skip to Main Content

ফিচার I হিতে বরং বিপরীত

শুধু ন্যাচারাল বলেই যে নিরাপদ হবে, এমন ভাবাটা বোকামি। হুট করে কিচেন কেবিনেটে পাওয়া কোনো কিছু দিয়ে রূপচর্চায় তাই বারণ করেছেন খোদ ত্বক বিশেষজ্ঞরা। তালিকাটা জেনে রাখলে সুবিধাই হবে

প্যারাবেন, সালফেটসহ বলতে গেলে সব ধরনের কেমিক্যালকে গেল কয়েক দশকে সৌন্দর্যের শত্রু হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। ব্যাক বেঞ্চারস অব বিউটি টার্মেও আখ্যায়িত করেছেন অনেকে। ক্ষতিকর বলে বিকল্পের খোঁজ ছিল সব সময়। সৌন্দর্যসচেতনেরা যা খুঁজে পেয়েছেন প্রকৃতির মাঝে। সনাতন সব প্রক্রিয়ায় ঝোঁক বেড়েছে। পুরোনো দিনের সৌন্দর্য উপাদানে আগ্রহ দেখা গেছে অসীম। ফলাফল—বাড়ির ভ্যানিটি শেলফ নয়, বরং রান্নাঘরের তাক হয়ে উঠেছিল বিউটি লাভারদের গো-টু প্লেস। তাই তরকারিতে হলুদবাটা দেওয়ার সময় কিছুটা সরিয়ে রাখা হয়েছে মুখে মাখার জন্য। খাবারের ঝাঁজ বাড়ানো পেঁয়াজ দিয়ে তৈরি হয়েছে হেয়ার কেয়ার মাস্ক। কেমিক্যালের বদলে ডিআইওয়াই এসব রূপ-টোটকা বরং অনেক বেশি নিরাপদ ভাবছিলেন সবাই। কিন্তু সত্যটা কী? ভালো করতে গিয়ে উল্টোটা হওয়ার এমন অনেক ঘটনা জানা যাবে আশপাশে কান পাতলেই। তাই সাবধান!
ত্বকবান্ধব অনেক প্রাকৃতিক উপাদান চারপাশে থাকলেও এমন কিছু উপকরণ আছে, যা সৌন্দর্যে ভারসাম্যহীনতা তৈরি করতে পারে। বেশ ক্ষতিকরও বটে। এমন ছয়টি ডিআইওয়াই উপাদানের তালিকা রইল সুবিধার জন্য।
লেবুর রস
সিজনিংয়ের জন্যই না হয় তোলা থাক এটা। ডিআইওয়াইয়ের ক্ষেত্রে সবচেয়ে পছন্দনীয় উপাদান হলেও। রোদে পোড়া দাগ সারাতে কিংবা খুশকি তাড়াতে এর গুণ সবার মুখে মুখে। কিন্তু এটিও যে ক্ষতির কারণ হতে পারে! ত্বক বিশেষজ্ঞদের মত, পোড়া দাগ সারাইয়ে এর ব্যবহার একদমই মানা। এ ছাড়া লেবুর রস মেখে কেউ যদি ভুলেও রোদে বের হন, তাহলেই সেরেছে। ফাইটোফোটোডার্মাটাইটিস সৃষ্টি হবে ত্বকে। প্রদাহ দেখা দেবেই দেবে। লালচে হয়ে বাড়াবে জ্বালাপোড়া। লেবুর সংবেদনশীলতা তৈরি করা উপাদান অস্বস্তির সৃষ্টি করবে, যা থেকে দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতও দেখা দিতে পারে। যারা ত্বক উজ্জ্বল করার জন্য লেবুর রস মেখে থাকেন, তাদের জানা প্রয়োজন, এটি ত্বক পুড়িয়ে দিতে পারে। বাড়াতে পারে পিগমেন্টেশন।
লেবুর রসের বদলে বরং ভিটামিন সি বেসড সেরাম অথবা এএইচএ ব্যবহার করা যেতে পারে।
টুথপেস্ট
সে তো দাঁত পরিষ্কারের জন্য। ব্রণ সারাইয়ে না হয় না-ই ব্যবহৃত হলো। টুথপেস্টে পার-অক্সাইড আর বেকিং সোডা থাকায় সেটা কারও কারও ব্রেকআউট কমাতে সহায়তা করে বটে, কিন্তু এটি ব্যবহারে তো নতুন ব্রণ ওঠার হাত থেকে রেহাই মেলে না। এ ছাড়া টুথপেস্টে থাকা বেকিং সোডা পিএইচ লেভেল পাল্টে দেয়, যা ত্বকের স্বাভাবিক আত্মরক্ষামূলক স্তরে ক্ষতি করে।
