skip to Main Content

ফিচার I পানাশ

কংক্রিট থেকে দৃষ্টি-ইন্দ্রিয়কে খানিকটা স্বস্তি দিতে নগরীর এই ভোজনালয়। সবুজে ঘেরা ছাদে এর কর্মযজ্ঞ। শীতজুড়েই উষ্ণ খাবারের পদ চেখে দেখতে এখানে আসেন অতিথিরা…

রুফটপ রেস্তোরাঁ ‘পানাশ’। শীতকালেই সক্রিয়। বারবিকিউসহ আরও অনেক পদের পসরা নিয়ে মুখর হয় প্রতিবছরের অক্টোবরে। চলে প্রায় পরের বছরের মার্চ পর্যন্ত। এভাবেই চলছে ২০১৬ সাল থেকে। উদ্দেশ্য— শীতে নগরবাসীকে উষ্ণ খাবারের জোগান দেওয়া। তবে গরম পদ হলেই তো চলবে না; হতে হবে মুখরোচক। তা বিবেচনায় রেখে এ বছরও কার্যক্রম চালু করেছে পানাশ। গুলশান ২-এর ডরীন রেসিডেন্স সুইটে।
লিফটে চেপে সোজা সাততলায়। ডোর ওপেন হতেই খোলা আকাশের নিচে সবুজ শোভিত অন্দরসাজের পানাশ রেস্তোরাঁ। নাকে ধক করে এসে লাগবে বারবিকিউর সুগন্ধ। লাইভ কিচেনে চলে বারবিকিউ। সদা কর্মণ্য কজন প্রশিক্ষিত শেফের রন্ধনশৈলীতে পানাশের নানা পদের বারবিকিউ ঘ্রাণেন্দ্রিয়কে লোভাতুর করে তোলে।
লাইভ কিচেনের সামনেই কয়েক সেট চেয়ার-টেবিল। ভদ্র দূরত্বে পাতা। তাই সবান্ধব আড্ডা উপযোগী। পুরো স্পেসটাই ঘিরে আছে উল্লম্ব সবুজ গুল্মাদি। তাই এটিকে তারা বলে গার্ডেন এরিয়া। গুলশানের আকাশ দাপিয়ে বেড়ানো বাতাস মাঝেমধ্যেই দুলিয়ে যায় ওসবের পাতা। এক সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠলেই ডানে বুফে স্টেশন। বাঁয়ে সুইমিংপুল ঘেঁষা চেয়ার-টেবিল; ছাদের প্রান্ত লাগোয়া। এটি পুল সাইড এরিয়া নামে পরিচিত। নীল টলটলে পানিতে রাতের চাঁদবিম্ব ভেসে থাকে তাতে। ধীরে ধীরে গভীর হতে থাকা সুইমিংপুলের গভীরতা শেষমেশ ছয় ফুটে গিয়ে ঠেকেছে।সেখানেই শেষ নয়, আরও এক ধাপ সিঁড়ি বেয়ে আরেকটি বসার জায়গা। সেটা অনেকটাই ‘প্রাইভেট টাইপ’।
শীতের সন্ধ্যায় কোনো মাঝারি পার্টি করার উপযোগী হয়েই সেজেছে পানাশ। নিত্যই মেলে ‘আ লা কার্তে’ মেনু। সোম থেকে বুধবার দুপুর ১২টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত। বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৫টা। থাকে অথেনটিক সাউথ এশিয়ান ডিশ। সঙ্গে জাপানিজ গার্লিক চিকেন মিটবল, কিউব স্যালমন, ফ্রাইড ক্যালামারি, কোরিয়ান ফ্রাইড চিকেন, নুডলস উইথ মিক্সড মিট ইত্যাদি। অন্তর্জালে পানাশের মেনু দেখে নেওয়া যেতে পারে https://online.anyflip.com/xxxdu/utyf/mobile/index.html -এই লিঙ্ক ব্রাউজ করে।
শীত যাদের প্রিয় ঋতু, তারা পানাশে বারবিকিউ উপভোগ করতে পারবেন। ৪৫টির বেশি আইটেম রয়েছে তাতে। ভোজনরসিকেরা সেগুলোর মধ্যে ৭টিকে একটু বেশিই কদর করেন। এক্সক্লুসিভ সাত হলো: বিফ স্টেক, চিকেন স্টেক, গার্লিক প্রন, কিং ফিশ গিল্ড ইন সাইড দ্য বানানা লিফ, মাটন কোফতা, চিকেন সসেজ ও গার্লিক স্কুইড। এই পদগুলো বিশেষ ৪টি সসযোগে পরিবেশন করা হয়। এগুলো পানাশের নিজস্ব ঘরানায় তৈরি। লাইফ কিচেনে শেফ কাঈক দেখালেন ওসব সস তৈরির উপকরণ। কয়েকটির রেসিপি গোপনও রাখলেন। জানালেন অতিথিরা নিজেদের পছন্দমতো সসে ঝাল-টক-মিষ্টির পরিমাণ বাড়িয়ে-কমিয়ে নিতে পারবেন। চারটি সসের চার রকমের স্বাদ।
ডিনার চাখার দাম প্রদানে কিছু ছাড় রয়েছে। কিছু নির্দিষ্ট ব্যাংকের কার্ডে মিলবে ‘বাই ওয়ান গেট ওয়ান ফ্রি’ সুবিধা। শেষ পাতের ডেজার্টে বাহারি সব পদের আয়োজন রয়েছে পানাশে। গলা ভেজাতে রেস্তোরাঁর তৃষাহরা মকটেল চুমুকেই প্রশান্তি এনে দেবে।
পানাশের অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার (মার্কেটিং) মিস মাশফা আলম মেঘার সঙ্গে কথা বলে জানা গেল রেস্তোরাঁর আরও কিছু টুকিটাকি বিষয়। জানালেন, কেউ ক্যান্ডেল লাইট ডিনার করতে চাইলে ব্যবস্থা করে দেওয়া যাবে। তা ছাড়া ছোট পরিসরে পারিবারিক অ্যানগেজমেন্ট কিংবা সে ধরনের পার্টির জন্য পানাশকে বেশ উপযোগী মনে করেন তিনি। শ খানেক গেস্ট একসঙ্গে পার্টি করতে পারবেন পানাশে। রেস্তোরাঁটিতে রয়েছে বেশ কজন শেফ। মূল শেফ ব্রাজিলিয়ান। পানাশে অনেক শিক্ষানবিশ শেফও ইন্টার্ন করতে আসেন। দক্ষ হয়ে গেলে এই রেস্তোরাঁতে কাজের সুযোগও পেয়ে যান কেউ কেউ।
সি-ফুডের বিষয়ে মেঘা জানিয়েছেন, এসব প্রাণী বাংলাদেশের সাগরকূল থেকেই আসে। কিছু অবশ্য বিদেশ থেকেও আনা হয়। পরিচ্ছন্নতা ও স্বাস্থ্যের দিকে বিশেষ নজর রেখেই পানাশের খাবারগুলো তৈরি করেন রসুইকরেরা। বারবিকিউতে ব্যবহৃত মসলাদি আসে বিদেশ থেকে। অন্যান্য রেস্তোরাঁর বারবিকিউ মেনুতে কমন কিছু আইটেম থাকলেও পানাশ নতুন কিছু পদ যুক্ত করেছে। এখানেই অন্যান্য রেস্তোরাঁর সঙ্গে পানাশের পার্থক্য বলে জানিয়েছেন মেঘা।
ফুড ডেস্ক
ছবি: পানাশ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top