ই-সোসাইটি I ফেসবুকে রোজগার
সম্ভবত সবচেয়ে জনপ্রিয় ই-সোসাইটি। নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার কিছু নেই
তুমুল জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক থেকে আয়ের কথা অনেকেরই জানা। তবে কী করে করতে হয় তা, হয়তো জানেন না সবাই। যারা জানেন না, তাদের জন্য বাতলে দিচ্ছি কিছু উপায়:
পেজের মহিমা: এই ই-সোসাইটি থেকে আয় করতে খুলে নিন ফেসবুক পেজ। সেই পেজ খুলতে পারেন ব্যক্তি, কোম্পানি, এমনকি নির্দিষ্ট পণ্যের নামে। মানে, নিজের প্রয়োজন বুঝে। তারপর বানাতে থাকুন আকর্ষণীয় কনটেন্ট। পোস্ট করুন সেগুলো। বাড়ান ভিজিটর। তবে আয় করতে চাইলে কিছু বিষয় নিশ্চিত করতে হবে। এই যেমন, আপনার পেজের সক্রিয় ফলোয়ার বা অনুসারী থাকা চাই অন্তত ১০ হাজার। পোস্ট করা তিন মিনিটের ভিডিওতে ১৫ হাজার পোস্ট এনগেজমেন্ট থাকা চাই। অথবা, আপনার ভিডিও মোট ১ লাখ ৮০ হাজার মিনিট দেখা চাই কিংবা নির্দিষ্ট ভিডিওর ভিউ থাকা চাই ৩০ হাজার মিনিট। তবে এই হিসাব করা হবে ভিডিওটি কমপক্ষে এক মিনিট দেখার ওপর। তার মানে, আপনার তিন মিনিটের ভিডিও যদি কেউ এক মিনিটের চেয়ে কম দেখে, তাহলে সেটা হিসাবে ধরা হবে না। অন্যদিকে, নিজের পরিচালনা করা জনপ্রিয় ফ্যান পেজ বিক্রির মাধ্যমেও মোটা অঙ্কের টাকা পকেটে ভরতে পারবেন আপনি!
বিজ্ঞাপনের বাজার: এখান থেকে আয়ের ক্ষেত্রে সেরা উপায় বিজ্ঞাপন হলেও এ মাধ্যম থেকে আয় আসলে অত সহজ নয়। যদি আপনি ক্রিয়েটিভ কনটেন্ট ক্রিয়েটর কিংবা ব্র্যান্ড ম্যানেজার হয়ে থাকেন, তাহলে আপনার পেজ বা গ্রুপে বিজ্ঞাপন পাওয়া তুলনামূলক সহজ হবে। অন্যদিকে, ফেসবুক অ্যাডস ব্রেক হলো এমন সব ছোট ছোট বিজ্ঞাপন, যেগুলো আপনার ফেসবুক ভিডিওতে দেখিয়ে আয় করতে পারবেন।
লাইভে লাভ: লাইভ স্ট্রিমের জন্য ফেসবুক এক দারুণ মাধ্যম। এখানে পাওয়া বিজ্ঞাপন থেকেও টাকা পেতে পারেন আপনি। তবে যথাযথ শর্ত পূরণের পর।
ব্র্যান্ডের জাদু: বিখ্যাত ব্র্যান্ড পেজ কিংবা তারকা ব্যক্তির জন্য ফেসবুক সাধারণত নিজ থেকে তার বিজ্ঞাপন পরিষেবা প্রস্তাব করে থাকে। আপনি নিজে কিংবা আপনার ব্র্যান্ড যদি তেমন হয়ে থাকে, তাহলে তো কথাই নেই! ফেসবুক নিজে থেকে নক না দিলে আপনি নিজেই যোগাযোগ করুন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে।
ভিডিওর দাম: আকর্ষণীয় ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করলে আয়ের সুযোগ বাড়বে। সে ক্ষেত্রে কোনো কনটেন্ট ভাইরাল হয়ে গেলে তো কেল্লা ফতে! তবে আগেই যেমনটা বলেছি, এমন ভিডিও অন্তত তিন মিনিট রানিংটাইমের হওয়া চাই।
গেমের খেলা: ফেসবুকে ভিডিও গেম খেলেও যে আয় করা যায়, এ কথা অনেকেরই হয়তো অজানা। তবে জেনে রাখুন, ফেসবুক কর্তৃপক্ষ সব গেমারকে তাদের ভিডিও গেমগুলো এই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্ট্রিম করার সুবিধা দেয়। এসব খেলায় অংশ নিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা রোজগারের রয়েছে দারুণ সুযোগ।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং: বলা হয়ে থাকে, দিনে প্রায় ২০০ কোটি মানুষ ফেসবুক ব্যবহার করেন। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের জন্য এ এক বিরাট প্ল্যাটফর্ম। তবে সে ক্ষেত্রে দেনদরবারে দক্ষ হওয়া জরুরি। এই মার্কেটিংয়ের সঙ্গে যারা পরিচিত নন, তাদের বলছি: এটি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে অর্থ উপার্জনের সবচেয়ে লাভজনক ও সহজ রাস্তা। এই মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে অনেকেই ঘরে বসে আয় করছেন প্রচুর টাকা। এর একটি মাধ্যম বা উপায় হলো, অনলাইন শপিং ওয়েবসাইট থেকে যেকোনো পণ্য নিজের ফেসবুক পেজে দেখিয়ে বা তাদের প্রমোট করে আপনি কমিশন পেতে পারেন। তবে এ ক্ষেত্রে মূল প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে দরদাম করে নেওয়া ভালো।
স্থানীয় পণ্যের প্রসার: ডিরেক্ট লোকাল প্রোডাক্ট অ্যাডভারটাইজিংয়ের মাধ্যমে অর্থ উপার্জনের সুযোগ রয়েছে ফেসবুকে। সে ক্ষেত্রে আপনার ফ্রেন্ডলিস্টে থাকা বন্ধু, কিংবা নিজের পরিচালিত গ্রুপ অথবা ফ্যান পেজে যারা আছে, তাদের সামনে স্থানীয় কোনো পণ্যের বিজ্ঞাপন উপস্থাপন করতে পারেন। আপনার ফেসবুক ফ্রেন্ড বা ফলোয়ার যত বেশি হবে, তারা ওই সব বিজ্ঞাপনী পোস্টে যত লাইক-কমেন্ট দেবে, তার ওপর নির্ভর করবে আপনার আয়ের সম্ভাবনা। এ ক্ষেত্রে যে প্রতিষ্ঠানের প্রচারণা চালাচ্ছেন, তাদের সঙ্গে একটা জুতসই দেনদরবার আগে থেকেই করে নেওয়া ভালো।
রাখুন খেয়াল: ফেসবুক থেকে আয়ের আরও নানান উপায় রয়েছে। তবে কনটেন্ট তৈরি করার সময় খেয়াল রাখুন, যেন সেটি কোনো ধরনের ঘৃণা কিংবা বিদ্বেষ না ছড়ায়; যেন অন্যের মর্যাদাহানি না করে। একজন নেটিজেন হিসেবে এ আপনার নৈতিক দায়িত্ব।
লাইফস্টাইল ডেস্ক
ছবি: ইন্টারনেট