ই-সোসাইটি I স্ন্যাপের জাদু
জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। তবে অন্য ই-সোসাইটিগুলোর চেয়ে একটু আলাদা। কেমন সেটা?
স্ন্যাপচ্যাট। আমেরিকান মাল্টিমিডিয়া ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং অ্যাপ অ্যান্ড সার্ভিস। পথচলা শুরু ২০১১-এর সেপ্টেম্বরে। প্রতিদিন অন্তত একবার হলেও ব্যবহার করেন প্রায় ১৭৮ মিলিয়ন স্মার্টফোন ইউজার। জনপ্রিয় এই মেসেজিং অ্যাপে ব্যবহারকারীদের ছবি ও ভিডিও শেয়ারিংয়ের পাশাপাশি রয়েছে ডিসঅ্যাপিয়ারিং মেসেজের সুবিধা। স্ন্যাপচ্যাটের প্রধান ফিচারের মধ্যে রয়েছে স্ন্যাপ, স্টোরিস, স্ন্যাপস্ট্রিক, ফিল্টার, লেন্স, জিও-ফিল্টার, স্ন্যাপকোড, মেমোরিস, ফ্রেন্ডস পেজ, বিটমোজি প্রভৃতি।
অ্যাকাউন্ট খোলার উপায়
গুগল প্লেস্টোর কিংবা অ্যাপল অ্যাপ স্টোর থেকে স্ন্যাপচ্যাট অ্যাপ ডাউনলোড করে ইনস্টল করুন। নামধামসহ নানান তথ্য ও ছবি দিয়ে অ্যাকাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করা একেবারেই সহজ। অ্যাপ ইনস্টলের পর ওপেন করে নিচের দিকে ‘সাইন আপ’ বাটনে ক্লিক করুন। তারপর নিজের প্রথম নাম ও শেষ নাম লিখে ‘সাইন আপ অ্যান্ড অ্যাকসেপ্ট’ বাটন চাপুন। জন্মদিন লিখে চাপুন ‘কন্টিনিউ’ বাটন। এবার একটি ইউনিক ইউজারনেম বাছাই করে ‘কন্টিনিউ’ চাপুন। ই-মেইল অ্যাড্রেস দিন অথবা ‘সাইন আপ উইথ ফোন নাম্বার ইনস্টিড’ অপশনে প্রবেশ করে লিখুন ফোন নম্বর। ই-মেইল বা এসএমএসে পাওয়া ভেরিফিকেশন কোডটি লিখে ‘কন্টিনিউ’ চাপুন। ব্যস, খুলে গেল অ্যাকাউন্ট! এবার স্ক্রিনে দেখতে পাবেন ‘ফাইন্ড ইউর কনটাক্টস’। ‘কন্টিনিউ’ চেপে ‘পারমিশন অ্যালাউ’ দিলেই অন্য স্ন্যাপচ্যাট ইউজারদের তালিকা দেখতে পাবেন। এবার কাকে কাকে অ্যাড করবেন, সেটা তো একান্তই আপনার বিবেচনা।
বন্ধু বাছাই
স্ন্যাপচ্যাটে বন্ধু অ্যাড করার রয়েছে বেশ কিছু উপায়। স্ন্যাপকোডের মাধ্যমে অ্যাড করতে চাইলে যাকে করবেন, তার স্ন্যাপকোডের ছবি তুলুন কিংবা নিন স্ক্রিনশট। স্ন্যাপচ্যাটে ঢুকে স্ক্রিনের ওপরের ডান দিকের কোনায় ফ্রেন্ড অ্যাড করার আইকনটি ক্লিক করুন। এরপর ক্লিক করুন ‘ফাইন্ড ফ্রেন্ডস’ লেখা সার্চ বক্সের পাশের আইকনে। নিজের ফোনে সংরক্ষিত স্ন্যাপকোডের ছবিটি নির্বাচন করলেই পেয়ে যাবেন ফ্র্রেন্ড অ্যাডের অপশন। তা ছাড়া ইউজারনেম ব্যবহার করেও যুক্ত করতে পারেন বন্ধু। সে ক্ষেত্রে অ্যাপ ওপেন করে স্ক্রিনের ওপরের বাম কোনায় থাকা বিটমোজি বা গোস্ট আইকনে ক্লিক করুন। তারপর চাপুন ‘অ্যাড ফ্রেন্ডস’; লিখুন ইউজারনেম। যাকে অ্যাড করবেন, তার নামের পাশে থাকা ‘+অ্যাড’ বাটন চাপলেই ব্যস, চলে যাবে ফলো রিকোয়েস্ট।
চলছে, চলুক…
স্ন্যাপচ্যাট ব্যবহার সহজ করার জন্য কিছু কাজ করতে হবে আপনাকে। যেমন ধরুন:
