বিশেষ ফিচার I বিশ্ব কাঁপে বিশ্বকাপে আমরা আছি চায়ের কাপে- সুমন্ত আসলাম
সাঁইত্রিশ বছর পর দেশে ফিরেছেন মুকিম সাহেব। স্কটল্যান্ডে থাকেন তিনি। এয়ারপোর্টের সব ঝামেলা শেষ করে বাইরে এলেন, গাড়িও ভাড়া করলেন একটা। গাড়ি চলতে শুরু করেছে এয়ারপোর্টের প্রশস্ত রাস্তা দিয়ে। কিছুদূর এগোনোর পর হঠাৎ বাম পাশে তাকালেন, ঝট করে ডান পাশেও। স্থবির হয়ে গেলেন তিনি সঙ্গে সঙ্গে; হাত-পা সংকুচিত হয়ে গেল তার; কী করবেন, তাৎক্ষণিক ভেবে পেলেন না, ঘন ঘন এপাশ-ওপাশ তাকিয়ে চিৎকার করে উঠলেন অবশেষে, ‘এই, এই, গাড়ি ঘুরাও, কুইক।’
‘কেন স্যার!’
‘ঘুরাতে বলছি ঘুরাও।’
‘কোনো কিছু ফেলে এসেছেন নাকি?’
‘আহ্, বেশি কথা বলো না তো, ঘুরাতে বলেছি ঘুরাও।’
সামনের ইউটার্ন নিয়ে গাড়ি ঘোরাতে ঘোরাতে চালক বললেন, ‘স্যার, এটা ভুল দেশ স্যার, এই দেশে কেউ কিছু হারিয়ে ফেললে তা আর খুঁজে পাওয়া যায় না।’
‘ভুল দেশ মানে!’ মুকিম সাহেব একটু ঝুঁকে বসলেন ড্রাইভারের দিকে, ‘এটা কোন দেশ?’
‘এটা বাংলাদেশ।’ তাচ্ছিল্য, প্রচ্ছন্ন একটা অবজ্ঞাও ড্রাইভারের গলার স্বরে।
‘বাংলাদেশ!’ মুকিম সাহেব আবার ডানে-বামে বাইরে তাকালেন, চোখ বড় হয়ে গেল তার আগের মতো, ‘কই, এটা তো বাংলাদেশ মনে হচ্ছে না। প্রথমে ভেবেছিলাম আর্জেন্টিনা, ডান দিকে তাকানোর পর মনে হলো ব্রাজিল। আরও একটু ভালো করে তাকিয়ে দেখি জার্মানি, ফাঁকে ফাঁকে অন্য দেশও মনে হচ্ছে। মহা তাজ্জব ব্যাপার! স্ট্রেঞ্জ, এ আমি কোন দেশে পড়লাম!’
‘এটা মনে হওয়ার কারণ কী স্যার?’
‘চারদিকে কেবল ব্রাজিল, আর্জেন্টিনার পতাকা। বাংলাদেশ হলে অন্য দেশের পতাকা উড়বে কেন, তা-ও আবার হাজার হাজার!’
‘এখন তো বিশ্বকাপ চলছে স্যার।’
‘বিশ্বকাপ চলছে!’ মুকিম সাহেবের গলায় দ্বিধা।
‘জি, স্যার।’
মুকিম সাহেব ম্লান একটা হাসি দিলেন, ‘যে দেশে শীতের কাপড়ের অভাবে বেশ কয়েকজন মানুষ মারা যায় প্রতিবছর, সেই দেশে এত কাপড়—এত টাকা খরচ করে অন্য দেশের পতাকা বানানো হয়, রাস্তা-ঘাটে, ছাদে-দালানে ওড়ানো হয়!’ মুকিম সাহেব দুপাশ ভালো করে তাকিয়ে কিছুটা স্বস্তির গলায় বললেন, ‘প্রথমে ভেবেছিলাম অন্য কোনো দেশে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে আমাকে, ভুল করেছে এয়ারলাইনস কর্তৃপক্ষ, তাই দ্রুত ফেরত যেতে চাচ্ছিলাম এয়ারপোর্টে। যাক…।’ গলায় কিছুটা আনন্দ ভর করেছে এখন, ‘এখনো অনেক সবুজ গাছ আছে আমাদের দেশে!’
অর্ধেক তার করিয়াছে নারী অর্ধেক তার নর
বাবর সাহেব চায়ের কাপে আয়েশ করে একটা চুমুক দিয়ে বউকে বললেন, ‘তোমার সঙ্গে একটা চুক্তি আছে আমার।’
অফিসফেরত কাপড় গোছাতে গোছাতে মিতি বললেন, ‘কীসের চুক্তি?’
