সেলুলয়েড I এন্ডলেস পোয়েট্রি
মূল শিরোনাম: Poesía sin fin
চিত্রনাট্য ও পরিচালনা: আলেহান্দ্রো হোদোরোস্কি
অভিনয়: আদান হোদোরোস্কি, আলেহান্দ্রো হোদোরোস্কি, ব্রন্তিস হোদোরোস্কি, পামেলা ফ্লোরেস
সিনেমাটোগ্রাফি: ক্রিস্টোফার ডয়েল
রানিংটাইম: ১২৮ মিনিট
ভাষা: স্প্যানিশ
দেশ: চিলি, ফ্রান্স
মুক্তি: ১৪ মে ২০১৬
শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতির নানা বাঁকে, প্রবল উথালপাতাল অথচ ভীষণ ঋদ্ধ এক জীবন কাটিয়ে, শেষ বেলায় অতীতে ফিরে তাকানোর এক অনন্য উদাহরণ তৈরি করেছেন চিলিয়ান কাল্ট ফিল্মমেকার আলেহান্দ্রো হোদোরোস্কি। বর্তমানে ৯৩ বছর বয়সী এই নির্মাতা ২০১৬ সালে বানিয়েছেন নিজের এ পর্যন্ত শেষ ফিচার ফিল্ম ‘এন্ডলেস পোয়েট্রি’। এটি তার আত্মজৈবনিক সিনেমা সিরিজের দ্বিতীয় সৃষ্টি। এখানে রয়েছে তার কৈশোরের শেষ বেলা ও প্রথম যৌবনের কাহিনি। এর আগে, ২০১৩ সালে শৈশবের স্মৃতি ঘিরে বানিয়েছিলেন ‘দ্য ড্যান্স অব রিয়েলিটি’।
আত্মজৈবনিক হলেও বাস্তবতা সব সময় বাস্তব রূপে হাজির নয় আলেহান্দ্রোর এই সিনেমায়; বরং সেখানে একই সঙ্গে ঢুকে পড়েছে কল্পনার জগৎ। তাতে দেখা মেলে বাবার কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে শৈশব ও কৈশোরের শুরুর ভাগ কাটানোর পর বাঁধনহারা, বেপরোয়া, উদ্দাম জীবনের দিকে পা বাড়ানো আলেহান্দ্রোর। এক শিল্প পরিমণ্ডলে, সৃজনশীলতার ঘোরে কাটতে থাকে তার দিন-রাত। লেখেন কবিতা, গড়েন প্যান্টোমাইম।
চিলির রাজধানী সান্তিয়াগোতে কাটানো সেই বোহিমিয়ান জীবনে তার প্রিয় কবি নিকানোর পাররার অ্যান্টি-পোয়েট্রি বা প্রতিকবিতার বোধ তাড়িত করতে থাকে তাকে। এমনই এক রাতে দেখা হয় কবি স্তেলা দিয়াজ ভারিনের সঙ্গে, এক পানশালায়। বলা হয়ে থাকে, পাররার বিখ্যাত ‘দ্য ভাইপার’ কবিতার অনুপ্রেরণা এই নারী। প্রিয় কবির প্রিয় প্রেয়সীর প্রেমে দেখামাত্রই পড়ে যান সদ্য যৌবনে পা রাখা আলেহান্দ্রো। একসময় তাদের সম্পর্ক গড়ায় গভীরতায়। কিন্তু ভুল-বোঝাবুঝি বাধা হয়ে দাঁড়ায় তাতে।
এমন বিচ্ছেদে থামতে যেন মানা আলেহান্দ্রোর। চলতে থাকে তার জীবন অন্বেষণের রোমাঞ্চ। এরই মধ্যে দেখা হয় সমবয়সী প্রতিশ্রুতিশীল কবি এনরিক লিনের সঙ্গে। গভীর বন্ধুত্ব হয়ে ওঠে তাদের। কিন্তু সেই সম্পর্কেও একসময় প্রবল ধাক্কার কারণ হন এক নারী। বামন তিনি। এনরিকের প্রেমিকা। প্রিয় বন্ধুর সঙ্গে প্রতারণার দায়ে নিজের অন্তরের জ্বলনে জ্বলতে থাকা আলেহান্দ্রো জীবনের সঙ্গে আরেকটু বোঝাপড়া করতে, জীবনকে আরও বাজিয়ে দেখতে, অভিযাত্রাকে আরও রোমাঞ্চকর করে তুলতে সিদ্ধান্ত নেন দেশ ছাড়ার। প্রিয় বন্ধু, প্রিয় সঙ্গী-সাথী, প্রিয় পরিবেশ ও শহর থেকে অজানার পথে তার সেই পা বাড়ানোর মধ্য দিয়েই সমাপ্তি ঘটে ‘এন্ডলেস পোয়েট্রি’র।
আত্মজৈবনিক সৃষ্টিতে সাধারণত অনেকেই নিজের গোপন ও অন্ধকার দিকের প্রকাশ ঘটাতে অনীহা প্রকাশ করেন। কোনো না কোনো চাদরে ঢেকে দেন সেটা। আলেহান্দ্রো হোদোরোস্কি তা করেননি; বরং শারীরিক ও মানসিকভাবে নিজেকে প্রতিনিয়ত করে দিয়েছেন উন্মোচন। আর তার কাব্যিক ইমেজের জাদুতে তা ছড়িয়ে পড়েছে অপার সৌন্দর্যের ভাঁজে ভাঁজে দগদগে ক্ষতসহকারে।
আরিফুল ইসলাম
কুইজ
১। কোন কবির কবিতা আলেহান্দ্রোকে তাড়িত করেছিল?
[ক] পাবলো নেরুদা
[খ] ফেদেরিকো গার্সিয়া লোরকা
[গ] রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
[ঘ] নিকানোর পাররা
২। এই আত্মজৈবনিক সিরিজের প্রথম সিনেমা কোনটি?
[ক] এন্ডলেস পোয়েট্রি
[খ] দ্য ড্যান্স অব রিয়েলিটি
[গ] দ্য হলি মাউন্টেন
[ঘ] এল তোপো
৩। ‘এন্ডলেস পোয়েট্রি’তে কোন শহরের গল্প দেখানো হয়েছে?
[ক] সান্তিয়াগো
[খ] প্যারিস
[গ] আমস্টারডাম
[ঘ] টোকিও
গত পর্বের বিজয়ী
১. মানহা মুসরাত রায়া, উত্তরা, ঢাকা।
২. অন্যা, দক্ষিণখান, ঢাকা।
৩. তানিয়া হক, বাড্ডা, ঢাকা।