এই অ্যাপে প্রোফাইল পিকচার হিসেবে ব্যবহৃত বিটমোজি তৈরি করতে হলে শুরুতেই স্ক্রিনের বাম কোনায় থাকা গোস্ট আইকনে ক্লিক করুন। এরপর যে স্ক্রিন আসবে, সেটি থেকে বেছে নিন ‘ক্রিয়েট বিটমোজি’। তারপর নির্দেশনা মেনে বানিয়ে নিন নিজস্ব বিটমোজি।
সাধারণত বাদবাকি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যাপ ওপেন করলেই নিউজফিড বা টাইমলাইন নজরে পড়লেও স্ন্যাপচ্যাটের বেলায় ব্যাপারটি একটু ভিন্ন। এই অ্যাপ ওপেন করলে সরাসরি দেখা মেলে ক্যামেরা সেকশনের। বন্ধুতালিকায় থাকা ইউজারদের পোস্ট করা স্ন্যাপ দেখতে অ্যাপ ওপেন করে লেফট সোয়াইপ করুন। কোনো বন্ধু স্ন্যাপ পাঠিয়ে থাকলে একটি আইকন দেখতে পাবেন তার নামের পাশে। আইকনের রং নির্ভর করে মেসেজের ধরনের ওপর। যেমন ধরুন, চ্যাটের মেসেজের রং নীল, অডিওবিহীন স্ন্যাপের লাল, আর বাদবাকি স্ন্যাপের রং বেগুনি। স্ন্যাপ পাঠানো বন্ধুর নামের ওপর ক্লিক করলেই স্ন্যাপটি আপনার স্ক্রিনে ধরা দেবে।
চাইলে কারও পাঠানো স্ন্যাপের স্ক্রিনশট নিতে পারবেন। তবে সেটি অ্যালার্টের মাধ্যমে প্রেরকদের জানিয়ে দেবে স্ন্যাপচ্যাট টিম।
স্ন্যাপের অলিগলি
অ্যাপ ওপেন করে বটমে থাকা গোল ক্যাপচার বাটন চেপে পাঠাতে পারবেন ছবি স্ন্যাপ। ভিডিও স্ন্যাপ পাঠাতে চাইলে ওই বাটন চেপে ধরে রাখতে হবে। বলে রাখা ভালো, এই অ্যাপে সর্বোচ্চ ১০ সেকেন্ড দৈর্ঘ্যরে ভিডিও পাঠানো যায়।
ভিডিও বা ছবি তোলার পর মনঃপূত না হলে ওপরের বাম দিকের কোনায় থাকা ক্রস চিহ্নের সাহায্যে কেটে দিন। অন্যদিকে, পাঠানোর আগে স্ন্যাপে জুড়ে দিতে পারেন ক্যাপশন, ডুডল, স্টিকার, সিজারস পেপারক্লিপ, টাইমার, ফিল্টার ইত্যাদি।
তৈরি হয়ে যাওয়া স্ন্যাপ পাঠাতে হলে স্ক্রিনের নিচের ডান কোনায় থাকা ‘সেন্ড টু’ বাটন চাপুন।
স্ন্যাপচ্যাট ক্যামেরার লেন্সগুলো সাধারণত ছবি তোলা বা ভিডিও করার সময় সরাসরি ব্যবহারের জন্য মুখভিত্তিক বিভিন্ন লাইভ ফিল্টারের সমাহার। অ্যাপের ক্যামেরা ওপেন করে যেকোনো মুখের ওপর ক্লিক করলে দেখা মিলবে এগুলোর। সেখান থেকে পছন্দের লেন্সটি বেছে নিন।
স্টোরি তৈরি করতে চাইলে অ্যাপ ওপেন করে রাইট সাইটের প্রথম ট্যাবে প্রবেশ করুন। সেখান থেকে বাম দিকের কোনায় থাকা ‘+অ্যাড স্টোরি’ অপশনে গিয়ে স্ন্যাপ তুলুন এবং পোস্ট করুন স্টোরিতে।
এই অ্যাপের মাধ্যমে করা যায় একক কিংবা গ্রুপ চ্যাট। সে ক্ষেত্রে অ্যাপ ওপেনের পর লেফট সোয়াইপ কিংবা নিচের দিকে থাকা মেনু থেকে চ্যাট সিলেক্ট করে ব্যবহার করতে পারবেন।
আয়ের রাস্তা
অন্যান্য জনপ্রিয় ই-সোসাইটির মতো স্ন্যাপচ্যাটও দিচ্ছে উপার্জনের সুযোগ। স্টোরিজে প্রচারিত বিজ্ঞাপন থেকে উপার্জিত আয়ের অংশ ইউজারের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নেবে প্রতিষ্ঠানটি। তবে সবাই পাবেন না। যাদের ফলোয়ার বেশি কিংবা যারা ‘স্ন্যাপচ্যাট স্টার’, তাদের জন্যই রয়েছে এই সুবিধা।
লাইফস্টাইল ডেস্ক
ছবি: ইন্টারনেট