skip to Main Content

কুন্তলকাহন I ক্রিস্টাল ক্লিয়ার

রংবেরঙের রত্নপাথরে নিরাময় হচ্ছে চুলের নানা সমস্যা। জাদুকরি মনে হলেও যথার্থ প্রমাণ মিলেছে

ক্রিস্টাল বা স্বচ্ছ স্ফটিক। নানা ধরনের খনিজের অবশিষ্টাংশ জমা হয়ে হয়ে তৈরি হয় এগুলো। নির্দিষ্ট পারমাণবিক বিন্যাস আর প্যাটার্নের পুনরাবৃত্তি একেকটি ক্রিস্টালকে করে তোলে অনন্য। প্রাকৃতিকভাবেই দেয় স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য। বহুযুগ পুরোনো বিশ্বাস, ক্রিস্টালের রয়েছে নিরাময়যোগ্য ক্ষমতা। এমন সব বিশেষ বৈশিষ্ট্য, যা দেহ, মস্তিষ্ক ও আত্মাকে পরিশুদ্ধ করতে সহায়ক। প্রশান্তি দিতেও সচেষ্ট। ফলে নানা ধরনের রত্নপাথর খচিত গয়নায় ঝোঁক সেই প্রাচীন আমল থেকেই। এমনকি হোম ডেকরেও এর ব্যবহার বহুল প্রচলিত। পিছিয়ে নেই সৌন্দর্যচর্চাতেও। রোজ কোয়ার্টজ, অ্যামেথিস্ট আর জেডের মতো ক্রিস্টালে তৈরি ফেস রোলার আর গুয়াশার বিপুল জনপ্রিয়তা তারই সুস্পষ্ট প্রমাণ। ফেশিয়াল টুলে ক্রিস্টাল ব্যবহারের ব্যাপকতা এখন সবারই জানা। কিন্তু এ দিয়ে হেয়ার কেয়ার! তুলনামূলকভাবে এখনো নতুন কনসেপ্ট। এর কোনো যথাযথ বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব নেই বটে। কিন্তু বিশ্বাসে মিলায় বস্তু, তর্কে বহুদূর। চুলের যত্নে ক্রিস্টাল ব্যবহারের কনসেপ্টটা মোটেই কঠিন কিছু নয়। ধারণা করা হয়, এগুলোর হিলিং প্রোপার্টি আর এনার্জিতে দেহচক্র প্রভাবিত হয়। মানুষের চুলেও রয়েছে নানা ধরনের এনার্জি। ক্রিস্টালের মাধ্যমে তা প্রভাবিত হয়। যা স্ক্যাল্পে শক্তি জোগায়, বাড়ায় হেয়ার গ্রোথ। এ ছাড়া বিশ্বাস করা হয়, ক্রিস্টাল স্ট্রেস আর উত্তেজনা প্রশমনে সহায়ক। যা সরাসরি প্রভাবিত করে চুলের স্বাস্থ্যে। চুল পড়া কমে, দেখায় স্বাস্থ্যোজ্জ্বল।
কী করে ক্রিস্টাল ব্যবহার করা যায় চুলচর্চায়? এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হচ্ছে ক্রিস্টালকে সঠিকভাবে অ্যাকটিভেট করে নেওয়া। সে ক্ষেত্রে ভালো করে পানিতে ধুয়ে নিতে হবে প্রথমেই। তারপর মুনলাইট অথবা সানলাইটে ডুবিয়ে ক্লিনজিং প্রক্রিয়া সারতে হবে। এটা ভালোভাবে হয়ে যাওয়ার পর ক্রিস্টাল হেয়ার কেয়ারের সবচেয়ে সহজ উপায়টি বেছে নেওয়া যায়। সে জন্য একটি পানিপূর্ণ বোলে পছন্দসই ক্রিস্টাল ডুবিয়ে তা চাঁদ কিংবা সূর্যের আলোতে রেখে দিতে হবে পর্যাপ্ত সময় পর্যন্ত। তারপর এ ক্রিস্টাল ইনফিউজড পানি দিয়ে চুল ধুয়ে নিতে হবে। এ ছাড়া ক্রিস্টাল নিয়ে সরাসরি তা স্ক্যাল্প আর চুলেও মাসাজ করে নেওয়া যায়। সে সময়টুকুতে শুধু ইতিবাচক চিন্তা মাথায় রাখতে হবে। পজিটিভ এনার্জিই এ ক্ষেত্রে মূলমন্ত্র বলে বিশ্বাস অনেকের।
