বহুরূপী I ওয়াফেল ফিরিস্তি
বাংলাদেশে ওয়াফেলের ট্রেন্ড একদম নতুন। এ দেশে বিভিন্ন কাস্টমাইজড ওয়াফেলের দেখা মিললেও বিশ্বব্যাপী এর প্রকারভেদ ভিন্ন। শুরুতে বলা যাক ব্রাসেলস ওয়াফেলের কথা। এটি বড় আয়তক্ষেত্রাকার। বাইরের দিকে ক্রিস্পি। ভেতরের গভীর অংশটি নরম। সাধারণত চিনিগুঁড়া, হুইপড ক্রিম ও ফল দিয়ে ডেজার্ট হিসেবে পরিবেশন করা হয়, যা বিশ্বজুড়ে দারুণ জনপ্রিয়।
বেলজিয়াম ওয়াফেলের কদর খুব। নাম যা-ই হোক, এর উৎপত্তি বেলজিয়ামে নয়; আমেরিকায়! ব্রাসেলস ওয়াফেলের সঙ্গে এর খুব বেশি ভিন্নতা নেই। প্রথমটি তৈরি করা হয় খামির দিয়ে; অন্যদিকে, বেলজিয়াম ওয়াফেলে খামিরের বদলে ব্যবহার করা হয় বেকিং পাউডার। আমেরিকান অনেক ভোজনরসিকের প্রিয় এই ওয়াফেল সাধারণত বৃত্তাকার হয়। সকালের নাশতায় ডেজার্ট হিসেবে এর রয়েছে দারুণ গ্রহণযোগ্যতা।
আমেরিকান ওয়াফেল নামেও রয়েছে এক বিশেষ ডেজার্ট। বেশির ভাগই তৈরি করা হয় খামিরের বদলে বেকিং পাউডার সহযোগে। খামির দিয়ে তৈরি ওয়াফেলের তুলনায় একটি ট্র্যাডিশনাল আমেরিকান ওয়াফেল অনেক বেশি সরু ও ঘন হয়। এর পকেট সাধারণত বেশ ছোট। তাতে টপিংস হিসেবে ফল, চিনিগুঁড়া ও হুইপড ক্রিমের পাশাপাশি সিরাপও যুক্ত করা হয়, গ্রেভি রাখার সুবিধার্থে। আমেরিকান ওয়াফেল বিভিন্ন আকার ও আকৃতিতে পাওয়া যায়। যুক্তরাষ্ট্রের অনেক অঞ্চলে প্রাতরাশের পাশাপাশি দুপুর কিংবা রাতের পাতেও রাখা হয় একে।
টোস্টার ওয়াফেল এমন এক হিমায়িত ডেজার্ট, যেটি ফ্রিজারে সংরক্ষণ করা হয়। এরপর টোস্টারে রেখে প্রস্তুত করা হয় পরিবেশনের জন্য। সকালের নাশতায় এর কদর বেশি। ১৯৫৩ সালে ডোরসা-ভাইদের উদ্ভাবিত এই ওয়াফেলকে অনেকে ফ্রোজেন ওয়াফেলও বলেন। ‘ফ্রোফলস’ নামেও বেশ পরিচিত এটি।
হংকং এগ ওয়াফেলকে অনেকে গণ্য করেন বাবল ওয়াফেল হিসেবে। এতে প্রচলিত পকেটের পরিবর্তে থাকে ডিম্বাকৃতির বাবল; যা বাইরের দিকে আটকে থাকে। এই বাবল ভেঙে ফেলা ও স্ন্যাক করা তুলনামূলক সহজ।
লিয়েজে ওয়াফেল অনেকটা ব্রাসেলস ও বেলজিয়াম ওয়াফেলের মতো। আকৃতিতে ছোট। ফল বা ক্রিম ওপরে থাকার কারণে ওয়াফেল ভিজে যেতে পারে বলে ঘন টেক্সচার ও ক্যারামেলাইজড চিনির আবরণ একে সেই আপদ থেকে সুরক্ষা দেয়। অনেক বিক্রেতাই একে ডোনাটের মতো হ্যান্ডহেল্ড ডেজার্ট হিসেবে বিক্রি করেন।
আরও আছে পিজেলস। একটি ক্রিস্প ওয়াফেল কুকি। আয়রনে তৈরি এই ওয়াফেলের ওপর চিনি ছিটিয়ে পরিবেশন করা হয়। অন্যদিকে, কোন আইসক্রিম বলতে যেটি আমরা চিনি, সেটি মূলত ব্রাউন সুগার বা গুড় দিয়ে তৈরি একটি পাতলা ওয়াফেল। ওয়াফেল কোনকে আইসক্রিম বলা যায়। এতে ওয়াফেলটি তুলনামূলক বড়; ঘন ও সাদা চিনি দিয়ে তৈরি। তাই এটি ঐতিহ্যবাহী ওয়াফেলের অবয়ব এবং স্বাদ আরও বেশি ধরে রাখতে সক্ষম।
স্যাভরি ওয়াফেল সাধারণত আমেরিকান স্টাইলে তৈরি করা হয়, যা সরুও ঘন। ফালাফেল ওয়াফেলস থেকে শুরু করে আর্টিচোক তৎজিকি, সঙ্গে কর্নব্রেড ওয়াফেলের ওপরে থাকা চিকেন এই ওয়াফেলকে এক্সট্রাভ্যাগানজাতে পরিণত করে।
ওয়াফেল প্রভেদের শেষ টানা যাক স্ট্রোপওয়াফেলের নাম নিয়ে। ক্যারামেল স্যান্ডউইচের পাতলা স্তর থেকে তৈরি করা হয় এই সুস্বাদু কুকি।
ফুয়াদ রূহানী খান
ছবি: ইন্টারনেট