা উপস্থিতিকে স্মরণীয় করে তুলবে।
তাসমিন আহমেদ
মডেল: মিলা ও ইফা
মেকওভার: পারসোনা
ওয়্যারড্রোব: আইকনিক ফ্যাশন গ্যারেজ
ছবি: তানভীর খান