skip to Main Content

এই শহর এই সময় I বসন্ত বাতাসে

শীত বিদায় নিয়েছে। রাজধানীর আবহাওয়ায় গরম ছড়াচ্ছে উত্তাপ। সঙ্গে বসন্তের বাতাস। এমন দিনে থেমে নেই শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতিকেন্দ্রিক বোঝাপড়া। শহরের বিভিন্ন অংশে নানা আয়োজনে শিল্প-সংস্কৃতিমনা মানুষের ভিড়েও নেই কমতি। নাটক, চলচ্চিত্র ও চিত্রকর্ম প্রদর্শনী কিংবা সাহিত্য ও গানের আসর—চলছে সমানতালে।

বউদের পাঠশালা

এরই ফাঁকে উঁকি দেওয়া যাক দূর অতীতের এক গল্পে। প্যারিসের এক জনবহুল চৌরাস্তার মোড়ে আর্নোলফির বাড়ি। এই ধনী বুড়ো বাড়ি ফেরে দিনকয়েক পর, লা সূচি ছদ্মনাম নিয়ে। মনে বাসনা—শিশুকাল থেকে পালিত আগনিসকে বিয়ে করা। ছয় বছর বয়স থেকেই আগনিস স্বপ্নবিলাসী হয়ে ওঠে বুড়ো আর্নোলফির সঙ্গে সংসার সাজানোর। বাধ্যগত স্ত্রীদের মতো পাঠ দিয়ে বড় করা হয় তাকে। কিন্তু একদিন আর্নোলফির এক বন্ধুর ছেলেকে দেখে তার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ে আগনিস। প্রেম হয়ে যায় তাদের। ঘটনাচক্রে সেই প্রেমিক তাদের প্রেমের সফল পরিণতির জন্য সাহায্য চায় ছদ্মবেশী আর্নোলফির কাছে। পরিচয় ফাঁস হয়। বুড়ো আর্নোলফি কঠোরভাবে জানিয়ে দেয়, শুধু তাকেই বিয়ে করতে পারবে আগনিস।

শিল্পযোগ

তাই আগনিসকে করতে হবে বাধ্যগত স্ত্রীদের মতো আচার-আচরণ। সংক্ষেপে এই হলো কাহিনি। ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজে ফ্রঙ্কোফোনি উৎসবের অংশ হিসেবে কিংবদন্তি ফরাসি নাট্যকার মলিয়েরের বিখ্যাত নাটক ‘দ্য স্কুল অব ওয়াইভস’-এর হয়ে গেল ব্যতিক্রমী মঞ্চায়ন। বাংলায় ‘বউদের পাঠশালা’ শিরোনামে এ নাটক নির্দেশনা দিয়েছেন আশীষ খন্দকার। ১০ ও ১১ মার্চ আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের আঙ্গিনায় মঞ্চস্থ হয় নাটকটি। অভিনয় করেন মোহাম্মদ আমিন, টথো থিমোথিউ, রাকিবুল হাসান, ওমর ফারুক খান, জারিন চাকমা, মনীষা অর্চি প্রমুখ।
‘প্রলয় বাজাও গানে, সাহস জাগাও প্রাণে’ স্লোগান নিয়ে ১০ মার্চ বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ভাষাশহীদদের শ্রদ্ধা নিবেদনের মাধ্যমে শুরু হয়েছিল তিন দিনের সত্যেন সেন গণসংগীত উৎসব। বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী আয়োজিত এই উৎসবের উদ্বোধন করেন লোকশিল্পী সাইদুর রহমান বয়াতি। এ সময় ঢাক-ঢোলের শব্দে মুখর হয়ে ওঠে চারপাশ। নানা রঙের আবির ছড়িয়ে নাচ-গানে মেতে ওঠেন উদীচীর শিল্পী-কর্মীরা। উৎসবের সমাপ্তি ঘটে ১২ মার্চ সন্ধ্যায়, ছায়ানট মিলনায়তনে অতিথি শিল্পীদের সমবেত কণ্ঠে গণসংগীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে। শুধু উৎসব নয়, এই আয়োজনে একই সঙ্গে ছিল জাতীয় গণসংগীত প্রতিযোগিতাও। তাতে দেশের ৫৮ জেলার শিল্পীরা অংশ নেন। সব মিলিয়ে গণসংগীতে মুখর ছিল রাজধানীর সাংস্কৃতিক তল্লাট।

গণসংগীত উৎসব

৩ থেকে ৭ মার্চ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালার ৭ নম্বর গ্যালারির দেয়ালগুলো সেজেছিল ক্যালিগ্রাফির বর্ণিল সাজে। এম এম আর্ট ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘শিল্পযোগ’ শীর্ষক এই ক্যালিগ্রাফি প্রদর্শনীতে ছিল আরবি ও বাংলার বর্ণচ্ছটা। তাতে বাংলা অক্ষরে ফুটে উঠেছিল আমাদের দেশের মানচিত্র থেকে শুরু করে বাঙালি জাতিসত্তার চেতনাস্নাত নানা স্লোগান। আরবিতে নান্দনিকভাবে আঁকা ছিল পবিত্র ধর্মগ্রন্থের নানা আয়াত। ছিল আল্লাহ ও মহানবীর বন্দনা। নানা শ্রেণি-পেশার দেড় শতাধিক শিল্পীর আঁকা ২৫৬টি ক্যালিগ্রাফি এক স্নিগ্ধ অনুভূতি জাগিয়ে তুলেছিল দর্শনার্থীদের মনে।

 লাইফস্টাইল ডেস্ক
ছবি: সংগ্রহ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top