skip to Main Content

ফুড বেনিফিট I মঙ্গলকর মৌরি

মসলাটির ঔষধি ব্যবহার বেশ পুরোনো। প্রাচীন গ্রিস ও রোমে পথ্য ও খাবার হিসেবে প্রচুর ব্যবহৃত হতো মৌরি। রোমান সেনাদের ধারণা ছিল, এটি তাদের শরীরের ওজন কমাবে। মিসর ও চীনে এটি ঔষধি হিসেবেই গণ্য হতো। অতীতে এর আধ্যাত্মিক ব্যবহারও দেখা যেত। খারাপ শক্তি থেকে রেহাই পেতে মৌরির কন্দ দরজার সামনে ঝুলিয়ে রাখার চল ছিল।
এর উৎপত্তি ভূমধ্যসাগরীয় এবং ইউরোপের কিছু অঞ্চলজুড়ে। ধারণা করা হয়, সেখান থেকে সারা বিশ্বে ছড়িয়েছে মসলাটি। এতে প্রচুর কপার, পটাশিয়াম, আয়রন, সেলেনিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও জিংক আছে। ভিটামিন এ, বি, সি ও ই মেলে। এটি আঁশসমৃদ্ধ মসলা। এতে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ফ্ল্যাভোনয়েড থাকে। এসব উপাদান শরীরের নানান রোগ সারায়। যেমন, এটি শরীরকে শীতল রাখে। প্রচন্ড গরমে এক চা-চামচ মৌরি চিবিয়ে খেলে আরাম মেলে। এটি পেটে জমে থাকা বায়ু বের করে দেহকে ঠান্ডা রাখে। উদরের অন্যান্য সমস্যাও দূর করতে পারে এই মসলা। বিশেষ করে ফাঁপার কারণে সৃষ্ট পেটব্যথা উপশম করে। অন্ত্রে কামড় দেওয়ার অস্বস্তিকর পরিস্থিতি থেকেও মুক্তি দেয়। সে জন্য এক কাপ পানিতে মৌরি জ্বাল দিয়ে চায়ের মতো পান করতে হয়। তাতে কোষ্ঠকাঠিন্যও কমে এবং পেট পরিষ্কার হয়। এটি হজমে সহায়ক। তা ছাড়া খাদ্য উপাদানগুলো দেহের বিভিন্ন অঙ্গে পৌঁছে দিতেও অবদান রাখে। দৃষ্টিশক্তি বাড়াতেও মসলাটি সহায়ক। দুর্বল দৃষ্টির শিশুদের সমস্যা দূর করতে মৌরির চা পান করানো যেতে পারে। চশমা নিতে না চাইলে এটি হতে পারে বিকল্প সমাধান।
সদ্য মায়ের বুকে দুধের পরিমাণ বাড়াতে মৌরি খাওয়া যেতে পারে। এটি বেশ প্রাচীন পদ্ধতি। দৈনিক আধা চা-চামচ মৌরি চিবিয়ে কিংবা চা তৈরি করে পান করলে ভালো ফল মেলে। কৃমিও দূর করতে পারে এই মসলার চা। পেট পুরোপুরি পরিষ্কার করতে এটি খাওয়া যেতে পারে। শরীরের ব্যথা নাশে তা পথ্যরূপে কাজ করে। অস্থিসন্ধির যন্ত্রণা সারাতে এটি কাজে লাগে। এমনকি সর্ষে তেল, মেথি, আদা ও রসুনের সঙ্গে মিশিয়ে আক্রান্ত স্থানে মাখলে ব্যথা কমে। চা করে পান করলেও সারবে। ঋতুস্রাবকালীন তলপেট ও কোমরের ব্যথা সারায়। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন হওয়ায় ব্যথানাশক ওষুধের বিকল্প হিসেবে মৌরিতেই আস্থা রাখেন অনেকে। মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে এটি খাওয়া যেতে পারে। এতে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান থাকায় তা খেলে মুখ গহ্বরের জীবাণু পালায়। ফলে দুর্গন্ধও দূর হয়।

শরীরের টক্সিন বের করে দিতে পারে এটি। রক্ত পরিষ্কারক হিসেবে এর পরিচিতি রয়েছে। তা ছাড়া মৌরি চিবোলে লালায় নাইট্রেট বাড়ে; যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। কোষ ও রক্তরসের জন্য দরকারি মৌরির পটাশিয়াম। হৃৎস্পন্দনকে নিয়ন্ত্রণে রাখে মসলাটি। মেদ কমায়। মেটাবলিজম উন্নত করে। প্রস্রাবের সমস্যা দূর করতে তা খাওয়া যেতে পারে। হাঁপানি রোগীরাও এটি খেয়ে উপকার পায়। এর ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট উপাদান সাইনাসের সমস্যা দূর করে। ব্রঙ্কাইটিস ও কফের সমস্যা থেকে রেহাই দেয় মৌরির চা। এমনকি ক্যানসাররোধী উপাদানও আছে মসলাটিতে। ত্বক, স্তন ও পেটের ক্যানসার নিয়ন্ত্রণ করতে পারে এটি। তবে কোনো রোগ সারাইয়ের উদ্দেশ্যে মৌরি খেতে চাইলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে খাওয়াই ভালো।

i ফুড ডেস্ক
ছবি: ইন্টারনেট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top