‘আগামী এক মাস রাত জেগে আমি বিশ্বকাপ খেলা দেখব, সাথে তুমিও দেখবে।’ বাবর সাহেব চায়ে আরও একটা চুমুক দিলেন, ‘চা-ও বানিয়ে দেবে তুমি। ফাইনাল খেলা শেষে দামি একটা জিনিস দেব তোমাকে।’
কিছু বললেন না মিতি। কেবল স্বামীর দিকে তাকিয়ে মুচকি একটা হাসি দিলেন, চোখ দুটোও ছলছলিয়ে উঠল তার।
খেলা শেষ হলো এক মাসে।
পরের দিন। অফিস থেকে ফিরলেন বাবর সাহেব, হাতে ছোট্ট একটা প্যাকেট। বাড়িয়ে দিলেন স্ত্রীর দিকে, ‘এটার ভেতর হীরের একটা নাকফুল আছে। হাসতে হাসতে একবার চেয়েছিলে তুমি।’
‘হঠাৎ এটা!’
‘এক মাস না ঘুমিয়ে খেলা দেখায় সঙ্গ দিয়েছ তুমি আমাকে, যখন যা খেতে চেয়েছি, খেলার সময় বানিয়ে দিয়েছ।’
প্যাকেটটা খুলে দেখলেন না মিতি। বাম হাতে নিলেন ওটা, ডান হাতটা স্বামীর বাম বুকের একটু ওপরে রাখলেন, ‘প্যানক্রিয়াটাইটিসের ব্যথা আছে তোমার। মাঝে মাঝে জেগে ওঠে ওটা। ঘুুমাতে পারো না সারা রাত। সঙ্গে আমিও জাগি। খেতে তুমি পছন্দ করো। যা খেতে ইচ্ছে করে, বলো আমাকে, বানিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করি। এভাবেই এগারোটা বছর কেটে গেল। আর মাত্র একটা মাস রাতে জেগে ছিলাম তোমার সঙ্গে, চা-কফি, এটা-ওটা বানিয়ে দিয়েছি, তার পুরস্কারস্বরূপ এই নাকফুল।’ হাসতে থাকেন মিতি, ‘সংসারে প্রতিদিনই কোনো না কোনো খেলা হয়, সেটাতে স্বামী জেতে কখনো, কখনো স্ত্রী। রাগ-অভিমান, ভালোবাসা-প্রেম, চাওয়া-পাওয়ার এই খেলাতে দুজন একসঙ্গে জিতে যায় কখন, জানো?’
বাবর সাহেব কিছু বললেন না, কেবল চোখ দুটো সরু হয়ে গেল তার।
স্বামীর বুকে হাতটা আরও একটু ঠেসে দিয়ে মিতি বললেন, ‘যখন দুজন দুজনকে সয়ে যায়, মেনে নেয় আপোসে।’
নিজের বুকে রাখা স্ত্রীর হাতের ওপর হাত রাখলেন বাবর সাহেব। প্যাকেটসহ বাম হাতটা ওই হাতে এবার চেপে দিলেন মিতি, ‘নাকফুল এনেছ, কিন্তু আমার নাকে তো ফুটোই নেই, নাকে ফুটো করিনি আমি। ছোটখাটো এসব বিষয়ে খেয়াল করা হচ্ছে মনোযোগের খেলা, অন্যকে ইম্পর্ট্যান্স দেওয়ার খেলা।’ শব্দ করে হেসে ওঠেন এবার মিতি, আলতো মাথা রাখেন তিনি হাত দুটো সরিয়ে।
ঘুম ঘুম চাঁদ, ঝিকিমিকি তারা, বিশ্বকাপের রাত…
রাত জেগে খেলা দেখা মানেই ঘুমের ব্যাঘাত। চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী, চিকিৎসক, উকিল—সবাই খেলা দেখতে ভালোবাসেন। ভালোবাসে বাচ্চারাও। আর ঘুমে ব্যাঘাত হওয়া মানে দেরি করে ঘুম থেকে ওঠা।
স্কুলের সবচেয়ে দুষ্ট ছেলে বাপ্পী আর সায়ন। দেরিতে ক্লাসে ঢোকার জন্য স্যার ওদের দাঁড় করিয়ে বললেন, ‘বাপ্পী, বিশ্বকাপ তো শেষ, এখন স্কুলে আসতে দেরি হচ্ছে কেন?’
