সম্পাদকীয়
শুরু হলো নতুন অর্থবছর। শুধু রাষ্ট্রীয় পর্যায়েই নয়, ব্যক্তিপর্যায়েও অর্থকেন্দ্রিক জীবনকে নতুন করে গুছিয়ে তোলার সময়। এরই মাঝে বড় ধরনের আনন্দের ঝিলিক দিচ্ছে উঁকি। এসে গেছে ঈদুল আজহা। কোরবানির এই ঈদের প্রকৃত মর্মার্থ ধারণ করে, বস্তুগত পশুর পাশাপাশি অন্তরের সুপ্ত পশুসত্তাকেও বিসর্জন দেওয়ার এক দারুণ উপলক্ষ।
এমন সময়ে চলছে ঘোর বর্ষা। ক্যানভাসেরও তাই এবারের থিম রং টিফ্যানি ব্লু। ঠিক যেন বৃষ্টির রং! ঈদ ও বৃষ্টি ঘিরে রয়েছে এবার নানান আয়োজন। রয়েছে বিশেষ পোর্টফোলিও। ফ্যাশন, বিউটি, ফুড ও লাইফস্টাইল—প্রতিটি সেগমেন্টে রয়েছে সময়োপযোগী বিভিন্ন কনটেন্ট। আর কোরবানি ঈদ মানেই যেহেতু ঘরে ঘরে মাংস খাওয়ার ধুম, তাই ফুড সেগমেন্টের বেশির ভাগ অংশে রয়েছে এ-সংক্রান্ত খানাখাদ্যের হাজিরা। অন্যদিকে কভারস্টোরি সাজিয়েছি মমত্ব ঘিরে, মমতা দিয়ে।
বৃষ্টি মানেই খুব ফুরফুরে, রোমান্টিক অনুভূতির পসরা—তা কিন্তু সব সময় নয়। বর্ষা মৌসুম অনেক বিড়ম্বনাও হাজির করে। তারই ভয়াবহ নমুনা আমরা দেখতে পাচ্ছি দেশের বিভিন্ন প্রান্তে, বিশেষ করে সিলেট, সুনামগঞ্জসহ হাওর অঞ্চলের বন্যায়। আদিগন্ত প্লাবনে জনজীবনে নেমে এসেছে বিপর্যয়। ত্রাহি দশা। আশার কথা, প্রকৃতির এমন রুদ্ররোষে সাধারণ মানুষও দেশের নানান প্রান্ত থেকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে বন্যার্তদের দিকে। এভাবেই জিতে যায় মনুষ্যবোধ; এখানেই মানুষের জয়গান।
গত মাসে আরও এক ভয়ানক বিপর্যয়ের মুখোমুখি হতে হয়েছে আমাদের। সেটি যে প্রকৃতিসৃষ্ট নয়, তা বোঝার জন্য বিশেষজ্ঞ হওয়ার দরকার পড়ে না! ৪ জুন রাত নয়টার দিকে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণে ঘটেছে ব্যাপক প্রাণহানি। মারাত্মক আহত হয়ে এখনো মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন অনেকে। নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর শোক ও সমবেদনা এবং আহত ব্যক্তিরা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুক, সেটিই প্রার্থনা। একই সঙ্গে দাবি, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে যথাযথ ব্যবস্থা যেন নেওয়া হয়; তাহলে ভবিষ্যতে এ ধরনের ‘মানবসৃষ্ট’ দুর্যোগ এড়ানো হয়তো সম্ভব।
বলা হয়ে থাকে, দুঃখ ও বেদনার পাশে সদা বিচরণ সুখ আর আনন্দের। বাংলাদেশি হিসেবে আমাদের জন্য দারুণ খুশির বার্তা নিয়ে এসেছে পদ্মা সেতু। বহুদিনের সেই স্বপ্নের সেতু আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করেছে। এমন মহাযাত্রায় সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা।
সবাই নিরাপদে থাকুন, ভালো থাকুন। ঈদ ও বর্ষা উদযাপন আনন্দের হোক।