ক্রিস্টাল দিয়ে হেয়ার কেয়ারের ফলে স্ক্যাল্পে রক্তসঞ্চালন বাড়ে। ফলে মাথার ত্বকে থাকা প্রাকৃতিক তেল সবদিকে সমানভাবে ছড়িয়ে পড়ে। এ ছাড়া হেয়ার অয়েলের পুষ্টি পরিপূর্ণভাবে শুষে নিতে পারে স্ক্যাল্প। ফলে চুলের স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ভাব বৃদ্ধি পায়। হয়ে ওঠে ঘন আর বাড়ে দ্রুত।
চুলের চর্চায় বিভিন্ন ধরনের ক্রিস্টাল ব্যবহার করা যায়। এর সব কটিই কোনো না কোনোভাবে চুলের সৌন্দর্য বাড়াতে সহায়ক।
মুন স্টোন
এটি চুলের বৃদ্ধিতে সবচেয়ে বেশি কার্যকর ভূমিকা পালন করে বলে প্রমাণ মিলেছে। যাদের চুল পাতলা এবং ভঙ্গুর, তাদের জন্য মুন স্টোন বিশেষভাবে সহায়ক। এর ব্যবহারে চুল হারানো আর্দ্রতা ফিরে পায়। ফলে ভেঙে যাওয়ার সমস্যা দূর হয়। বলা হয়, ব্যবহারের আগে মুন স্টোনকে পরিষ্কার পানিতে ডুবিয়ে সূর্যের আলোতে রাখতে হবে সাত ঘণ্টা। তারপর তাতে সামান্য অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার মিশিয়ে সংরক্ষণ করতে হবে। তৈরি হয়ে যাওয়ার পর মিশ্রণটিতে সাত ফোঁটা থেকে দুই টেবিল চামচ পানি মিশিয়ে তা সরাসরি ব্যবহার করতে হবে স্ক্যাল্পে।
স্মোকি কোয়ার্টজ
এটি চুলের জন্য যেকোনো ধরনের নেতিবাচক ও ক্ষতিকর শক্তি দূরে সহায়ক। ফলে এর ব্যবহারে চুলের খুশকি দূর হয়, নেতিয়ে পড়া ভাব কাটে এমনকি বন্ধ হয়ে যায় উকুনের উৎপাতও। এই ক্রিস্টালের ব্যবহারে চুলে যোগ হয় বাড়তি উজ্জ্বলতা। চুল নিয়ে ইতিবাচক কিছু ভাবতে ভাবতেই এটি দিয়ে স্ক্যাল্প মাসাজ করে নিলে মিলবে উপকারিতা।
ক্লিয়ার কোয়ার্টজ
এটি স্মোকি কোয়ার্টজের মতোই কার্যকর। এ ছাড়া স্ক্যাল্পে জমে থাকা দূষণ দূরে সহায়ক। খুশকি দূর করে চুলের বৃদ্ধি ঘটাতে এই ক্রিস্টালের কার্যকারিতা সবচেয়ে বেশি। পরিষ্কার পানিতে এটি ডুবিয়ে সূর্যের আলোতে কিছুক্ষণ রাখার পর ব্যবহার উপযোগী হয়ে ওঠে। তখন এই পানি দিয়ে চুল ধুয়ে নিলেই চলবে।
ব্ল্যাক অনিক্স
হেয়ার প্রটেক্টর হিসেবে নামডাক রয়েছে এই স্টোনের। শুধু খুশকি আর নেতিয়ে যাওয়াই রোধ করে না, এটি চুলে জোগায় জরুরি পুষ্টি। এটি ব্যবহারের জন্য পরিষ্কার পানিতে ডুবিয়ে চাঁদের আলোর নিচে রেখে দিতে হবে পর্যাপ্ত সময়। তারপর এই জেম ইনফিউজড পানি দিয়ে চুল ধুয়ে নিতে হবে ভালো করে। ব্যস!

i জাহেরা শিরীন
মডেল: রিচি
মেকওভার: পারসোনা
ছবি: তানভীর খান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top