টুথপেস্টের বদলে বরং স্যালিসাইলিক স্পট ট্রিটমেন্ট ব্যবহার ভালো।
ডিম
বাসায় বসে রূপচর্চার জন্য বহুল ব্যবহৃত এই উপাদান। তবে ডিমে থাকে স্যালমোনেলা। ভুলেও যদি পেটে ঢুকে যায়, অন্ত্রে সংক্রমণের সৃষ্টি হতে পারে। ফলাফল—ডায়রিয়া, জ্বর আর অনেক ব্যথা। ত্বকে সংক্রমণের আশঙ্কা একদমই কম; কিন্তু ঝুঁকি নেওয়ার দরকার কী।
ত্বকে প্রোটিন প্রয়োজন, ডিম মাখার দরকার কী; বরং রান্না করে খেলেই মিলবে যথাযথ উপকারিতা।
ভিনেগার
সালাদের ড্রেসিংয়ের জন্য পারফেক্ট। বড়জোর ঘরবাড়ি পরিষ্কারের কাজে ব্যবহার হতে পারে। কিন্তু টোনার হিসেবে? সে বিষয়ে কিন্তু বিতর্ক রয়েছে মেলা। ভিনেগারের কোনো বেসিক পিএইচ থাকে না, তাই এর ঘন ঘন ব্যবহারে ত্বক পুড়ে যেতে পারে। এ ছাড়া ত্বকে অস্বস্তি, রোদে পোড়া ভাব বৃদ্ধি এমনকি ডিপিগমেন্টেশনও দেখা দিতে পারে। তাই পরবর্তী মুখে ভিনেগার স্প্রে করার আগে চিন্তা করে দেখাটাই সমীচীন হবে।
ভিনেগারের বদলে বরং ক্ল্যারিফায়িং টোনার ব্যবহারই ভালো।
চিনি অথবা কফি
এক্সফোলিয়েশন মানে কিন্তু ঘষে শরীরের চামড়া উঠিয়ে ফেলা নয়। তাই চিনি কিংবা কফি দিয়ে অ্যাট হোম স্ক্রাবিং ত্বকের ক্ষতি করতে পারে। এই পার্টিকেলগুলোর ধার কখনো সমান হয় না, এবড়োথেবড়ো হয়; যা ত্বকে মাইক্রোটিয়ার তৈরি করতে পারে। অর্থাৎ ছড়ে যেতে পারে ত্বক। লালচে ভাব তৈরির পাশাপাশি হতে পারে চুলকানি। পরবর্তী সময়ে সেরাম ব্যবহারে যা ত্বকে জ্বালাপোড়া সৃষ্টি করতে পারে। ছড়ে যাওয়া ত্বকে জীবাণুর সংক্রমণ হতে পারে যখন-তখন; যা পরে দাগছোপ আর পিগমেন্টেশনের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
চিনি বা কফির বদলে বরং কেমিক্যাল এক্সফোলিয়েন্ট বেছে নেওয়া ভালো। ব্যবহার করা যেতে পারে স্যালিসাইলিক, গ্লাইকোলিক কিংবা ল্যাকটিক অ্যাসিড।
নারকেল তেল
চুল ও শরীরের ত্বকের জন্য ভালো হলেও মুখত্বকের জন্য একদম মানা। নানি-দাদি অ্যাপ্রুভড এই তেল তৈলাক্ত অ্যাকনেপ্রবণ ত্বকে মোটেই ব্যবহার করা যাবে না। নারকেল তেল লোমকূপ বন্ধ করে দেয়। তাই যারা মেকআপ রিমুভার হিসেবে ব্যবহার করতে চান, তাদের জেনে রাখা ভালো, এটি ত্বকের ওপর একটি আস্তর তৈরি করে দেয়, তাই গভীর থেকে ময়লা পরিষ্কার করা সম্ভব হয় না।
নারকেল তেলের বদলে বরং নন-কমেডোজেনিক ক্লিনজার অথবা মেকআপ রিমুভার ব্যবহার করাই ভালো।

 বিউটি ডেস্ক
ছবি: সংগ্রহ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Back To Top