‘সে এক বিরাট গবেষণা স্যার।’ চোখ দুটো সামান্য ছোট করে বুদ্ধিজীবীর মতো বাপ্পী বলল, ‘গত রাতে জটিল একটা হিসাব করতে বসেছিলাম স্যার। প্রতি রাতে একটা ছাত্র যদি খেলা বাবদ ৫-৬ ঘণ্টা নষ্ট করে, তাহলে একটা দেশের কী পরিমাণ আর্থিক, সামাজিক, বৈশ্বিক ক্ষতি সাধিত হয়?’ দীর্ঘ একটা শ্বাস ছেড়ে বাপ্পী বলল, ‘সেটার রেজাল্ট বের করতে করতেই রাতটা কেটে গেল স্যার।’
‘সায়ন?’ সায়নের দিকে তাকালেন স্যার।
‘রাত জেগে খেলা দেখতে দেখতে দুদিন আগে টের পেলাম, চোখ দুটো কেমন ঝাপসা হয়ে গেছে আমার। দূরের জিনিস ভালো দেখতে পাই, কাছের জিনিস তেমন দেখতে পাই না। আর কাছের জিনিস যদি ভালো করে দেখতেই না পাই, তাহলে লেখাপড়া করব কীভাবে! শেষে বাবা-মা ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেল আমাকে। ডাক্তার কাকু বেলা এগারোটা পর্যন্ত ঘুমাতে বলেছেন আমাকে। কিন্তু তাকে বলে-কয়ে সাড়ে দশটা পর্যন্ত রাজি করিয়েছি। তাই…।’
কে বড়, কে বেশি ওজনদার
চিরাচরিত ঘটনার মতো ঘটে এসেছে যে ঘটনাটা, সেটা হলো—পেলে বড়, না ম্যারাডোনা? ব্যাপারটা সুরাহা হয়নি ব্রাজিল-সমর্থকদের কাছে, আর্জেন্টিনা-সমর্থকদেরও।
প্রতিবছর শীত আসার মতো প্রতি বিশ্বকাপেও ব্যাপারটা আসে। এক যুগ ধরে যেহেতু রোনালদো আর মেসি তাদের শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রাখার চেষ্টা করেছেন, সেহেতু প্রশ্নটা এবারও এসেছে—কে বড়; রোনালদো, না মেসি?
রোনালদো সম্প্রতি একটা সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘আমি জানি না, রুনি কেন আমাকে এত তীব্রভাবে সমালোচনা করে। সম্ভবত সে খেলা ছেড়ে দিয়েছে, আর আমি এখনো শীর্ষ পর্যায়ে খেলে চলেছি, এ জন্য।’ এরপর মুচকি হেসে রোনালদো বলেন, ‘এটা বলতে চাই না যে, তার চেয়ে আমি দেখতে ভালো…।’
রোনালদো বলতে চাক অথবা না চাক, এটা তো সত্যি—রোনালদো মেসির চেয়ে দেখতে সুন্দর। আবার এটাও সত্যি—মেসি ৭ বার বিশ্বসেরা, রোনালদো ৫ বার। আরও সত্যি হচ্ছে—মেসি একজনকে নিয়েই সংসার করছেন, রোনালদো বেশ কয়েকজনের সাথে। রোনালদোর ফিগার ভালো, মেসির দাড়ি আছে; রোনালদো নামে আরেকজন লিজেন্ড খেলোয়াড় আছে ব্রাজিলে, মেসি নামে কোনো খেলোয়াড় নেই অন্য কোনো দেশে; রোনালদো ব্যাক শটে গোল করতে পারদর্শী, মেসি ফ্রি কিকে—আরও কত কী!
অবশেষে আমরা ফিফার দ্বারস্থ হতে পারি। ফিফা কাকতালীয়ভাবে কিংবা স্বপ্নঘোরে আচ্ছন্ন হয়ে সেই দায়িত্ব দিল বাফুফেকে। বাফুফে রোনালদো আর মেসিকে ডেকে এনে বলল, ‘তোমাদের দুজনের মধ্যে কে সেরা, কে ওজনদার, তার পরীক্ষা করব আমরা—ওয়াসার এমডি, বাফুফে সভাপতি আর বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি—এই তিনটি পদে দায়িত্বে থাকা ওনাদের সময়ের যোগফলের সঙ্গে ৩৩০১ গুণ করলে যে সংখ্যা বের হবে, বাংলাদেশ সেই সালে বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ লাভ করবে। এবার বলো—সেই সংখ্যাটার বৈজ্ঞানিক নাম কী?’
