ফিচার I উষ্ণতা অন্দরমহলে
শীতে ঘর গরম রাখার প্রাকৃতিক উপায়, চলুন জানি
বাইরে মিহি কিংবা কনকনে ঠান্ডা। ঘরের ভেতরে পড়ে তার প্রভাব। শীতে ঘর গরম রাখার বহু চেষ্টা-চরিত্র করেও কূল পান না অনেকেই। কাঁপতে কাঁপতে ভাবতে থাকেন, কী করা যায়! কেউ কেউ রুম হিটার জাতীয় পণ্যের দিকে বাড়ান হাত। কেউবা খোঁজেন প্রাকৃতিক উপায়। এই দ্বিতীয় দলে যারা আছেন, তাদের জন্য হাজির করা হলো কিছু সহজ বুদ্ধি।
কার্পেট কর্ম
ঘরের মেঝেতে ব্যবহার করতে পারেন কার্পেট। যথাসম্ভব পুরো ও পশমের হলে ভালো; অনেকটা কম্বলের মতো যেগুলো। তাতে মেঝেতে পা রাখলে যেমন ঠান্ডার যন্ত্রণা বিদ্যুৎতের মতো সারা শরীরে একঝলকেই খেলে যাবে না, তেমনি ঘরেও থাকবে একটা উষ্ণ ভাব। দুর্মূল্যের এই বাজারে কার্পেট কেনার বাজেট যদি না থাকে, মন খারাপের কিছু নেই। রয়েছে সহজ ঘরোয়া সমাধান। পুরোনো চাদর ফেলে না দিয়ে বিছিয়ে রাখুন মেঝেতে। বেশ কাজে দেবে। তবে কার্পেট কিংবা চাদর, যা-ই ব্যবহার করুন না কেন, আগে পরিষ্কার করে নিন। ব্যবহারকালেও, সময়ে-সময়ে করুন পরিষ্কার। অন্যথায় রোগজীবাণু বাসা বাঁধতে পারে।
রঙের জাদু
আপনার ঘরের দেয়ালের রং কেমন? খুবই কোমল? তাহলেই সেরেছে! সম্ভব হলে শীতে রংটা বদলে নিন। দেয়ালগুলো রাঙিয়ে নিন উজ্জ্বল রঙে। যেমন লাল, কমলা প্রভৃতি। কারণ, এসব রঙের তরঙ্গদৈর্ঘ্য তুলনামূলক বেশি। ফলে ঘরের ভেতর তাপমাত্রা বেশি সময় ধরে আটকে রাখতে পারে। যদি দেয়ালের রং পাল্টে ফেলা ঝক্কি মনে হয়, তাহলেও অসুবিধা নেই। অভ্যন্তরীণ গৃহসজ্জায় আনুন খানিকটা অদলবদল। জানালার পর্দা, বিছানার চাদর, সোফার কভার ইত্যাদি ব্যবহার করুন উজ্জ্বল রঙের। এ ছাড়া বড় লাইটের বদলে ঘরজুড়ে ব্যবহার করুন ছোট ছোট লাইট। তাতে আলো যেমন আরও বেশি ছড়িয়ে পড়বে, বাড়বে উষ্ণতাও।
পর্দা পর্ব
প্রাকৃতিকভাবে সূর্যের চেয়ে বেশি উষ্ণতা আর কীই-বা দিতে পারে! তাই রোদেলা দিনে দরজা-জানালার পর্দাগুলো সরিয়ে রাখুন; আলো আসতে দিন। আলোর সঙ্গে সঙ্গে উষ্ণতাও হুড়মুড়িয়ে ঢুকে পড়বে আপনার ঘরে। আর সন্ধ্যা নামতেই পর্দাগুলো টেনে দিন ভালো করে, যেন রোদের সঙ্গে উষ্ণতাও পালাতে না পারে! শীতের দিনে দরজা-জানালার পর্দা যে একটু ভারী ও মোটা পরতের হওয়া চাই, সে কথা তো জানাই আছে আপনার, তাই না?
ছিদ্র অন্বেষণ
না, ছিদ্রান্বেষী হতে বলছি না আপনাকে; বরং বলছি ছিদ্র অন্বেষণ করতে! ঘরের এখানে-ওখানে ছোট-বড় কিছু ছিদ্র রয়েই যায়। শীত এলে খুঁজে খুঁজে সেগুলো বের করুন, যেন সেই ফাঁকতালে হুড়মুড়িয়ে ঠান্ডা হাওয়া ঢুকে পড়তে না পারে অন্দরমহলে। ছিদ্রগুলোকে প্রয়োজনমতো রাবার বেল্ট, কাগজ কিংবা সিলভার ফয়েলের সাহায্যে বন্ধ করে দিন।
হট পট
গোসলেই শুধু নয়, আরও অনেক কাজেই গরম পানির দরকার পড়ে এ সময়ে। সে ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি হট ওয়াটার পট কিংবা হট ওয়াটার ব্যাগ কিনে এনে, সেগুলোতে গরম পানি ভরে ছড়িয়ে রাখুন ঘরের নানান জায়গায়। দেখবেন, মৃদু উষ্ণতা ছড়াচ্ছে আপনাআপনি! অন্যদিকে, গরম পানিতে গোসল করার সময় সম্ভব হলে বাথরুমের দরজা একটু খোলা রাখুন। সেই উষ্ণতা অন্য রুমগুলোতেও ছড়িয়ে পড়বে। তবে গরম পানি নাড়াচাড়ায় সাবধান! সামান্য অসতর্কতায় হয়ে যেতে পারে ভয়ানক বিপদ।
দেয়াল সামাল
দেয়াল ফাঁকা রাখতেই পছন্দ করেন অনেকে। কারও আবার দেয়ালজুড়ে সাজিয়ে রাখা চাই বিভিন্ন পোস্টার, ক্যানভাস কিংবা ট্যাপেস্ট্রি। এই দ্বিতীয় দলে যারা, তারা তুলনামূলক বেশি আরাম পাবেন শীতের দিনে। অন্যদিকে, প্রথম দলের লোকদের বলব, খুব বেশি পছন্দ না হলেও দেয়ালটাকে ছবি কিংবা অন্য কোনো অনুষঙ্গ দিয়ে যথাসম্ভব ঢেকে রাখুন। সম্ভব হলে বুকশেলফ রাখুন দেয়াল ঘেঁষে। দেয়াল তাহলে কথা বলবে উষ্ণতার ভাষায়!
লাইফস্টাইল ডেস্ক
ছবি: ইন্টারনেট