skip to Main Content
organic-march-into

অর্গানিক I চমকপ্রদ চন্দন

 

চন্দনের বাহাদুরি কম নয়। ত্বকের দাগছোপ দূর করে লাবণ্য অটুট রাখতে নিয়মিত চন্দনচর্চা বেশ ফলপ্রদ

প্রকৃতির শ্রেষ্ঠ একটি উপহার চন্দন। এটি একশ্রেণির কাঠ, যা এসেছে সান্তালাম বর্গের গাছ থেকে। চন্দন জন্মায় ভারত ও অস্ট্রেলিয়ায়। চন্দন কাঠ অন্যান্য সুগন্ধিযুক্ত কাঠের মতোই ভারী ও হলদেটে। এর আঁশ সূক্ষ্ম। আফ্রিকান ব্ল্যাকউডের পর বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দামি কাঠ হলো চন্দন। সংস্কৃত ভাষায় একে চন্দনাম বলা হয়। ভারতের বিভিন্ন জনগোষ্ঠী, বিশেষত তাদের হিন্দু সম্প্রদায়ের কাছে এটি অত্যন্ত পবিত্র। ধর্মচর্চা ও মৃতদেহ সৎকারে ব্যবহার করা হয়।

চন্দন কাঠ এবং এর তেল রূপচর্চার বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহারের জন্য সংগ্রহ ও নিষ্কাশন করা হয়। একবারে কাটার পরিবর্তে পুরো গাছটি অপসারণ করার পর কাটা হয়।

খাদ্যে

অস্ট্রেলিয়ান আদিবাসীরা চন্দন বীজের শাঁস, কুয়ান্দং (স্থানীয় ফল) হিসেবে খেয়ে থাকে। অস্ট্রেলিয়ার আদি ইউরোপিয়ানরা এই কুয়ান্দং ফলটি পাতার সঙ্গে মিশিয়ে ডাম্পের নামক একধরনের খাবার তৈরি করত। এই ফল থেকে জ্যাম, পাই, চাটনিও তৈরি করত। চন্দনের তেল বিভিন্ন খাদ্যে (ক্যান্ডি, আইসক্রিম, বেকড খাবার, পুডিং, অ্যালকোহলমুক্ত পানীয়) ব্যবহার করা হয়।

ব্যবহার

এটি নরম, উষ্ণ ও মসৃণ। যখন জুঁই, গন্ধরাজ, কমলা ফুল, রজনীগন্ধা ইত্যাদি সাদা ফুলের সঙ্গে মেশানো হয়, তখন তা হয়ে ওঠে মনোমুগ্ধকর সৌরভের ভান্ডার। বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের মারমা ও রাখাইন সম্প্রদায়ের মেয়েদের রূপচর্চায় চন্দনের ব্যবহার দেখা যায়। প্রসাধনীর দোকানে চন্দন পাওয়া যায়। তবে কেনার আগে মন্দ-ভালো যাচাই করে নেয়া জরুরি। খাঁটি চন্দনে একধরনের সুঘ্রাণ পাওয়া যায়। বিভিন্ন রকম কসমেটিকস ও সুগন্ধিতে চন্দন ব্যবহৃত হয়। অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান থাকায় এটি ত্বকের নানা সমস্যা সারিয়ে তুলতে পারে।

চন্দনে তৈরি হরেক রকমের ফেসপ্যাক ত্বকের ধরন বুঝে ব্যবহার করলে ভালো ফল পাওয়া যায়।

স্বাভাবিক ত্বকে সুবিধামতো হলুদ বাটা আর চন্দনের গুঁড়া মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে মুখে মেখে রেখে দিতে হবে ২০ মিনিট। তারপর ধুয়ে ফেলতে হবে। এই ফেসপ্যাক হারানো উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে দিতে দারুণ উপযোগী। ত্বকের শুষ্কতা রোধে ১ চা চামচ চন্দনগুঁড়ার সঙ্গে ২ চা চামচ পাকা পেঁপের পেস্ট ১৫ মিনিট রেখে ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ পরিষ্কার করে নিতে হবে। এটি প্রাকৃতিক ময়শ্চারাইজারের কাজ করে।

তৈলাক্ত ত্বকের জন্য চন্দনগুঁড়ার সঙ্গে টমেটোর রস মিশিয়ে ব্যবহার করলে সুফল পাওয়া যায়। এটি ত্বকের টানটান ভাব বজায় রাখতে সাহায্য করবে।

মুখের বিভিন্ন দাগ মুছে দিতে চন্দনের তুলনা নেই। ১ চিমটি হলুদ, গোলাপজল, মধু ও চন্দনগুঁড়ার পেস্ট ব্রণের দাগ দূর করতে সাহায্য করে। কালচে দাগমুক্ত ত্বক পেতে চন্দন দুধের মিশ্রণটিও অত্যন্ত উপকারী। ত্বকের বলিরেখা দূর করতে হলে সপ্তাহে অন্তত ৪ দিন চন্দনের পেস্ট প্রয়োগ করতে হবে। এটি তৈরি করতে হবে গোলাপজল, গ্লিসারিন, চন্দনের গুঁড়া দিয়ে। ভালো ফলের জন্য কমপক্ষে ২০ মিনিট মেখে রেখে দিতে হবে। যাদের রোদে বেরোলে ত্বকে দাগ পড়ে যায়, তাদের জন্য রয়েছে চন্দনের চমৎকার একটি ফেসপ্যাক। এতে লাগবে শসার রস, দই, গোলাপজল, চন্দনগুঁড়া। এই জাদুকরী প্যাকটি ত্বক থেকে শুধু রোদে পোড়ার চিহ্ন দূর করবে না, জ্বলুনিও প্রশমিত করবে।

  রেন্টিনা চাকমা

মডেল: আনুশকা

মেকওভার: পারসোনা

ছবি: সৈয়দ অয়ন

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top