জাদুঘর
তারিখ : ২১৫১ সাল।
স্থান : মাদারটেক ফুটবল জাদুঘর।
ফুটবল খেলতে চাওয়া ১১ জন ছাত্রকে নিয়ে জাদুঘরে গেছেন বিদ্যাবাসিনী উচ্চবিদ্যালয়ের বিজ্ঞান শিক্ষক ব্রজমোহন রায়। সারা জাদুঘর ফাঁকা, কোথাও কিছু নেই।
সপ্তম শ্রেণির রিটলু স্যারের একটা হাত টেনে ধরে বলল, ‘স্যার, এটা আপনি কোথায় নিয়ে এলেন! এখানে তো কিছুই নেই।’
মুচকি হাসলেন স্যার। রিটলুর হাতটা চেপে ধরে এগিয়ে গেলেন আরও একটু, সঙ্গে বাকি ১০ ছাত্র। বিশাল হলরুমের মতো এক কোনায় কাচঘেরা একটা বাক্স। তার সামনে গিয়ে দাঁড়াল সবাই।
বাক্সের ভেতর একটা ফুটবল রাখা আছে। সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল সেই বলটার দিকে। সাধারণ একটা বল, কেবল চামড়াটা একটু কুঁচকে গেছে। রিটলু হঠাৎ শব্দ করে বলল, ‘স্যার, ভেতরের ওটা তো ঠিক বল মনে হচ্ছে না, মানুষের মাথার মতো মনে হচ্ছে!’
‘তুমি ঠিকই বলেছ, ওটা একটা মাথা।’ স্যার সবাইকে নিয়ে সরে এলেন বাক্সের সামনে থেকে। একটু ফাঁকে এসে বললেন, ‘আমাজনের জঙ্গলে একটা জাতি আছে। নিজেদের মধ্যে তারা যাকে শত্রু মনে করে এবং অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন না করে, তার মাথা কেটে ফুটবল খেলার মতো একটা খেলা খেলে তারা। সবশেষে কাঠের একটা বাক্সে রেখে দিয়ে সবার জন্য প্রদর্শন করে।’
‘এইটা তাহলে কার মাথা, স্যার?’
‘সম্ভবত আমাজনের জঙ্গলের কিংবা উগান্ডার কোনো দায়িত্ব পালন না করা সুবিধাভোগীর।’ ব্রজমোহন স্যারের গলাটা কেমন কাতর শোনাল সবার কাছে।
কুইজ
‘আমরা শক্তি আমরা বল’—এই লাইনে কাজী নজরুল ইসলাম যেটা বোঝাতে চেয়েছেন, তার চেয়েও বড় কথা হচ্ছে—বল খেলতে শক্তি লাগে। সম্ভবত রবি ঠাকুর সে জন্যই আকুতি করেছিলেন—‘বল দাও মোরে বল দাও,’ অবশ্য তার সেই প্রার্থনা কিংবা আকুতি স্রষ্টা শোনেনি।
ফুটবল খেলার বল বা শক্তি না পেলেও একটা বিষয়ে আমাদের অসীম বল বা উৎসাহ। সেটা হলো কুইজ বা কুইজে অংশগ্রহণ। আর বিশ্বকাপ এলেই কুইজের বি-শা-ল হাট—গাড়ি, বাড়ি, বিদেশ ভ্রমণ—আরও কত কী!
তো এই বিশ্বকাপ উপলক্ষে হয়ে যাক একটা কুইজ—
[সঠিকটিতে টিক চিহ্ন দিন, জিতে নিন অনেক কিছু]
প্রশ্ন ০১: ফুটবলে এত পিছিয়ে যাচ্ছে কেন বাংলাদেশ?
ক. দেশে জাম্বুরার ফলন আশঙ্কাজনকভাবে কমে গেছে যে!
খ. খেলার মাঠ কেটে সবাই এখন মাগুর-তেলাপিয়া-পাঙাশের চাষ শুরু করছে
গ. গরুর দুধে প্রচুর ভেজাল, খেলেও আগের মতো শরীরে বল উৎপাদিত হয় না এখন
প্রশ্ন ০২: ফুটবলে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ কী?
ক. মঙ্গল গ্রহে একটা ডিজিটাল মাঠ নির্মাণ করা
খ. চামড়ার উৎপাদন বাড়িয়ে ভালো ভালো ফুটবল তৈরি করা
গ. প্রতি ফুটবল বিশ্বকাপে সমর্থকদের মাঝে হাডুডু খেলার প্রতিযোগিতা করা
প্রশ্ন ০৩: ফুটবলের উন্নতির জন্য আমরা কয় সদস্যের সরকারি কর্মকর্তাকে প্রতিবছর বিদেশে পাঠাতে পারি?
ক. ১২৩ সদস্যের
খ. ২৪৮ সদস্যের, স্ত্রী-ছেলে-মেয়েসহ
গ. ৪৫৭ সদস্যের, স্ত্রী-ছেলে-মেয়ে-শ্বশুর-শাশুড়ি-শ্যালক-শ্যালিকাসহ।
ইলাস্ট্রেশন: দিদারুল আলম দিপু