ডিজাইনার পোর্টফোলিও I মাহিয়া নিনান পৌষী
উদীয়মান পাঁচ ডিজাইনার। বয়সে নবীন, আপন আলোয় সপ্রতিভ। তারই সুস্পষ্টতা প্রত্যেকের সৃষ্টিতে। যা দেশীয় ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রির চিরচেনা রূপ পাল্টে দিতে যথেষ্ট। ভিন্নতর ভাবনার, পরীক্ষাপ্রাণিত সব পোশাক নিয়ে ইতিমধ্যে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন আধুনিক ও সমকালীন মননের ফ্যাশন-সচেতন মানুষদের কাছে। গড়ে তুলেছেন নিজস্ব ফ্যাশন লেবেল। তৈরি হয়েছে ক্লায়েন্টটেল। ক্রেতা থেকে ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রি—সর্বত্র এদের জনপ্রিয়তার কারণ খুঁজেছেন জাহেরা শিরীন। সঙ্গে তাদের তৈরি সেরা আউটফিট নিয়ে এই পোর্টফোলিও
মডেল: ইন্দ্রানী, আরনিরা, আনসা
মেকওভার: পারসোনা
ছবি: জিয়া উদ্দীন
মাহিয়া নিনান পৌষী
পৌষী
দেশীয় ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রিতে যে গুটি কয়েক ব্র্যান্ড প্লাস সাইজ নিয়ে কাজ করে, পৌষী তাদের অন্যতম। তরুণ ফ্যাশন ডিজাইনার মাহিয়া নিনান পৌষীর প্যাশন প্রজেক্ট। শুরুটা হয়েছিল ২০১৩ তে। তবে ওয়েস্টার্ন প্যাটার্নের ড্রেস দিয়ে। তখন সদ্য সতেরোতে পা দিয়েছেন পৌষী। সোশ্যাল মিডিয়ায় বরাবরই সরব ছিলেন। ছবি তুলতে পছন্দ করতেন, ফেসবুক আপলোড করার পর সাড়াও মিলত বেশ। সেই বরাতেই এক বিয়ের ছবি তুলে বেশ কিছু টাকা হাতে আসে। তা দিয়েই দশটি ড্রেস ডিজাইন করে ফেলেন। উদ্দেশ্য—শুধুই ছবি তোলা, বিক্রি নয়। কিন্তু ফেসবুকে ড্রেসের ছবিগুলো পাবলিশ হওয়ার পর সেগুলো কেনার জন্য আগ্রহী হয়ে ওঠেন অনেকেই। এক রাতেই বিকিয়ে যায় সব। ব্যস! শুরু হয় ব্র্যান্ড পৌষীর যাত্রা। বনানীতে আউটলেট খোলা হয়। পরবর্তী সময়ে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমেই বাইরের বিভিন্ন দেশ থেকে এক্সপোর্টের অর্ডার আসতে শুরু করে। ২০১৭ তে ৩০ জন কারিগর দিয়ে নিজের ফ্যাক্টরি গড়ে তোলেন তিনি। বনানীরটা ছেড়ে পৌষীর আউটলেট তখন এসে পৌঁছায় ধানমন্ডি।
ডিজাইনার ব্রাইডাল আউটফিট নিয়ে। কিন্তু অতিমারিতে এক্সপোর্ট বন্ধ হয়ে যায়, আউটলেট চালিয়ে নিতেও বেগ পেতে হচ্ছিল। তখন পুরোদস্তুর অনলাইনে সেলিংয়ের ব্যাপারে আগ্রহী হয়ে ওঠেন পৌষী। প্লাস সাইজ পোশাক দিয়ে পুনরায় চালু হয় ব্র্যান্ড। কারণ, দীর্ঘ সময় বিভিন্ন কাস্টমারদের সঙ্গে কাজ করে দেশীয় বাজারে প্লাস সাইজ রেডিমেড ড্রেসের অভাব আগেই ধরতে পেরেছিলেন। পাঁচজন প্লাস সাইজ মডেলকে নিয়ে করা ফরমাল আউটফিটের সে শ্যুট সাড়া ফেলে দেশজুড়ে। তারপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। এ বছর ওয়েস্টার্ন আর এথনিকের মিশেলে তৈরি ভিন্নধর্মী পোশাক নিয়ে কাজ করবে পৌষী। প্লাস সাইজ ডিজাইন নিয়েও চলবে নিরীক্ষাধর্মী কাজ। কারণ, তার ডিজাইন করা পোশাকে যখন কাউকে চমৎকার দেখায়, ক্রেতার আত্মবিশ্বাস বাড়ে, তা দেখে অনুপ্রাণিত হন পৌষী নিজেও।