skip to Main Content

ফরহিম I ডার্মারোলার

জেন্ডারলেস জনপ্রিয় এ বিউটি টুল। ফলে ছেলেদের জন্যও সমান কার্যকর। সৌন্দর্যসংক্রান্ত সমস্যায়

ডার্মারোলার হচ্ছে একধরনের মাইক্রোনিডলিং ডিভাইস বা যন্ত্র; যা ত্বক ও স্ক্যাল্প—উভয় জায়গার জন্যই ব্যবহারের উপযোগী। এই রোলারের পুরোটাজুড়ে ছোট ছোট সূক্ষ্ম সুচ থাকে। যা দিয়ে নিয়মিত ম্যাসাজ রক্তসঞ্চালন বাড়াতে সহায়তা করে। ফলাফল চুল তো বাড়েই, বাড়ে দাড়িও। এমনটাই মত বিশেষজ্ঞদের। তাই ডার্মারোলিংয়ের জনপ্রিয়তা বাড়ছে দ্রুত।
চুলচর্চায়
বয়স বাড়ার সঙ্গেই হোক কিংবা হোক তা স্ট্রেস বা পরিবেশদূষণের প্রভাব—সময়ের সঙ্গে চুল ঝরে যাওয়ার ব্যাপার অনেকটাই স্বাভাবিক। তবে সঠিক ব্যবস্থা নিলে সেই সমস্যারও সমাধান দুরূহ নয়। গবেষণায় দেখা গেছে, এ ক্ষেত্রে ডার্মারোলারের নিয়মিত ব্যবহার কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। চুল পড়া রোধ করার পাশাপাশি উৎপাদন বৃদ্ধিতেও সহায়ক হতে পারে।
i ডার্মারোলারে থাকা ছোট ছোট সুচ চুলের উৎপাদন বাড়াতে পারে। কারণ, এটি ম্যাসাজের ফলে স্ক্যাল্পে ছোট ছোট ফুটোর সৃষ্টি হয়; যা দেহের ন্যাচারাল ইমিউন রেসপন্সকে ট্রিগার করে। ফলে মাথার ত্বকের কোষ দ্রুত পুনরুজ্জীবিত হয়। বাড়ে চুলের উৎপাদন হার।
i যাদের চুল পাতলা হয়ে যাচ্ছে, তাদের জন্য সমাধান হতে পারে ডার্মারোলার। মূলত বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দেহে কোলাজেন উৎপাদনের হার কমতে শুরু করে। ডার্মারোলারের মাইক্রোনিডল কোলাজেন বুস্ট করতে সহায়তা করে। সেই সঙ্গে রক্তসঞ্চালন বাড়ায়। ফলাফল, চুল বাড়ে আরও ঘন ও শক্তিশালী হয়ে।
i ডার্মারোলার ব্যবহারে স্ক্যাল্পের রক্তসঞ্চালন বাড়ে। যার মানে প্রয়োজনীয় পরিমাণে অক্সিজেন ও পুষ্টি সহজে প্রবেশ করতে পারে স্ক্যাল্পে। ফলে চুল মজবুত হয়ে গজায় শুরু থেকেই।
i এটি ব্যবহারে হেয়ার প্রডাক্ট দ্রুত প্রবেশ করতে পারে স্ক্যাল্পে। হেয়ার অয়েল, বুস্টার বা যেকোনো ট্রিটমেন্ট মাথায় দেওয়ার পর ডার্মারোলার দিয়ে ম্যাসাজ করে নিলে পণ্যের পুষ্টিগুণ দ্রুত পৌঁছে যায় একদম গভীরে। কাজও করে আরও কার্যকরভাবে।
কিন্তু চুলে কী করে ব্যবহার করতে হয় ডার্মারোলার? ডার্মারোলিংয়ের শুরুতেই সঠিক ডিভাইসটা বেছে নেওয়া জরুরি। চুলে ব্যবহারের ক্ষেত্রে শূন্য দশমিক ৪ থেকে ১ দশমিক ৫ মিলিমিটার সুচযুক্ত ডার্মারোলার সবচেয়ে উপযোগী। কারণ, সুচ এর চেয়ে বেশি লম্বা হলে তাতে হেয়ার ফলিকলের ক্ষতির আশঙ্কা বাড়ে। পরিষ্কার স্ক্যাল্পে ডার্মারোলার ব্যবহার করতে হবে। তাই প্রথমেই শ্যাম্পু করে নেওয়া প্রয়োজন। তারপর ভালো করে শুকিয়ে নিতে হবে চুল আর স্ক্যাল্প। খেয়াল রাখা