skip to Main Content

ফরহিম I টিপস ফর হিম ফ্রম হার

প্রিয় নারীর সৌন্দর্যে শুধু বুঁদ হয়ে থাকলেই চলবে না, তার কাছ থেকে নিতে পারেন সৌন্দর্যের পাঠ। তাতে আখেরে মঙ্গল

পুরুষ হোক বা নারী, সৌন্দর্যচর্চায় মনোযোগ দেখা যায় দুদলেই। সৌন্দর্যচর্চা শুধু নারীরাই করবেন, এই ধারণা থেকে বেরিয়ে এসেছেন অনেকেই। বরং পুরুষও প্রিয় নারীর কাছ থেকে টিপস নিতে পারেন বিউটি কেয়ারের বিষয়ে। একই সঙ্গে দুজন মিলেও করতে পারেন রূপচর্চা। এতে ত্বকের যত্ন যেমন হবে, তেমনি হবে সম্পর্কের যত্নও।
এক্সফোলিয়েট
ছেলে হোক বা মেয়ে—সবার ত্বকই প্রাকৃতিকভাবে ৩০ দিন পর পর নতুন কোষ তৈরি করে। এরপর স্কিনে যে ডেড সেল থাকে, মূলত এগুলোকেই এক্সফোলিয়েটরের সাহায্যে তুলে ফেলা হয়। ত্বকের ধরন যেমন-ই হোক, এক্সফোলিয়েট জরুরি। রেগুলার ফেসওয়াশের চেয়ে এক্সফোলিয়েটর ব্যবহারে স্কিন এক ধাপ বেশি পরিষ্কার হয়। উজ্জ্বলতাও বাড়ে। অনেক দিন ধরে জমে থাকা মৃতকোষ ত্বকের পোরসগুলো লক করে দেয়, এক্সফোলিয়েটের মাধ্যমে সেই পোরসগুলো ওপেন হয়ে যায়। ফলে ত্বকে ব্রেকআউট হওয়ার শঙ্কা কমে অনেকাংশে। যাদের ত্বকে রেগুলার ব্রণ হওয়ার আশঙ্কা বেশি, অর্থাৎ অ্যাকনে প্রোন, তাদের জন্য এক্সফোলিয়েট বেশ কাজে দেয়। মেয়েরা তাদের স্কিন টাইপকে প্রাধান্য দিয়ে এক্সফোলিয়েট নির্বাচন করেন। ছেলেদের ক্ষেত্রেও বিষয়টি মনে রাখা ভালো। ত্বকের ধরন বুঝে ব্যবহার করলে উপকার পাওয়া যাবে পরিপূর্ণভাবে।
ময়শ্চারাইজার
ত্বক মসৃণ রাখতে ছেলেদেরও স্কিনে ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করা চাই রেগুলার। এতে হাইড্রেটেড, কোমল এবং প্রাণবন্ত ভাব বাড়ে। শীত হোক কিংবা গরম—বছরজুড়ে ত্বক ময়শ্চারাইজেশন মাস্ট বলে অভিমত বিশেষজ্ঞদের। ক্রিমে স্বস্তি না পেলে বেছে নিতে পারেন জেল বেসড ময়শ্চারাইজার। এটি স্কিনের ব্যারিয়ার ধরে রাখতে বেশ কাজে দেয়।
সানস্ক্রিন
ইদানীং অনেক নারী প্রতিদিনের স্কিন কেয়ার রুটিনে রাখেন সানস্ক্রিন। মেয়েদের কাছ থেকে ছেলেরাও রপ্ত করতে পারেন এই অভ্যাস। সানস্ক্রিন ব্যবহারে ত্বকের ওপরে একটি মসৃণ প্রলেপ তৈরি হয়, যা রোদ ও দূষণের মাঝে ঢাল হয়ে দাঁড়ায়। একই সঙ্গে রোদের অতিবেগুনি রশ্মি থেকেও রেহাই মেলে। ত্বকের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কার্যকর এই প্রসাধন। ব্যবহারে নিয়মিত হওয়া চাই। পরিষ্কারেও হওয়া চাই সচেতন। কেনার আগে নজর দেওয়া চাই এসপিএফে। আমাদের দেশের তাপমাত্রায় এসপিএফ অন্তত ৩০+ নেওয়া উচিত বলে জানা গেছে।
পিম্পল ক্রিম
বেশির ভাগ সময় ছেলেরা পিম্পল জিনিসটাকে একদমই গুরুত্ব দেন না। কিন্তু চেহারায় ছোট্ট একটা পিম্পলই আপনার সৌন্দর্যের মাত্রা কমিয়ে দিতে পারে কয়েক গুণ। মেয়েরা পিম্পল দ্রুত সারিয়ে তোলার জন্য ব্যবহার করেন নানা ধরনের ক্রিম। যেহেতু ছেলেরা বেশির ভাগ সময় বাইরে থাকেন এবং ধুলাবালি, রোদ—এসবে স্কিন অনেকটাই সেনসিটিভ হয়ে যায়, তাই পিম্পল ক্রিম ব্যবহারের অভ্যাস শুরু করা উচিত তাদেরও। এ ক্রিম ব্যবহারে শুধু পিম্পল সেরেই যাবে না, পিম্পলের দাগও মিলিয়ে যাবে চটজলদি। তবে ব্যবহারের আগে অবশ্যই যেতে হবে ত্বক বিশেষজ্ঞের কাছে। জেনে নিতে হবে কোন ক্রিমটি কার্যকর।
