কুন্তলকাহন I স্ক্যাল্প সোক
চুলের যত্নে গোড়াতেই যেন গলদ না হয়ে যায়, তারই বিশেষ ব্যবস্থা করেছেন হেয়ার এক্সপার্টরা। লুফে নিচ্ছেন নেটিজেনরাও। অনলাইন সার্চের সমীক্ষাই তার প্রমাণ
প্রয়োজনীয় পুষ্টি জুগিয়ে চুল গোড়া থেকে মজবুত করতে কাজ করে স্ক্যাল্প। তাই নিয়মিত এর বিশেষ যত্ন নেওয়া চাই। বিশেষজ্ঞরাও এ নিয়ে নানা নিরীক্ষায় ব্যস্ত থাকেন হরহামেশাই। ফলে প্রডাক্ট লাইনেও যোগ হয় নতুন নতুন পণ্য। স্ক্যাল্পের যত্নে হেয়ার কেয়ার রুটিনের নতুন সংযোজন স্ক্যাল্প সোক।
এটি এমন এক ফর্মুলা, যা প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি। অধিক ফোম তৈরি না করেই স্ক্যাল্প পরিষ্কার করতে কার্যকর। স্ক্যাল্প সোকের মূল উপাদান অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার, যা অনেক ন্যাচারাল বিউটি প্রডাক্টেই ব্যবহৃত হয়। পাশাপাশি স্ক্যাল্প সোকে ফার্মেন্টেড রাইস ওয়াটার এবং আমন্ড অয়েল ব্যবহার করা হয়। ফলে এর ব্যবহার মাথার ত্বককে ডিটক্সিফাই করে এবং চুলের স্বাস্থ্য আরও এক ধাপ ভালোর দিকে নিয়ে যায়। স্ক্যাল্পে জমে থাকা ধুলো-ময়লা, তেল কিংবা চুলে ব্যবহৃত হেয়ার প্রডাক্টের অবশিষ্টাংশ সরিয়ে ফেলার জন্য তৈরি করা বিশেষ ফর্মুলা এই সোক স্ক্যাল্প সোক। সেরা ফলের জন্য সাপ্তাহিকভাবে এর ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়। অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার ম্যালিক অ্যাসিডের মতো এ এইচ এ উপাদানে সমৃদ্ধ, যা আলতোভাবে স্ক্যাল্প এক্সফোলিয়েট করে। ফার্মেন্টেড রাইস ওয়াটারের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যামিনো অ্যাসিড এবং ভিটামিন বি আর ই উপাদান মাথার ত্বককে হাইড্রেট করে এবং স্ক্যাল্পের জমে থাকা ময়লা নরম করে তোলে। আর আমন্ড অয়েল শুষ্ক, ক্ষতিগ্রস্ত চুলকে মজবুত করতে সাহায্য করে এবং চুলকে আরও বেশি কোমল ও উজ্জ্বল করে তোলে। এসবের পাশাপাশি এটি চুলে অতিরিক্ত ভলিউম এনে দেয় এবং চুল স্বাস্থ্যোজ্জ্বল দেখাতে ভূমিকা রাখে। বর্তমান সময়ে খুব বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠছে স্ক্যাল্প সোক। ‘ক্রুয়েলটি ফ্রি’ স্ক্যাল্প সোকগুলোতে অতিরিক্ত কোনো সুগন্ধি, সালফেট, সিলিকন, থ্যালেট কিংবা প্যারাবেনের মতো ক্ষতিকর ক্যামিকেল ব্যবহার করা হয় না।
সব ধরনের চুলের ক্ষেত্রেই বিস্ময়করভাবে কাজ করে এই স্ক্যাল্প সোক। চুল ঘন হোক কিংবা পাতলা, শুষ্ক হোক অথবা তৈলাক্ত—সব ক্ষেত্রেই স্ক্যাল্প সোক ব্যবহার করা যায়। তবে চুল এবং স্ক্যাল্পের ধরন অনুযায়ী স্ক্যাল্প ভেজানোর ও প্রডাক্টের পরিমাণ নির্ধারণ করতে হবে। চুল যদি কার্লি হয়ে থাকে, তাহলে এর ব্যবহার কার্ল প্যাটার্নকে আরও বেশি নজরকাড়া করে তোলে। ব্যবহারের আগে ও পরে চুলের বাউন্স দেখেই বোঝা যায় পণ্যটি কতটা জাদুকরী! তবে তা অবশ্যই একটি ভালো ব্র্যান্ডের এবং ক্লিনিক্যালি টেস্টেড পণ্য হওয়া দরকার। স্ক্যাল্প সোকের জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্র্যান্ড হ্যালো ক্লিন। তাদের ক্ল্যারিফাইং স্ক্যাল্প সোক ব্যবহারের পরে স্ক্যাল্পে থাকা ময়লা আর প্রডাক্টের অবশিষ্টাংশ উল্লেখযোগ্য হারে কমে যায়এ কথা ক্লিনিক্যালি প্রমাণিত। হ্যালো ক্লিনের বিশেষ ফর্মুলা মাথার ত্বক থেকে শুধু ময়লাই দূর করে না, সেই সঙ্গে চুলকে এমনভাবে হালকা, কোমল ও পরিষ্কার করে, যা অনেক সময় পছন্দের শ্যাম্পুও করতে পারে না। এটি পরিবেশবান্ধব উপায়ে তৈরি এমন এক ফর্মুলা, যার উপাদানগুলো প্রাকৃতিকভাবে চুলের আর্দ্রতা ধরে রাখতেও সাহায্য করে।