চাই ডার্মারোলার পরিষ্কার আছে কি না। স্যানিটাইজ করে নিতে হবে ভালো করে। এতে করে জীবাণু থাকলে তার সংক্রমণ এড়ানো যাবে। চুলে জট থাকলে তা ছাড়িয়ে নিতে হবে। তারপর সমান ভাগে ভাগ করে নিয়ে বুলিয়ে নিতে হবে ডার্মারোলার। এ ক্ষেত্রে স্ক্যাল্পজুড়ে ব্যবহার করা যেতে পারে এ ডিভাইস। বা চাইলে শুধু আক্রান্ত স্থান অর্থাৎ যে স্থানের চুল পড়ে যাচ্ছে, সে জায়গায় ডার্মারোলিং করে নেওয়া যায়। প্রতিটি ভাগে দু-তিনবার রোলার বুলিয়ে নিতে হবে। লম্বালম্বি, আড়াআড়ি এবং কোনাকুনিভাবে। অনেক জোরে চাপ দিয়ে ডার্মারোলার ব্যবহার করা যাবে না। রোল করতে হবে হালকা হাতে। একদম সামান্য খোঁচা খাওয়ার মতো অনুভূতি হতে পারে এটি ব্যবহারের সময়। ডার্মারোলার দিয়ে ম্যাসাজের পর স্ক্যাল্পে মেখে নিতে হবে পছন্দসই হেয়ার অয়েল বা ট্রিটমেন্ট। খেয়াল রাখতে হবে, এই অবস্থায় স্ক্যাল্পে গরম তেল মাখানো যাবে না একদমই। নয়তো ত্বক আরও ইরিটেট হয়ে যেতে পারে; তাই একটা বাটিতে হেয়ার কেয়ার প্রডাক্ট নিয়ে কটন বলের সাহায্যে স্ক্যাল্পে মেখে নিতে হবে। তারপর ম্যাসাজ করে নিতে হবে। এতে স্ক্যাল্প দ্রুত শুষে নেবে পণ্যের সব পুষ্টিগুণ।
দাড়ি নিয়ে দুশ্চিন্তায়
এ ক্ষেত্রেও দারুণ কাজ করে ডার্মারোলিং। ফেশিয়াল হেয়ার অর্থাৎ দাড়ির স্বাভাবিক বৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করতে পারে। মজবুত করে দাড়িকে। ডার্মারোলিংয়ের ফলে ত্বকের রক্তসঞ্চালন বাড়ে, ফলে ফলিকলে প্রয়োজনীয় অক্সিজেন আর পুষ্টি পৌঁছে যায়, যা দাড়িকে ঘন আর স্বাস্থ্যোজ্জ্বল করে তুলতে সহায়তা করে। দাড়িতে ডার্মারোলার ব্যবহারের আগে খেয়াল করতে হবে এর সুচগুলো যেন শূন্য ৫ মিলিমিটার থেকে শূন্য দশমিক ২৫ মিলিমিটার অব্দি লম্বা হয়। ব্যবহারের আগে রোলার অবশ্যই পরিষ্কার করে নিতে হবে। স্যানিটাইজও করে নেওয়া প্রয়োজন। তারপর হালকা হাতে রোলার হরাইজন্টাল, ভার্টিক্যাল আর ডায়াগনাল লাইনে বুলিয়ে নিতে হবে দাড়িজুড়ে। এ ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে, বুলিয়ে নেওয়ার সময় দিক পরিবর্তনের আগে রোলার ত্বক থেকে সরিয়ে নেওয়া চাই। টুইস্ট করে ত্বকে বোলানো যাবে না একদমই। ডার্মারোলিং সেরে বিয়ার্ড গ্রোথ অয়েল বা সেরাম মেখে নিতে হবে দাড়িতে। এর ফলে পুষ্টিগুণ ভালোভাবে প্রবেশ করবে ত্বকে।
চুলে বা দাড়িতে—যেখানেই হোক না কেন, সপ্তাহে দুই দিনের বেশি ডার্মারোলার ব্যবহার না করাই ভালো। আর চেষ্টা করতে হবে মাস দুয়েক বা তিনেক পর ডার্মারোলার পরিবর্তন করে নেওয়ার।

i বিউটি ডেস্ক
মডেল: ফারদিন
মেকওভার: পারসোনা মেনজ
ছবি: হাদী উদ্দীন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top