skip to Main Content

কুন্তলকাহন I ড্রাই কন্ডিশনার

বাজারের গতানুগতিক কন্ডিশনার থেকে একদম আলাদা। ফর্মুলায় তো বটেই, কার্যকারিতায়ও। ড্রাই শ্যাম্পুর সেরা সঙ্গী

ড্রাই শ্যাম্পু। চেনেন না এমন মানুষ খুব কমই মিলবে। কিন্তু ড্রাই কন্ডিশনার? কনসেপ্টটা অতটা জনপ্রিয় নয় এখনো। তাই বলে কার্যকারিতায় কিছু কম যায় না; বিশেষ করে নেতিয়ে পড়া কিংবা চুলের উড়ুউড়ু ভাব বশে আনতে। অনেকের কাছেই লিভ ইন কন্ডিশনারের স্প্রে ইন ভার্সন এটি। তবে ওজনে পলকা। আর চলতে-ফিরতে ব্যবহারের সুবিধা তো থাকছেই।
ড্রাই কন্ডিশনার মূলত স্প্রে ফর্মুলার হয়ে থাকে। লিভ ইন কন্ডিশনারের মতো ব্যবহার করা যায় এটি। চুল ভেজাতে হয় না। বেশ হালকা টেক্সচারের, তাই চুলে মেখে নিলে বাড়তি ভারী ভাব তৈরি হয় না। ড্রাই শ্যাম্পুর মতো পাউডারি নয় এটি। তরল একটি প্রসাধন। মূলত তৈরি করা হয় তেল এবং অন্যান্য কন্ডিশনিং উপাদান ব্যবহার করে।
ড্রাই কন্ডিশনার মূলত বাহুল্যবর্জিত, সহজে ব্যবহার উপযোগী একটি প্রসাধন। ব্যবহার বিধি অনেকটা ড্রাই শ্যাম্পু অথবা হেয়ার স্প্রের মতোই। কিন্তু ফারাক রয়েছে প্লেসমেন্টে। ড্রাই শ্যাম্পু দেওয়া হয় চুলের গোড়ায় আর ড্রাই কন্ডিশনার মাখা হয় চুলের মাঝ বরাবর অংশ থেকে ডগা অব্দি। ব্যবহারে তেমন কোনো ঝক্কি নেই বললেই চলে। ব্যবহার করার আগে ঝাঁকিয়ে নেওয়া যেতে পারে। এতে করে সব উপাদান একত্র হবে। তারপরে চুলে স্প্রে করে নিলেই চলবে। এই সময়ে চুল আর স্প্রের মধ্যকার দূরত্ব ছয় থেকে আট ইঞ্চি হলে ভালো হয়। সেই সঙ্গে সাবধান থাকার চেষ্টা করতে হবে যেন চুলের গোড়ার অংশ এবং তালু স্প্রের ছোঁয়া থেকে দূরে থাকে। চুলের এই অংশ দুটি কন্ডিশনার থেকে দূরে রাখার পরামর্শ দিয়ে থাকেন বিশেষজ্ঞরা। জানা যায়, কন্ডিশনারের সঙ্গে মাথার ত্বক এবং গোড়ার জায়গাটির সংস্পর্শের কারণে চুল তার শক্তি হারায়। সে সঙ্গে চটচটে আঠালো ভাব তৈরি হয়। তাই এই ড্রাই কন্ডিশনার খানিকটা দূরে রেখে ব্যবহার করলেই ভালো। তারপর আলতো হাতে ঘষে ঘষে ধীরে ধীরে পুরো চুলে ছড়িয়ে দিতে হবে কন্ডিশনার। এ ছাড়া একটি মোটা দাঁতের চিরুনি ব্যবহার করে আঁচড়ে নিয়ে তারপর চুলে খানিকটা হিটও দিয়ে নেওয়া যায়। ড্রাই কন্ডিশনার ব্যবহারের পরে চুলে মৃদু উষ্ণ হাওয়ার স্পর্শ দিলে কন্ডিশনার ছড়িয়ে পড়বে সম্পূর্ণ চুলে। শুধু একটি জায়গায় আটকে থাকবে না। এতে চুলের টেক্সচার মসৃণ হবে। ড্রাই শ্যাম্পু সাধারণত স্প্রে ফর্মুলার হওয়ায় চুলের সর্বত্র ছড়িয়ে ব্যবহার করা খানিকটা কষ্টকর এবং সময়সাপেক্ষ। তাই চুলের সর্বত্র কন্ডিশনার পৌঁছে দেওয়ার জন্য স্প্রে করে নেওয়ার খানিকক্ষণ পরে হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহারের এ পদ্ধতি বেশ কার্যকর।