ব্যবহারবিধি
যেহেতু স্ক্যাল্প সোকের ফর্মুলা খুব কম পরিমাণের ফোম তৈরি করে, তাই অতি উৎসাহী হয়ে অনেকেই অতিরিক্ত কিংবা প্রয়োজনের চেয়ে বেশি প্রডাক্ট ব্যবহার করে ফেলেন। খুব বেশি পরিমাণে স্ক্যাল্প সোক একসঙ্গে ব্যবহার করে ফেললে তখন সেটা অনেকবার ধোয়ার পরও উঠতে চায় না। যা স্ক্যাল্প ও চুল উভয়ের জন্য ক্ষতিকর এবং অস্বস্তিকর হয়ে উঠতে পারে। তাই ব্যবহারের আগে ভালো করে ব্যবহারবিধি জানতে হবে। চুলের দৈর্ঘ্য ও গঠন অনুসারে নির্দেশিকাগুলো অনুসরণ করা জরুরি। স্ক্যাল্প সোক ব্যবহারের পরিমাণ বুঝে নিতে একটি সাধারণ নির্দেশিকা মেনে চলা যেতে পারে। চুল যদি ছোট অথবা পাতলা হয়ে থাকে, তবে এক সিকি পরিমাণ স্ক্যাল্প সোক প্রডাক্ট ব্যবহারই যথেষ্ট। চুল যদি হয় লম্বা আর ঘন, তবে ব্যবহার করা যায় হাতের তালুর তিন-চতুর্থাংশ পরিমাণ প্রডাক্ট। আর যদি মাথাভর্তি থাকে কোঁকড়া চুলে, তবে নেওয়া যেতে পারে পুরো হাতের তালুর সমান প্রডাক্ট। স্ক্যাল্প সোক ব্যবহারের আগে সব চুল খুব ভালোভাবে ভিজিয়ে নিতে হবে। তারপর মাথার সামনের দিক থেকে শুরু করে পেছনের দিকে আলতোভাবে সোক লাগিয়ে নিতে হবে। এতে চুল ও স্ক্যাল্পে সঠিক ও সমান্তরালভাবে সোক মাখানো নিশ্চিত হয়। স্ক্যাল্প ও চুলে প্রডাক্ট মাখানো হয়ে গেলে স্ক্যাল্পে ধীরে ধীরে ম্যাসাজ করতে হবে। এর জন্য যেকোনো ভালো ও আরামদায়ক স্ক্যাল্প এক্সফোলিয়েটিং ব্রাশের সাহায্য নেওয়া যায়। কিছুক্ষণ ম্যাসাজ করার পর ৫ মিনিটের জন্য অপেক্ষা করা চাই। এতে সোক কার্যকরভাবে কাজ করতে পারে। ৫ মিনিট পর কুসুম গরম পানি দিয়ে খুব ভালো করে স্ক্যাল্প ও চুল ধুয়ে ফেলতে হবে।
সোক স্ক্যাল্প শ্যাম্পু কিংবা কন্ডিশনার—দুটোর পরিবর্তেই ব্যবহৃত হতে পারে। কারণ, এটি উভয়েরই কাজ করে। তবে চুল কোঁকড়া হলে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ—স্ক্যাল্প সোক ব্যবহারের পর একটি লিভ-ইন কন্ডিশনার স্প্রে করে নেওয়ার। হ্যালো ক্লিনের পাশাপাশি আরও অনেক ব্র্যান্ড ইতিমধ্যে স্ক্যাল্প সোক বাজারে এনেছে। অ্যাক্ট+একরের কোল্ড প্রসেসড স্ক্যাল্প ডিটক্স মাথার ত্বকে অয়েল ব্যালান্স এবং ময়শ্চার নিশ্চিত করে স্ক্যাল্পকে ডিটক্সিফাই করতে সাহায্য করে। স্ক্যাল্পের সুস্থতার পাশাপাশি চুলের ভলিউম বাড়াতেও এটি কার্যকর। ব্রিওজিওর স্ক্যাল্প রিভাইভাল ট্রিটমেন্ট ফর্মুলা তৈরি টি ট্রি অয়েল, চারকোল ও অ্যালোভেরার সংমিশ্রণে; যা স্ক্যাল্পে জ্বালাপোড়া কিংবা চুলকানোর সমস্যা থাকলে তা দূর করে। যাদের স্ক্যাল্প সেনসিটিভিটির সমস্যা আছে, তাদের জন্য এই স্ক্যাল্প সোক সেরা। তাই নিজের স্ক্যাল্পের ধরন এবং চুলের গঠন বিবেচনা করে বেছে নিতে হবে সবচেয়ে মানানসইটি।
শিরীন অন্যা
মডেল: সারাহ আলম
মেকওভার: পারসোনা
ছবি: জিয়া উদ্দীন
Thank you very much to 》Shirin Ananya》This sugession will help me to my own shine.
I am new reader in Canvas