ফিচার I বিটিআই-এর ব্যতিক্রমী উদ্যোগ
আমরা শহরের মানুষেরা ক্রমেই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছি আত্মীয়, বন্ধুবান্ধব, প্রতিবেশীদের থেকেও। একই বাড়িতে বাস করে আমরা প্রতিবেশীর কোনো খবর জানি না। যখন কেউ বিপদে পড়বে, তখন কিন্তু সবার আগে প্রতিবেশীরাই এগিয়ে আসবে। যান্ত্রিক জীবনে নিজের জন্য প্রতিবেশীদের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলা সম্ভব। একসঙ্গে থেকে একটি কমিউনিটি গড়ে তোলা সম্ভব। আর এই সুযোগ করে দিচ্ছে দেশের শীর্ষস্থানীয় রিয়েল এস্টেট প্রতিষ্ঠান বিল্ডিং টেকনোলজি অ্যান্ড আইডিয়াস লিমিটেড (বিটিআই)। তারা এই নতুন উদ্যোগের নাম দিয়েছে বিটিআই ওয়েলনেস কমিউনিটিজ। ঢাকার উত্তরখান, ইসিবি চত্বর ও মিরপুর ডিওএইচএস রোড; উত্তরার দিয়াবাড়ি, ১০ নম্বর সেক্টর ও মাদানি অ্যাভিনিউ (১০০ ফুট রোড) এবং চট্টগ্রামে একটি (জালালাবাদ, খুলশী) প্রকল্পের কাজ চলছে।
বিটিআইয়ের নির্বাহী পরিচালক (ব্র্যান্ড মার্কেটিং) আয়েশা সিদ্দিকা বলেন, সব সময়ই আমরা ক্রেতাদের সুবিধার বিষয়কে গুরুত্ব দিই। চেষ্টা করি, ক্রেতারা যেন সন্তুষ্ট থাকেন এবং তাদের জন্য আরও কী করা যায়, সেই ভাবনাটাই থাকে সব সময়। করোনাকালীন সবাই পুরোপুরি গৃহবন্দি ছিলাম। সে সময় আমরা চিন্তা করি, ক্রেতাদের এই রকম সংকটে কোন ধরনের বিশেষ সেবা দেওয়া যায়।
তিনি আরও বলেন, আমরা মনে করি, এমন আবাসনব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে; যেখানে বাড়ির ভেতরেই সব সুবিধা থাকবে। বিটিআই এর নামকরণ করেছে ওয়েলনেস কমিউনিটিজ। এটা আসলে একটি একান্নবর্তী পরিবার প্রতিষ্ঠার নতুন উদ্যোগ। এই পরিবার শুধু আত্মীয়পরিজনকে নিয়ে হবে তা নয়, প্রতিবেশীদের নিয়েও এ রকম পরিবার গড়ে তোলা সম্ভব।
তিনি বলেন, আমাদের পরিবারে সবচেয়ে নিঃসঙ্গ জীবন যাপন করেন বয়স্ক ব্যক্তিরা। কারণ, বাকিরা অফিস, ব্যবসা বা পড়ালেখায় ব্যস্ত। কথা বলার মানুষ খুঁজতেও তাদের বাইরে যেতে হয়। কিন্তু বাড়ির ভেতরেই যদি একটা পার্ক থাকে, তবে বাকি অ্যাপার্টমেন্টের বয়স্ক ব্যক্তিরা একসঙ্গে সেখানে সময় কাটাতে পারবেন অর্থাৎ একটি কমিউনিটি গড়ে তোলা।
ওয়েলনেস কমিউনিটিজে পার্ক এবং তার সঙ্গে আলাদাভাবে ওয়াকওয়ের ব্যবস্থাও থাকছে; যেখানে হাঁটাহাঁটি বা জগিংয়ের মতো ব্যায়ামগুলো অনায়াসেই করে নেওয়া যাবে। বাচ্চাদের জন্য সাইক্লিং ওয়েও থাকবে। আরও থাকবে একটি আন্তর্জাতিক মানের জিমনেসিয়াম। সঙ্গে ট্রেইনার। এখানেই শেষ নয়, বিটিআইয়ের ওয়েলনেস কমিউনিটিজে আরও থাকছে একটি বড়সড় সুইমিংপুলও। ওপেন এয়ার মুভি থিয়েটার, পারিবারিক অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য কমিউনিটি হল। হোম অফিস থাকবে, যেখানে কমন রিডিং রুম, মিটিং রুমও থাকবে। অফিস থেকে জরুরি মিটিংয়ের জন্য সহকর্মীরা হাজির হতে পারবে। বাসার ড্রয়িংরুম মিটিংয়ের জন্য যথাযথ নয়, আবার ফ্যামিলি প্রাইভেসিও নষ্ট হতে পারে। তাই আলাদা মিটিং রুমে কাজ এবং আপ্যায়নের পালা সেরে নেওয়া যাবে। রেস্টুরেন্ট, ফ্যামিলি বারবিকিউ জোনের চেয়ে বাড়তি পাওয়া আর কী হতে পারে। বিটিআই ওয়েলনেস কমিউনিটিজে এমন সব আয়োজন রাখছে মূল আবাসিক ভবনের ভেতরেই। যাতে হয়তো হাতে গোনা দু-একটি কাজ ছাড়া ভবনের বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন পড়বে না।
ঢাকার অধিকাংশ ফ্ল্যাটবাসী হয়তো জানেন না, তাদের পাশের বাসায় কে থাকেন। এর একটাই কারণ, তাদের মধ্যে আত্মিক বন্ধন তৈরির কোনো ব্যবস্থা নেই। বিটিআই এখানেই পরিবর্তন ঘটাতে চায়। গ্রাহকেরা যেন শারীরিক সুস্থতার পাশাপাশি মন ও মননেও সুস্থ থাকেন।
মাহমুদ সালেহীন
ছবি: বিটিআই