সম্পাদকীয়
গত সংখ্যায় নারীচরিতাসু শিরোনামে আমরা পোর্টফোলিও প্রকাশ করেছিলাম। পৌরাণিক তথ্য অনুযায়ী পদ্মিনী, হস্তিনী, চিত্রিণী ও শঙ্খিনী—এই চার রকমের নারী তাতে উপস্থাপন করা হয়েছিল। উল্লেখ্য, দেহকাঠামো এবং বৈশিষ্ট্যের ওপর ভিত্তি করে এই বিভাজন ঘটেছে। কবি ভারতচন্দ্র রায়গুণাকরের রচনায়ও এর বর্ণনা আছে। কিন্তু সংখ্যাটি প্রকাশের পর লক্ষ করেছি, কেউ কেউ এ নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন। পক্ষে ও বিপক্ষে আলোচনা হয়েছে। বেশ কয়েকজনের অভিযোগ, ক্যানভাসের পোর্টফোলিওতে নারীর অবমাননা হয়েছে, বডি শেইমিংয়ের মধ্য দিয়ে।
আমি বরং খুশিই হয়েছি এই ভেবে যে বাংলাদেশের নারীরা বেশ সজাগ এবং তাদের সচেতনতা আমাদের আয়োজনকে স্পর্শ করেছে। কিন্তু আমার ধারণা, বিষয়টি তারা কিছুটা ভুলভাবে নিয়েছেন। বডি শেইমিংয়ের বিরুদ্ধে আমার অবস্থান সব সময়ই পরিষ্কার। এখন বরং দেখতে পাচ্ছি, নারীর মনোভাব সেই জায়গায় নেই— দেহকাঠামোর চেয়েও মনের সৌন্দর্য সৃষ্টিশীলতা ও বুদ্ধিমত্তা বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে তাদের কাছে। বলছি না যে, শারীরিক গড়ন গুরুত্বহীন। অন্যদিকে বিশ্বব্যাপী প্লাস সাইজের মেয়েরাও মডেলিংয়ে প্রবেশ করছে, যা একসময় ভাবাই যেত না। আমি মনে করি, এমন পরিবর্তন ইতিবাচক। বৈচিত্র্যের এই পৃথিবীতে শেষ পর্যন্ত সবই সুন্দর। আমরা পুরাণ ও মধ্যযুগের বাংলা কাব্য মেনে নারীর সৌন্দর্য তুলে ধরতে চেয়েছি। যারা আমাদের মডেল হিসেবে উপস্থাপিত হয়েছেন, তারা আনন্দের সঙ্গে পোর্টফোলিও শুটিংয়ে অংশ নিয়েছেন। তাদের স্বতঃস্ফূর্ততা ছিল উৎসাহব্যঞ্জক।
প্রতিবারের মতো নভেম্বর মানেই ক্যানভাসের ব্রাইডাল ইস্যু। তা সাজানো হয় বিয়ের বিভিন্ন বিষয়-আশয় দিয়ে। কিন্তু কোনোটি আগের মতো নয়। এবারে তো আরেকটু আলাদা ও নতুন। কেননা অতিমারির সংকটকাল পেরিয়ে বিয়ের এই মৌসুম আবার জেগে উঠছে নতুন উদ্দীপনায়, আশা ও প্রেরণায়। জীবনের প্রতি অপার আকাক্সক্ষা ও ভালোবাসা নিয়ে। আমার প্রত্যাশা, আপনাদের ভালো লাগবে।
নবদম্পতিদের অভিনন্দন। সবাইকে শুভেচ্ছা।