হোমগ্রোন I জোনাকি
কর্ণধার: নাসরিন জামির
মূল পণ্য: সুগন্ধি
ওয়েবসাইট: Jonakifragrance.com.bd
আউটলেট: ইউনিমার্ট, আলমাস, ঢালি
জোনাকি, বাংলাদেশের সুগন্ধি। যাত্রা শুরু ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে। জোনাকির কর্ণধার নাসরিন জামির। সবুজ পাহাড়ের কোল ঘেঁষে কেটেছে তার ছোটবেলা। চট্টগ্রামের মেয়ে নাসরিনের বাবা-মা ফুল ভালোবাসতেন। ফুলের সুবাস মেখে শৈশব কেটেছে তার। সেই সুবাসিত ফুলবাগানে ছিল মায়াময় আলোর জোনাকির ঝালর। সেই প্রিয় ‘জোনাকি’ নামেই সুগন্ধি লেবেল নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন নাসরিন।
নাসরিন জামির পেশায় একজন আর্কিটেক্ট। প্রায় ত্রিশ বছর ধরে কাজ করছেন স্থাপত্য সেক্টরে। পেশার বাইরে ভিন্ন কিছু করার ইচ্ছা থেকে আগ্রহী হন সুগন্ধি নিয়ে কাজ করতে। জানতে শুরু করেন এ বিষয়ে। দেশ-বিদেশের সুগন্ধিতে নাক ডুবিয়ে বোঝার চেষ্টা করেন সুবাসের গভীরের গল্প। ফ্রান্সের পারফিউমের প্রতি মুগ্ধতা কিশোর বেলার। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হারিয়ে যেতে দেননি সে অনুভূতিকে; বরং আঁকড়ে ধরে সবাইকে জড়ো করতে চেয়েছেন দেশি ব্র্যান্ডের ব্যাপকতায়। পরবর্তী সময়ে পরিকল্পনা করেন, দেশেই তৈরি করবেন নিজের ব্র্যান্ডের সুগন্ধি। সেই ইচ্ছা থেকে প্রথমবারের মতো আমেরিকা থেকে কাঁচামাল সংগ্রহ করেন ২০১৯ সালে। সেই শুরু। জোনাকি সুগন্ধির কাঁচামালের সংগ্রাহক নাসরিন জামির নিজেই।
বাংলাদেশের সুগন্ধি ব্র্যান্ড জোনাকির জন্য কাঁচামাল সংগ্রহ করা হয় আমেরিকান কোম্পানি আইএফএফ থেকে। সুগন্ধি প্রস্তুত করা হয় আরেক দেশ মালয়েশিয়ায়। আর প্যাকেজিং, লেবেলিংয়ের ডিজাইনের শৈল্পিক কাজ বাংলাদেশেই সম্পন্ন করেন নাসরিন। শুরু থেকে শেষ- সব পর্যায়েই তিনি যুক্ত। পারফিউম তৈরির আগে বোঝার চেষ্টা করেন, ঠিক কেমন সুগন্ধি এখন পছন্দ করছেন বাংলাদেশের মানুষ। কেমন চাহিদা তাদের। নাসরিন জামির মনে করেন, সুগন্ধি অদৃশ্য অলংকার। এটি দেখা যায় না। কিন্তু মানুষের সৌন্দর্যবর্ধনে, ব্যক্তিত্ব বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে সুগন্ধি। তাই গবেষণা থেকে শুরু করে প্যাকেজিং অবধি নিজেই থাকেন তত্ত্বাবধানে।
প্রতিটি সুগন্ধিরই আলাদা গল্প থাকে। প্রকৃতির সঙ্গে মিশে থাকে সেই গল্পগুলো। ফ্লোরাল, উড, স্যান্ডাল, তাবাক- এমন নানা রকম সুগন্ধের মধ্য থেকে খুঁজে তৈরি করা হয় একটি স্বতন্ত্র গন্ধ। নাসরিন জামির তাই প্যাকেজিং প্রক্রিয়াকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন। তিনি প্যাকেজিংয়ের নকশার জন্য রং বেছে নেন সুগন্ধি প্রস্তুতে ব্যবহৃত উপাদানের কথা মাথায় রেখে।
বর্তমানে জোনাকির লাইনআপে আছে ৫টি পারফিউম। তিনটি নারীদের এবং দুটি পুরুষদের জন্য। নাসরিন জামিরের মাধ্যমে জানা গেল, একেকটি সুগন্ধি প্রস্তুতে সময় লাগে অন্তত ৯ মাস। তারপরে বাদবাকি ল্যাব টেস্ট আর প্যাকেজিংয়ে দরকার হয় আরও এক মাসের মতো। সব মিলিয়ে ১০ মাস লাগে একটি সুগন্ধি প্রস্তুতকরণে।
বর্তমানে জোনাকির লেবেলে নারীদের ফ্র্যাগরেন্স পাওয়া যাচ্ছে তিনটি। এগুলো হচ্ছে, ফ্রেশিয়া নাইটস, নোরালি ব্লোসম, ওরিয়েন্টাল জেসমিন। ফ্রেশিয়া লাইটসে মূলত দোলনচাঁপার সুগন্ধ পাওয়া যায়। নোরালি ব্লোসমের সুবাস সতেজতায় সমৃদ্ধ। সিট্রাসের রিচ নোটস আছে এতে। ওরিয়েন্টাল জেসমিন বেশ খানিকটা স্ট্রং স্মেলের।
পুরুষদের পারফিউম আছে দুটি। আমারেট্টো হলো বেশ স্পোর্টি। আবার একই সঙ্গে এটি অ্যাকুয়েটিক হওয়ায় সতেজ সুবাস পাওয়া যায়। অন্যটি স্যান্ডাল তাবাক। মূলত সন্ধ্যার সুবাস, অর্থাৎ ইভনিং সেন্ট হিসেবে দারুণ। হালকা ফুলেল সুবাসের সঙ্গে উডি ফ্লেভারের মিশ্রণ। স্ট্রং।
জোনাকি ব্র্যান্ডের প্রসাধনী লাইনে আরও আছে লিপস্টিক, কম্প্যাক্ট পাউডার এবং জেল আইলাইনার। লাইফস্টাইল লাইনে পাওয়া যাবে কুশন কাভার, শতভাগ সুতির স্কার্ফ আর মসলিনের স্কার্ফ।
জোনাকি ব্র্যান্ডের পণ্যের সোল ডিস্ট্রিবিউটর স্কয়ার গ্রুপ। বর্তমানে রাজধানীর বেশ কয়েকটি সুপারশপে পাওয়া যাচ্ছে পণ্যগুলো। এ ছাড়া অনলাইন সাইটেও আছে। জোনাকির নিজেরও রয়েছে অনলাইন শপ।
সারাহ্ দীনা
ছবি: জোনাকির সৌজন্যে
Best wishes for Jonaki