এই শহর এই সময় I ফেস্ট ফ্যাক্ট
উৎসবে মাতোয়ারা ছিল গত মাস। হিমশীতল রাজধানীতে দেশি দর্শনার্থীদের সঙ্গে ছিল বিদেশিদেরও স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ। এর মধ্যে বড় ধরনের উৎসবের সূচনা ঘটে সাহিত্য ঘিরে। শুধু সাহিত্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না তা; সঙ্গী করেছিল গান, নৃত্যকলা, চলচ্চিত্র, মঞ্চনাটকসহ শিল্প-সংস্কৃতির অন্য মাধ্যমগুলোকেও। বলছি ঢাকা লিট ফেস্টের কথা। ৫ থেকে ৮ জানুয়ারি বাংলা একাডেমিতে বসেছিল এই উৎসবের দশম আসর। তাতে প্রায় অর্ধসহস্র লেখক, কবি, অভিনয়শিল্পী, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, ক্রীড়াবিদ, সমাজকর্মী এবং বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত ব্যক্তিত্বদের বসে মিলনমেলা। এ উপলক্ষে অনুষ্ঠিত হয় ১৭০টির বেশি সেশন। এবারের আসরে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ছিলেন নোবেলজয়ী তানজানিয়ান-ব্রিটিশ লেখক আবদুলরাজাক গুরনাহ, ভারতীয় সাহিত্যিক আমিতাভ ঘোষ, আন্তর্জাতিক বুকার পুরস্কারজয়ী ভারতীয় লেখক গীতাঞ্জলি শ্রী, সোমালিয়ান ঔপন্যাসিক নুরুদ্দিন ফারাহ, ব্রিটিশ অভিনেত্রী টিলডা সুইনটন, কবি জয় গোস্বামী প্রমুখ। নুরুদ্দিন ফারাহ বলেন, ‘আমার আবাসভূমি কেপটাউনে যখন ফিরে যাব, বন্ধুরা আমাকে জিজ্ঞেস করবে, কেমন ছিল এবং এটি বিশ্বের অন্যান্য উৎসব থেকে আলাদা কি না? আমি সারা বিশ্বের অনেক উৎসবে অংশ নিয়েছি। ঢাকা লিট ফেস্ট আয়োজকদের এবং এখানকার লোকজনের কাছ থেকে কীভাবে প্রচণ্ড উষ্ণতা অনুভব করেছি, সে সম্পর্কে বন্ধুদের জানাব।’
এদিকে, চলচ্চিত্র ঘিরে বহুলকাঙ্ক্ষিত উৎসব ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের এবারের আসর বসে ১৫ জানুয়ারি। তাতে বাংলাদেশ, ভারত, চীন, তুরস্ক, ইরান, যুক্তরাষ্ট্র, শ্রীলঙ্কাসহ ৭১টি দেশের ২৫২টি চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হয়। বাংলাদেশি চলচ্চিত্র ছিল ৮১টি, এগুলোর মধ্যে ১২টি পূর্ণদৈর্ঘ্য এবং ৬৯টি স্বল্প ও স্বাধীন চলচ্চিত্র। প্রদর্শনীস্থল ছিল বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব মিলনায়তন, বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তন, জাতীয় আর্ট গ্যালারি মিলনায়তন, নন্দন থিয়েটারের উন্মুক্ত মাঠ, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় সংগীত ও নৃত্যকলা মিলনায়তন, স্টার সিনেপ্লেক্স (বসুন্ধরা সিটি) এবং আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ। এ উপলক্ষে বেশ কিছু সেমিনারের পাশাপাশি মাস্টার ক্লাসেরও ছিল আয়োজন। রেইনবো ফিল্ম সোসাইটি আয়োজিত এই মর্যাদাপূর্ণ চলচ্চিত্র উৎসবের সমাপনী ঘটে ২২ জানুয়ারি। এতে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ১৮টি পুরস্কার দেওয়া হয়। এবার সেরা চলচ্চিত্রের পুরস্কার পায় সৈয়দ মোর্তেজা ফাতেমি পরিচালিত ইরানি চলচ্চিত্র ‘বি-মাদার’।
খোলা চত্বরে ইয়োগা ম্যাট পেতে একসঙ্গে ইয়োগা করছেন একদল দেশি-বিদেশি নারী-পুরুষ—এমন দৃশ্য রাজধানীতে বিরল। সেই বিরল দৃশ্যেরই দেখা মিলল ১৩ জানুয়ারি, গুলশান সোসাইটি লেক পার্কে। স্বাস্থ্য, সুস্থতা ও প্রকৃতিকে উদযাপনের লক্ষ্যে সেখানে দিনব্যাপী বসেছিল ঢাকা ফ্লো ফেস্টিভ্যাল। দেশে কোনো ইয়োগা ও ওয়েলনেস ফেস্টিভ্যাল এটাই প্রথম। তাতে ওয়েলনেস প্রডাক্ট বিক্রেতা, ফিটনেস টিচার, নিরাময়কারী ও ব্যক্তিবিশেষনির্বিশেষে লাইফস্টাইল-সংক্রান্ত সব সংযোগ ও একটি কমিউনিটি গড়ার উদ্দেশ্যে একত্র হন অংশগ্রহণকারীরা। উৎসবের হোস্ট এবং ইয়োগা ইনস্ট্রাক্টর ও লেখক সাজিয়া ওমর বলেন, ঢাকা ফ্লো এমন একটি ওয়েলনেস মুভমেন্ট, যার উদ্দেশ্য হলো স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের ওপর আলোকপাত করা। উৎসবে সম্মিলিত ইয়োগা চর্চার পাশাপাশি ছিল নানা আয়োজন।
i লাইফস্টাইল ডেস্ক
ছবি: সংগ্রহ