হেয়ার প্রডাক্টে মিনিমালিস্ট
চুল সুস্থ রাখার জন্য মেয়েরা অনেকেই নানা ধরনের প্রডাক্ট ব্যবহার করেন; ব্যতিক্রম নন ছেলেরাও। শ্যাম্পু, কন্ডিশনারের পাশাপাশি হেয়ার জেলে নিয়মিত অনেকে। ব্যবহারে চাই সতর্কতা। চুলের ধরন ও চাহিদা বুঝে শ্যাম্পু বেছে নিন। হাতের তালুতে এক কয়েন পরিমাণ শ্যাম্পু নিয়ে আলতোভাবে মাসাজ করুন চুলে। প্রথমবার ব্যবহারের পরও চুল ভালোভাবে পরিষ্কার না হলে দ্বিতীয়বার সমপরিমাণ শ্যাম্পু নিয়ে ওয়াশ করুন। চেষ্টা করুন চুলে অতিরিক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকার। কেননা, অতিরিক্ত শ্যাম্পু ব্যবহারে চুল রুক্ষ হওয়ার শঙ্কা থাকে। শ্যাম্পুর পরে কন্ডিশনার ব্যবহারে মনে রাখতে হবে, চুলের গোড়া যেন থাকে নিরাপদ। কন্ডিশনার চুলের গোড়ার দিক থেকে ব্যবহার করুন, স্ক্যাল্পে নয়।
জেল ব্যবহারে জেল্লা বাড়ে, তবে অতিরিক্ত ব্যবহারে আসতে পারে বিপত্তি। বেশি জেল ব্যবহার করলে চুলে একটা ফ্রিজি ভাব চলে আসার ঝুঁকি থাকে। তা ছাড়া চুলের গোড়ায় জেল বেশিক্ষণ জমে থাকলে চুল পড়ার প্রবণতা বেড়ে যায়। জেল পরিষ্কারেও হওয়া চাই সাবধান। জেল নিয়ে ঘুম কোনোভাবেই নয়। দিন শেষে চুল ধুয়ে নিলেই স্বস্তি।
হিট প্রটেকটিভ সেরাম
চুলের যত্নে সবাই একটু এক্সট্রা কেয়ারফুল। মেয়েরা সাধারণত হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহার করার আগে হিট প্রটেকটিভ স্প্রে ব্যবহার করে নেন। হিট লাগার ফলে চুলে যে ড্যামেজ হওয়ার শঙ্কা থাকে, এতে তা কমে যায় অনেকটাই। এই চর্চা মানতে পারেন ছেলেরাও। হেয়ার ড্রায়ার দিয়ে শুকিয়ে নেওয়ার আগে চুলে হালকা প্রয়োগ করতে পারেন হিট প্রটেকটিভ স্প্রে। এতে ড্যামেজ হওয়া থেকে খানিকটা রক্ষা পাবে চুল।
বডি ওয়াশ
বডি ওয়াশে ব্যবহার করা হয় মাইল্ড উপাদান। এতে স্কিন থাকে কোমল। এ ছাড়া বডি ওয়াশ লিকুইড হওয়ায় ব্যবহারেও বেশ কমফোর্টেবল।
পায়ের যত্ন
পায়ের যত্নে ছেলেদের আলসেমি বরাবরই একটু বেশি! অথচ সামান্য যত্নের অভাবে আপনার সুন্দর পদযুগল হয়ে যেতে পারে শুষ্ক ও নির্জীব। এ ছাড়া পায়ের নখ ভেঙে যাওয়া থেকে শুরু করে গোড়ালি ফেটে যাওয়ার ঘটনাও ঘটতে পারে। তাই মাসে অন্তত একবার চলে যেতে পারেন কোনো জেন্টস পার্লারে। করতে পারেন পেডিকিউর। এতে বিভিন্ন ধাপে স্ক্রাবিং, এক্সফোলিয়েট, ক্লিনজিং, ময়শ্চারাইজিংয়ের কারণে পায়ের যত্ন হবে বেশ ভালোভাবে। পায়ের রেগুলার যত্নে পেডিকিউর ছাড়াও কিছু ছোট ছোট স্টেপ ছেলেরা ফলো করতে পারেন। বাসায় ফিরে হালকা কুসুম গরম পানিতে পা ভিজিয়ে রাখতে পারেন কিছুক্ষণ। তারপর নরম কোনো ফুট ব্রাশ দিয়ে আলতো করে ঘষে নিন। এতে পায়ের মরা চামড়া উঠে আসবে সহজেই। এরপর পায়ে লাগিয়ে নিন মশ্চারাইজার। আর হ্যাঁ, নখগুলোও নিয়মমাফিক কাটতে ভুলবেন না। নখ কাটার পরে করে নিতে পারেন হালকা শাইনিংও।

 সাদিয়া আফরিন আইভী
মডেল: পলাশ
মেকওভার: পারসোনা মেনজ
ছবি: কৌশিক ইকবাল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top