skip to Main Content

ফিচার I লিপ ব্লাশিং

লিপস্টিক, গ্লস কিংবা বাম বাদেই ঠোঁট রাঙানোর মোহনমন্ত্র। পুরোটাই প্রযুক্তির প্রভাবে

সেমি পার্মানেন্ট মেকআপের এ যুগে মাইক্রোব্লেডিং, আইশ্যাডো এক্সটেনশন, আইলাইনার ট্যাটুর পাশাপাশি সম্প্রতি তালিকায় যুক্ত হয়েছে লিপ ব্লাশিং। লিপ ট্যাটুয়িংয়ের সর্বশেষ সংযোজন; যা শুধু কালার কারেকশনের কাজই করবে না, সঙ্গে ঠোঁটের আকার-আকৃতিকে করে তুলবে আরও আকর্ষণীয়।
লিপ ব্লাশিং কী
সেমি পার্মানেন্ট মেকআপ টেকনিক। এই পদ্ধতিতে একটি মেকানিক্যাল সুইয়ের সাহায্যে ঠোঁট রং করে দেওয়া হয়। তাতে ঠোঁট একই সঙ্গে পরিপুষ্ট এবং খুব সুন্দর স্বাভাবিক গোলাপি দেখায়। ঠোঁটের আউটলাইন আরও নিখুঁতভাবে ফুটিয়ে তুলতেও এই পদ্ধতি কার্যকর। লিপ ব্লাশিংয়ের সবচেয়ে ভালো দিক হলো, এর মাধ্যমে ঠোঁটের রং মোটেই অতিরিক্ত লাল বা কৃত্রিম দেখায় না।
অনেকেই লিপ ট্যাটু আর লিপ ব্লাশিংকে একই জিনিস ভাবেন। তবে লিপ ট্যাটু পদ্ধতি থেকে এটা কিছুটা আলাদা। লিপ ট্যাটুতে সুচ ঠোঁটের যত গভীরে গিয়ে কাজ করে, এ ক্ষেত্রে ততটা নয়। লিপ ব্লাশিংয়ের ক্ষেত্রে ঠোঁটে শেডিং বা পিক্সেলেটিং পদ্ধতিতে রঞ্জক কণা পুরে দেওয়া হয়। গায়ের রঙের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে। লিপ ব্লাশিংয়ের পর ঠোঁট মাত্র পাঁচ-দশ দিনের মধ্যেই সেরে যায়। প্রায় দুই বছর পর্যন্ত ঠোঁটের রং নিখুঁত থাকে। কোনো রিটাচেরও দরকার পড়ে না। ফলে যারা ত্বকের ক্ষতি হয়ে যাওয়ার ভয়ে ঠোঁটে ট্যাটু গান প্রয়োগ করতে চান না, তাদের জন্য এই পদ্ধতি বেশ গ্রহণযোগ্য।
লিপ ব্লাশিং কেন
কেবল সৌন্দর্যবর্ধনই নয়, লিপ ব্লাশিংয়ের রয়েছে আরও কিছু সুবিধা।
 ফ্যাকাশে ও বুড়িয়ে যাওয়া ঠোঁটে রং ফিরিয়ে দেয়।
 ঠোঁটের রঙে বৈচিত্র্য আনে।
 ইনজেকশন কিংবা অস্ত্রোপচার না করেই ঠোঁটের রং ও আকার পরিবর্তন করা যায়।
 ঠোঁটে কোনো দাগ বা ক্ষত থাকলে সেটি ঢেকে যায়।
লিপ ব্লাশিং করানোর আগে যা জরুরি
 লিপ ব্লাশিং পদ্ধতিতে ঠোঁট যেকোনো রঙে রাঙানো যেতে পারে। তবে ত্বক ও চেহারার সঙ্গে কোন রং সবচেয়ে মানানসই, তা জানতে সৌন্দর্য বিশেষজ্ঞের সঙ্গে অবশ্যই বিশদে পরামর্শ করে নেওয়া ভালো।
 বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ত্বকের স্বাভাবিক রঙের চেয়ে এক শেড হালকা রং বেছে নেওয়া হয়, যাতে গাঢ় লিপস্টিক আর লিপ লাইনারের রং স্পষ্ট হয়ে ফুটে ওঠে।
 শরীরে যেকোনো অংশে রং করার পদ্ধতিতেই যেমন প্রথমে জায়গাটা অবশ করে নেওয়া হয়, তেমনি লিপ ব্লাশিংয়েও ত্বকের ওপরে একটা অবশ করার ক্রিম লাগিয়ে নেওয়া হয়। অভিজ্ঞ ও পেশাদার কাউকে দিয়ে এটি করালে কোনো ব্যথা বা যন্ত্রণা টের পাওয়া যায় না, বড়জোর হালকা চিনচিনে অনুভূতি হতে পারে।
 বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী ট্রিটমেন্টের পর সাবধানতা মেনে চলতে হবে। ঠোঁটে হাত দেওয়া বা খোঁটাখুঁটি করা যাবে না।
 লিপ ব্লাশিং খুবই দ্রুত করিয়ে নেওয়া যায়। পেশাদারেরা মাত্র আধা ঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টার মধ্যেই পুরো পদ্ধতিটি শেষ করেন। তবে অবশ করার ক্রিম কাজ করতে একেকজনের ক্ষেত্রে একেক রকম সময় নেয়, সেটাও মাথায় রাখতে হবে।
 গর্ভাবস্থায় এই পদ্ধতিতে না যাওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
 শীতকালে যাদের ঠোঁট অনেক ফাটে বা গরমে ডিহাইড্রেটেড হয়ে যায়, তাদের বছরের এই দুটি সময় এড়িয়ে লিপ ব্লাশিং করানো উচিত।
 লিপ ব্লাশিং করানোর অন্তত ২৪ ঘণ্টা আগে অ্যালকোহল সংবলিত পানীয় পান করা যাবে না।
সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
যেকোনো পার্মানেন্ট বা সেমি পার্মানেন্ট মেকআপের পরেই ইনফেকশন কিংবা অ্যালার্জিক রিঅ্যাকশনের শঙ্কা থাকে। এরই সঙ্গে ঠোঁট ফুলে যাওয়া, ঠোঁটের চামড়া ওঠা—এ ধরনের সমস্যাও দেখা দিতে পারে। এ জন্য অভিজ্ঞ ও বিশেষজ্ঞ কাউকে বেছে নেওয়াই ভালো।
লিপ ব্লাশিং করানোর পরে
লিপ ব্লাশিং করানোর পর পাঁচ থেকে দশ দিন সময় লাগবে সেটির আসল রূপ ফুটে উঠতে।
 লিপ ব্লাশিং করানোর ২৪ ঘণ্টা পর পরিষ্কার কাপড়ে বরফ পেঁচিয়ে ঠোঁটে ঘষে নেওয়া যায়।
 ঠোঁট যথাসম্ভব পরিষ্কার রাখতে হবে।
 ঠোঁট ঘামা, সুইমিং, ঝাল খাবার, প্রসাধনী ব্যবহার—এগুলো কিছুদিন এড়িয়ে চলতে হবে।
 কখনো কখনো এমন হতে পারে যে ঠোঁট ব্লাশিং করানোর কিছুদিন পরেও ঠোঁটের রং ফুটে উঠছে না। টেনশনের কিছু নেই, ত্বকভেদে এমনটা হওয়া স্বাভাবিক।

 সুরবি প্রত্যয়ী
মডেল: রিফা
মেকওভার: পারসোনা
ছবি: তানভীর খান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top