ফরহিম I কপাল কাণ্ড
কপালের দৈর্ঘ্য-প্রস্থ নিয়ে দুশ্চিন্তা? ফোরহেড রিডাকশন হতে পারে দারুণ সমাধান। তবে সাবধানে!
কপালের প্রস্থ সবার সমান হয় না। ফোরহেড শেপ কেমন হবে, তার নির্দিষ্ট মাপকাঠি নেই। বেশির ভাগ মানুষের কপাল দেখতে যেমন, সেই তুলনায় নিজের কপালের প্রস্থ বেশি হলে মনের শান্তি হারান অনেকে। পরিবর্তনে আগ্রহী হন। মুখের আদলের হেরফের ঘটাতে কপালের প্রস্থের বৃদ্ধি অথবা চুল পড়ে যাওয়া—দুই-ই মূল কারণ হতে পারে। সাধারণত কপালের দৈর্ঘ্য ২ থেকে ২ দশমিক ৪ ইঞ্চি পর্যন্ত হয়। প্রস্থ ৪ দশমিক ৭ থেকে ৫ দশমিক ৫ ইঞ্চি। আরও একটি সহজ উপায় রয়েছে। বুড়োটি বাদে, বাকি চার আঙুল আড়াআড়ি কপালে এঁটে গেলে আপনাকে ফোরহেড রিডাকশন নিয়ে ভাবতে হবে না। পৃথিবীর বেশির ভাগ মানুষের মতো আকার আপনার কপালের। আর যদি এই চার আঙুলের চেয়ে বেশ খানিকটা বেশি হয় ফোরহেড ওয়াইডনেস, তাহলে আপনার কপাল অন্যদের তুলনায় খানিকটা বেশি প্রস্থের।
ফোরহেড লাইন বেশি হওয়ার পেছনে কিছু কারণ রয়েছে। জিনগত প্রভাব, হেয়ার লাইন, ব্রাও অ্যাপিয়ারেন্স এবং পারসোনাল গ্রুমিং হ্যাবিট প্রভৃতি। ছেলেদের হেয়ার লাইন হাই হওয়ার উদাহরণ কম নয়। অনেকে তাই ফোরহেড রিডাকশন নিয়ে ভাবেন।
ন্যাচারাল প্রসেসে ফোরহেডের প্রস্থ কমাতে চাইলে নিয়মিত নির্দিষ্ট এক্সারসাইজে অংশ নিতে হবে। ‘চিন-আপস’ প্রসেসের মাধ্যমে মুখের আকারে পরিবর্তন আনা সম্ভব। এটি ফেস শেপ স্লিম ডাউন হতে সাহায্য করে। একই সঙ্গে কপালেও এর প্রভাব পড়ে। হেয়ার লাইন দর্শনে আসে পরিবর্তন।
হেয়ার কাটের মাধ্যমেও ফেস শেপে পরিবর্তন এনে হেয়ার লাইন লো করার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখা যায়। তাতে ফোরহেড রিডাকশনের ইল্যুশন খানিকটা সম্ভব হয়। অন্যদিকে, লেয়ারড হেয়ারস্টাইলিংয়ের মাধ্যমে ইল্যুশন তৈরি করে ফোরহেড রিডাকশনে প্রভাব রাখা যেতে পারে। ভলিউম যত বেশি, তত বেশি ফোরহেড রিডাকশনে দৃষ্টিবিভ্রম তৈরি হয়।
নিজের ফেস শেপ নিয়ে কেউ সন্তুষ্ট না থাকলে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে ব্যক্তিত্বে। এ সমস্যা সমাধানে বর্তমানে প্লাস্টিক সার্জারি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এটি মূলত ‘হেয়ারলাইন লোয়ারিং সার্জারি’ নামে পরিচিতি পেয়েছে। এটি একটি কসমেটিক প্রসিডিউর। হেয়ার লাইন নিচে নামিয়ে আনার উদ্দেশ্যে এর ব্যবহার হয়। এই ইউনিক কসমেটিক সার্জারির মাধ্যমে কপালের প্রস্থের অসামঞ্জস্য কমিয়ে আনা হয়। সার্জারি এই পদ্ধতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে সেকশনের কোনো প্রকার মার্ক কপালে থাকে না। আর হেয়ার লাইনও থাকে ন্যাচারাল। ফোরহেড, আইব্রাও টু নোজ এবং নোজ টু চিনের আইডিয়াল ফেস রেশিও হিসেবে ১:১:০.৮। ফোরহেড রিডাকশন একটি স্থায়ী অ্যাসথেটিক সার্জারি হিসেবে কাজ করে। যেকোনো বয়সেই ফোরহেড রিডাকশনে সার্জারি করা যায়। তবে ২০ বছরের আশপাশের বয়সে কপালের প্রস্থ নিয়ে চিন্তিত হয়ে তা পরিবর্তনে আগ্রহী হন অনেকে।
হেয়ার লাইন লোয়ারিংয়ের ক্ষেত্রে কতটুকু রিডাকশন করতে হবে, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেন এক্সপার্ট। ৫ সেন্টিমিটারের বেশি নামিয়ে আনা সম্ভব। বিশেষজ্ঞ এবং সেবাগ্রহীতার আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়াই বিজ্ঞানসম্মত। দুই ধরনের ফোরহেড রিডাকশন সার্জারি করা যায়। একটি ক্ল্যাসিক ফোরহেড লিফট, অন্যটি এন্ডোস্কপিক ফোরহেড লিফট।
সার্জারির পরে রিকভারি টাইম ফোরহেড রিডাকশন সার্জারির জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ। অনেকের প্রথম এক বা দুই সপ্তাহে ইচিং হতে পারে। ফোরহেড রিডাকশনের স্টার্টিং পয়েন্টটা ফেস থেকে শুরু হয় এবং ব্যবহৃত প্রডাক্টগুলো ফোরহেড রিডাকশন লাইনে স্পর্শ করার ঝুঁকি থাকে। তাই মাইল্ড ফেসওয়াশ ব্যবহার করলেও বিশেষজ্ঞ পরামর্শ নেওয়া চাই।
সম্পূর্ণ প্রসিডিউরে কোনো নার্ভ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কা নেই। কিছু ক্ষেত্রে হেয়ার লস হওয়ার উদাহরণ পাওয়া যায়। ব্লাড লস, ব্যথা, চেঞ্জ ইন এক্সপ্রেশন, ক্ষত পূর্ণ হতে অতিরিক্ত সময়ের প্রয়োজন। একইভাবে ক্ষতের আশপাশে হেয়ার গ্রো করতে সময় বেশি লাগে। চোখের নিচে কালশিটে তৈরি হয়। তাই বিশেষজ্ঞের পরামর্শে সমাধান খুঁজতে পারেন।
সাদিয়া আফরিন আইভী
মডেল: প্রসাদ
মেকওভার: পারসোনা মেনজ
ছবি: কৌশিক ইকবাল