অ্যাডভার্টোরিয়াল I গ্ল্যাম মেকওভারের পথচলা
নাজিফা তাবাসসুম। গ্ল্যাম মেকওভারের প্রতিষ্ঠাতা। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক করেছেন। মজার ব্যাপার হলো, তিনি এমন এক ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে এসেছেন, যেখানে তার মা-বাবা দুজনই মাইক্রোবায়োলজিস্ট। তা ছাড়া মেকআপ বিষয়ে শুরুতে তার কোনো আগ্রহও ছিল না। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় এ নিয়ে ভাবতে শুরু করেন।
গ্ল্যাম মেকওভারের যাত্রা এত সহজ ছিল না, জানালেন নাজিফা। একসময় একটি ইন-হাউস মেকওভার ব্যবসা শুরু করার জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম কিনে এনেছিলেন। সেই মুহূর্ত থেকেই ধীরে ধীরে স্বপ্নের ব্যবসা গড়ে তোলা শুরু। আর এই মাধ্যম নিয়ে ধারণার বীজ বুনতে থাকেন। সে জন্য তাকে নতুন অনেক কিছু শিখতে হয়েছিল। আর তা আন্তরিকভাবেই শিখেছেন গ্ল্যামার ইন্ডাস্ট্রির প্রতি তিনি যথেষ্ট আগ্রহী বলে। জীবনের সেই পর্যায়ে নাজিফা নিজের অস্তিত্ব যথাযথভাবে জানান দেওয়ার পণ করেছিলেন।
৬০ হাজার টাকা মূলধন দিয়ে তার ব্যবসার যাত্রা শুরু। অল্প সময়েই আয় দ্বিগুণ হয়েছে। নারীকে সুন্দর করার প্রতি তার নিদারুণ ভালোবাসা এবং নিজে বড় হতে চাওয়ার জন্য যে ত্যাগ, সেটিকেই পাথেয় মনে করেন এই উদ্যোক্তা।
শুরুতে অন্য সবার মতো তাকেও কিছু প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে লড়তে হয়েছে। প্রথমত এই শিল্পের কাউকে তেমন চিনতেন না। এই লাইনের কাজের সঙ্গে তার ব্যাকগ্রাউন্ড ও পারিপার্শ্বিকতার কোনো সম্পর্ক ছিল না। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এবং যথেষ্ট গবেষণার ফলে নাজিফা ও তার প্রতিষ্ঠান বিকশিত হতে থাকে। পণ্য থেকে মডেল নির্বাচন পর্যন্ত সবকিছু নিজ উদ্যোগে করতে থাকেন। অবশ্য, মা-বাবাকে বোঝাতে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি। কেননা, সন্তানের স্বপ্নপূরণের পথে তারা দুজন উৎসাহ জুগিয়ে এসেছেন। নাজিফা নিজের পড়াশোনার ব্যাপারে ছিলেন দায়িত্বশীল। একসময় টিউশনিও করেছেন। তাতে যোগাযোগ বাড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা দ্রুত রপ্ত হয়েছে তার।
ক্লায়েন্ট ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কাজ করা বেশ কঠিন, জানেন নাজিফা। তবে এসব তিনি নিজেই সামলান। এ ব্যাপারে প্রতিদিন নতুন অনেক কিছু শিখছেন। তার প্রতিষ্ঠানের সেবা নিয়ে বেশির ভাগ ক্লায়েন্ট সন্তুষ্ট। এটি তাকে এগিয়ে চলার প্রেরণা জোগায়। অন্যদিকে, অভিজ্ঞতার আলোকে তিনি বুঝতে পারেন, ক্লায়েন্টদের জন্য কী ভালো; সেই অনুযায়ী কাজ করেন।
সুন্দর অবয়ব নারীর শৈলী ও চেহারার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। পার্টি, বিয়ে, নৈমিত্তিক কিংবা করপোরেট অনুষ্ঠানে ট্রেন্ডি লুকের জন্য বিনিয়োগ করাকে এখন আর কেউ অপচয় বলে না; বরং এটি জীবনযাপনের প্রয়োজনীয় অংশে পরিণত হয়েছে বলে অভিমত এই উদ্যোক্তার। তিনি বিশ্বাস করেন, আমাদের কেমন দেখায় এবং কীভাবে নিজেদের উপস্থাপন করি, তা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। গ্ল্যাম মেকওভারের আরোপিত সৌন্দর্য যে কারও চোখকে আনন্দদায়ক অভিজ্ঞতা দেবে।