সপ্তাহের মাঝে চুলের গ্ল্যামারাস ভাব ফিরিয়ে আনার জন্য যখন সাহায্য প্রয়োজন হয়, তখন ড্রাই শ্যাম্পুর মতো কন্ডিশনারও দারুণ সহায়ক। ড্রাই শ্যাম্পু কাটাবে মাথার ত্বকের তেলে ভাব আর চুলের নেতিয়ে পড়া। অন্যদিকে ড্রাই কন্ডিশনার চুলের হারিয়ে যাওয়া উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনবে, করে তুলবে মসৃণ। কমাবে উষ্কখুষ্ক ভাব। মূলত পাতলা থেকে মাঝারি ও ঘন চুলের জন্য বেশি উপযোগী ড্রাই কন্ডিশনার।
ড্রাই হেয়ার কন্ডিশনার চুলে স্থায়ী কোনো পরিবর্তন এনে দিতে পারে না। এটি অল্প সময়ের একটি সমাধান। ব্যস্ততার মাঝে কিংবা হিম শীতল আবহাওয়ায় যখন পানিতে চুল ভেজানো কঠিন হয়ে পড়ে, তখনকার জন্য দারুণ সমাধান এটি। চুলের নিষ্প্রাণতাও দূর হতে পারে ড্রাই কন্ডিশনার ব্যবহারে। বাতাসে ধুলার উপস্থিতি, চুলে তেলের কমতি ছাড়াও নানা কারণে চুল তার উজ্জ্বলতা হারিয়ে ফেলে অনেক সময়। ড্রাই কন্ডিশনার ব্যবহার এসব সমস্যার সমাধান হতে পারে অল্প সময়ে।
ত্বকের মতোই চুলের ক্ষেত্রে আর্দ্রতা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যার ঘাটতিতে চুল প্রাণ হারায়। হয়ে পড়ে শুষ্ক, নির্জীব। এমন সব দিনে চুলের প্রাণ ফেরাতে পারে ড্রাই কন্ডিশনার। এটি ব্যবহারে অল্প সময়ের জন্য হলেও চুল হবে মসৃণ। চুলের নিষ্প্রাণতা দূর হবে। বাড়বে উজ্জ্বলতা।
এর ব্যবহারে চুলে বাড়তি ভার তৈরি হয় না বলে অস্বস্তি অনুভূত হওয়ার আশঙ্কা কম। ড্রাই কন্ডিশনার স্প্রে ফর্মুলায় হওয়ায় সাধারণত চুলের সঙ্গে খুব সুন্দরভাবে মিশে যায়। চটচটে, ভারী ভাব তৈরি না করেই। কিছু কিছু প্রডাক্ট আবার টু ইন ওয়ান। ড্রাই শ্যাম্পু আর কন্ডিশনারের মিশেল। এগুলো চুলে থাকা গন্ধ এবং তেল সরিয়ে দেয়। অর্থাৎ শুষে নেয়। ফলে চুলে বাড়তি তেল থাকে না বললেই চলে। এ কারণে চুল ঝরঝরে হয়ে ওঠে। সকালে ঘুম থেকে উঠে তেলতেলে চুল অথচ হাতে সময় নেই এমন দিনগুলোতে এই প্রসাধন হতে পারে কুইক সল্যুশন। চুল আঁচড়ে নিয়ে তাতে ড্রাই কন্ডিশনার ব্যবহার করলেই চলবে। চুল হয়ে উঠবে রেডি টু গো আউট।
কিছু কিছু ড্রাই কন্ডিশনার চুলকে পারফেক্টলি রেডি করে তোলার পাশাপাশি আরও কিছু সুবিধা দিয়ে থাকে। যেমন চুলকে ক্ষতিকর ইউভি রশ্মি থেকে রক্ষা করে এবং চুলকে তাপ থেকে সুরক্ষিত রাখে। নিত্যদিন ঘরের বাইরে যাদের দৌড়ঝাঁপের জীবন, তাদের জন্য এটি একটি মাস্ট হ্যাভ আইটেম।

 সারাহ্ দীনা
মডেল: আয়শা
মেকওভার: পারসোনা
ছবি: তানভীর খান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top