রাজধানীর নিকেতনে অবস্থিত এই মেকওভার স্টুডিওর পথচলা শুরু ২০২০ সালে, করোনা অতিমারির মধ্যে। এর সিইও ও প্রতিষ্ঠাতা নাজিফা তাবাসসুম সৌন্দর্যশিল্পের প্রতি তার সংকল্প ও আবেগের জন্য বেশ সুপরিচিত। ঢাকার শেরাটন হোটেলে গত ৩০ জুলাই অনুষ্ঠিত বায়োজিন প্রেজেন্টস ‘বিজনেস লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড ২০২২’-এ বলিউড তারকা শিল্পা শেঠির কাছ থেকে উদীয়মান মেকআপ আর্টিস্ট হিসেবে পুরস্কার গ্রহণ করেছেন। তিনি জানালেন, গ্ল্যাম মেকওভারের সেবার অফারগুলোর আওতায় প্রধানত ট্রেন্ডিং হেয়ারস্টাইল ও মেকআপ অন্তর্ভুক্ত। প্রতিষ্ঠানটি দেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি মাথায় রেখে ক্লায়েন্টের চেহারার সেরা সৌন্দর্য বের করে আনতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটির সেবাগুলোতে সৌন্দর্য বিশেষজ্ঞরা পোশাক, গয়না ও মুখের কাঠামো বিবেচনা করে স্টাইলারের অনুভূতির সঙ্গে মিলিয়ে ডিজাইন করেন।
‘কোয়ালিটি আপনাকে একটি ব্র্যান্ড নির্বাচন করার পথ সহজ করে দেয়। গ্ল্যাম মেকওভার পণ্যের মান যে কাউকে তার ভেতরের সৌন্দর্য অনুভব করতে সাহায্য করে। প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহকদের যথাযথ মূল্যায়ন করে। সে জন্যই আমদানি করা উচ্চ মানসম্পন্ন পণ্য প্রয়োগ করা হয়, যার নিখাদ মিশ্রণে যে কাউকে কমনীয় দেখাতে বাধ্য। বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিসমৃদ্ধ উপাদানের ব্যবহার সংবেদনশীল স্কিনগুলোকে মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে আসে,’ বলেন নাজিফা।
তিনি আরও জানান, গ্ল্যাম মেকওভার হলো একটি বর্ণালি সৌন্দর্য পরিষেবা কেন্দ্র, যেখানে চুলের স্টাইল ও মেকআপের মতো কাজগুলো করা হয়। প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহকদের আরও ভালোভাবে পরিষেবা দেওয়ার জন্য আরও বেশি চিন্তাশীলতা, আরও কাজ করার প্রত্যয় এবং নিজেদের কাজকে চ্যালেঞ্জ করে নিজেদের মান ক্রমাগত বাড়িয়ে চলেছে। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নিরবচ্ছিন্ন সেবা দেওয়ার জন্য এটি প্রতিদিনই খোলা থাকে। পরিচ্ছন্নতার সঙ্গে গ্রাহকদের সেবা দিতে ইনহাউস আর্টিস্ট ও হেয়ারস্টাইলিস্টদের প্রশিক্ষণ দেয় গ্ল্যাম মেকওভার।
বিভিন্ন মেকওভার শৈলীতে কাজ করার ক্যারিশমাটিক অভিজ্ঞতা তাদের মেকওভার বাজারে প্রতিযোগীদের থেকে আলাদা করেছে বলে দাবি নাজিফার। তিনি জানান, গ্ল্যাম মেকওভার গ্রাহকদের প্রয়োজন বোঝে এবং সেই অনুযায়ী তাদের প্রত্যাশা পূরণ করে। সব সময় উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে ফলাফলে পরিণত করায় বিশ্বাসী এই সৌন্দর্যসেবা প্রতিষ্ঠান।
নাজিফা তাবাসসুম বলেন, ‘মেকওভারপ্রেমীদের জন্য গ্ল্যাম মেকওভার এমন একটি অলরাউন্ড স্টুডিও, যেখানে কাজে কিংবা শিল্পে ঐশ্বরিক আকর্ষণ খুঁজে পাওয়া যায়। এটি জনপ্রিয় তারকা, ইভেন্ট কোম্পানি, ফটোগ্রাফি প্রজেক্ট, বিখ্যাত পোশাক ও গয়না ব্র্যান্ড, ম্যাগাজিন, শুট এবং রিসেপশনের মতো বিশাল স্কেলের গ্রাহকদেরও সেবা পরিবেশন করে।’
গ্ল্যাম মেকওভারের সাম্প্রতিক অর্জন ‘মিরর বিজনেস লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড ২০২২’ ফ্যাশন শোর মেকআপ পার্টনার হিসেবে কাজ করা, যেখানে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রির ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, সংগীত তারকা তাহসানের পাশাপাশি ভারতীয় অভিনেত্রী শিল্পা শেঠি ও গায়ক অনুপম রায় উপস্থিত ছিলেন। তাতে গ্ল্যামের দায়িত্ব ছিল ফ্যাশন শোতে মডেলদের আকর্ষণীয় রূপে হাজির করা।
নাজিফার মতে, একটি সঠিক ও ফলাফলভিত্তিক পদ্ধতি বাজারে বজায় রাখা কঠিন; কিন্তু নিয়মিত সৃজনশীল কাজে গ্ল্যাম মেকওভার সেটি সহজেই করতে পারছে। মেকওভার স্পেসকে সামনের সারিতে রাখতে এই প্রতিষ্ঠান প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। একই সঙ্গে সৃজনশীল হওয়ার তত্ত্বেও বিশ্বাসী।
বিউটি ডেস্ক
ছবি: গ্ল্যাম মেকওভারের সৌজন্যে